ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে উপকৃত হবেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক- ভিসি ড.আমানুল্লাহ ফেরদৌস বাজে ব্যাটিংয়ে ফাইনাল মিস বাংলাদেশের জনস হপকিন্সের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  মজিদা কলেজে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তোলপাড় কুড়িগ্রাম খারুয়ার পাড়ে ভাঙ্গনের শব্দ থেমে যাক — বদরুদ্দীন উমর : শিরদাঁড়া বাঁকা করে বাঁকা হয়নি যার কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক ভারতীয় নাগরিক, এনআইডি বাতিলে হাইকোর্টের রুল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা : এইচআর হেডসহ আহত ১৫

অলৌকিকতা, বিশ্বাস ও ইতিহাসে মোড়ানো ৫০০ বছরের প্রাচীন নিমগাছ

Ayesha Siddika | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ - ১১:৪১:৪৩ পিএম

ডেস্ক নিউজ : স্থানীয়দের দাবি, এই নিমগাছটির বয়স প্রায় পাঁচ শত বছর। গাছটির অতীতকে কেন্দ্র করেই স্থাপন করা হয়েছে ‘নিমতলী কালীমন্দির’, যেখানে প্রতিদিন নিয়মিত পূজা-অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়। শত শত মানুষ এখনও গাছটিকে ঘিরে মানত করে থাকেন, বিশ্বাস করেন এর অলৌকিক শক্তিতে।

নিমগাছটি নিয়ে মাঝিদিয়া গ্রামে প্রচলিত রয়েছে বহু অলৌকিক গল্প ও জনশ্রুতি। ১০৪ বছর বয়সী মঙ্গল রাজবংশী এবং ৯৬ বছর বয়সী বিনারানী জানিয়েছেন এই গাছের ইতিহাস এবং তার অলৌকিক ঘটনার গল্প।

শ্রুতি কথায় রয়েছে- এক সময় এই গাছ কেটে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন এক কাঠুরিয়া, যিনি পরে অলৌকিক শাস্তির সম্মুখীন হন। চৈকিদার, পিয়া ফকির ও হাজী করম আলীর নিম বৃক্ষ নিধনের প্রচেষ্টাও ইতিহাসে স্থান পেয়েছে, যাঁরা পরবর্তীতে মানত করে মুক্তি পান বলে জনশ্রুতি।

নিমগাছটির বিশালাকৃতির ডালপালা এখন আশেপাশের তিন বিঘা জমির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। ডালগুলো এতটাই বড় যে বহু টিনের ঘরের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে ধর্মীয় বিশ্বাস ও অলৌকিকতার ভয়ে কেউ গাছের ডাল কাটতে সাহস পাচ্ছেন না।

স্থানীয়দের মতে, গাছটির ব্যাসার্ধ ২১ ফুট, যা বাংলাদেশের মধ্যে নিমজাতীয় বৃক্ষের মধ্যে সর্ববৃহৎ। একে ঘিরে ১২ হাত পরিধির শাড়ির কাপড় এবং অতিরিক্ত ২ হাত কাপড়ে গাছটি আবৃত করা হয়েছে।
গাছটিকে স্থানীয়রা ঔষধি গাছ হিসেবেও বিবেচনা করেন। এর পাতা ও ছাল দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক গবেষক বলেন, গাছটির বয়স শত বছর তো বটেই, সম্ভবত আরও বেশি। গাছটির কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখার গঠন দেখে বোঝা যায় এটি অতি প্রাচীন। বাংলাদেশে এরকম নিম গাছ আর কোথাও দেখা যায়নি।

গাছটির প্রকৃত বয়স নির্ণয় করতে ‘অ্যানুয়াল রিং পদ্ধতি’ ব্যবহার করতে হবে। এই পদ্ধতিতে গাছের গুঁড়ির ভেতরে প্রতি বছর একটি করে বৃত্ত তৈরি হয় যাকে বলে অ্যানুয়াল রিং। তবে এতে গাছ কাটতে হতে পারে, যা এই গাছের ধর্মীয় গুরুত্ব বিবেচনায় অত্যন্ত সংবেদনশীল।

মাটি থেকে ডাল পর্যন্ত গাছটির উচ্চতা প্রায় ১১ ফুট। এতে ৬টি প্রধান ডাল রয়েছে, যেগুলোর গড় ব্যাসার্ধ ৩০ থেকে ৪০ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্য ৫০ থেকে ১০০ ফুট। প্রতিটি ডাল থেকে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ৩ বিঘা এলাকাজুড়ে।

চারদিকে পানি পরিবেষ্টিত রাজধানী লাগোয়া এই দ্বীপ ইউনিয়ন কাউন্দিয়ার মাঝিদিয়া গ্রাম যেন হয়ে উঠেছে এক অলৌকিক ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু। একদিকে গড়ে উঠেছে ধর্মীয় উপাসনালয় ‘নিমতলী কালীমন্দির’, অন্যদিকে তৈরি হয়েছে অলৌকিক বিশ্বাসের চর্চা।

এই নিমগাছকে ঘিরে যেমন ধর্মীয় আস্থা, তেমনি আছে এলাকার ঐতিহ্য ও ইতিহাসের গর্ব। এলাকাবাসীর দাবি, সরকার ও বিজ্ঞানীদের সহায়তায় গাছটির প্রকৃত বয়স নির্ণয় করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।

এলাকাবাসী মনে করেন, গাছটি শুধু একটি বৃক্ষ নয়। এটি তাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। তারা চান, সরকারিভাবে এই গাছটি সংরক্ষণ করা হোক এবং বিজ্ঞানীদের সহায়তায় এর প্রকৃত বয়স নির্ধারণ করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা হোক।

 

 

আয়শা/১৮ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১১:৩৩

▎সর্বশেষ

ad