
ডেস্ক নিউজ : ক্ষমতাচ্যুতির পর এটি গণমাধ্যমে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎকার। এতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া না হলে তার দলের লাখো সমর্থক ভোট বর্জন করবে।
শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার করেছে। এবং সে অনুযায়ী আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনে তারিখ ঘোষনা করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
গত মে মাসে নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করে। এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি এবং শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তের স্বার্থে দলটির সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। ই-মেইলে রয়টার্সের পাঠানো প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা তার দলের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে অবিচার হিসাবে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, “দেশে লাখ লাখ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। তাই বর্তমান অবস্থায় তারা ভোট দেবে না। আমরা আওয়ামী লীগের ভোটারদের অন্য দলকে সমর্থন করতে বলছি না। আমরা এখনো আশাবাদী, শেষ পর্যন্ত আমাদেরকেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে।”
হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ভিন্নমত দমনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। তিনি ২০০৯ সালের পর তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ১৫ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় ছিলেন। এর মধ্যে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, যা আমি-ডামির নির্বাচন নামে পরিচিতি পেয়েছে। সেই নির্বাচনে প্রধান বিরোধী জোট অংশ নেয়নি। কারণ, তাদের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই কারাগারে অথবা নির্বাসনে ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার চলছে। ২০২৪ এর ছাত্র-আন্দোলনে সহিংস দমনপীড়নের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। যেখানে তার সময়ের সবশেষ পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার দায় স্বীকার করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছেন।
জাতিসংঘ তার এক প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে হওয়া বিক্ষোভে দেশে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং হাজারো মানুষ আহত হয়েছেন; যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির শিকার হন। রয়টার্স বলছে, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর এটি ছিলে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা অভিযোগ এনেছেন, হাসিনার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর গোপন আটককেন্দ্রে বা আয়নাঘরে বিরোধী কর্মীদের গুম ও নির্যাতন করা হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে।আওয়ামী লীগের আগামীর নেতৃত্ব প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, দলটি তার পরিবারের নেতৃত্বে চলা বাধ্যতামূলক নয়।
কয়েক মাস আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদক শেখ হাসিনাকে দিল্লির ঐতিহাসিক লোধি গার্ডেনে নিরিবিলি হাঁটতে দেখেন। তার সঙ্গে ছিলেন দুজন ব্যক্তি, যাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বলে মনে হচ্ছিল। কিছু পথচারী তাকে চিনে ফেললে তিনি মাথা নেড়ে সম্ভাষণ জানান।
আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:৫০






