
ডেস্কনিউজঃ জাপানের এক আদালত নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতা নামের এক নরপিশাচকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। সাধারণত এ ধরনের মামলায় ভুক্তভোগীরা নিজের পরিচয় গোপন রাখেন। কিন্তু এই মামলায় মেয়েটি সাহসিকতার সঙ্গে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেছেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়, দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি কোজি দাইমন। ২০১৬ সালে তার মেয়ে রিহো ফুকুয়ামা হাইস্কুলে পড়তেন। সে সময় তাকে ধর্ষণ করে সে। আদালতে সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলেও দাবি করে, ‘আমার মেয়ে এমন অবস্থায় ছিল, যেখানে সে আমাকে বাধা দিতে পারতো।’
বিচারক তোশিআকি উমেজাওয়া রায় ঘোষণার সময় বলেন, ভুক্তভোগী আজও শারীরিক ও মানসিক কষ্টে ভুগছেন। তাই এই অপরাধের পরিণতি গুরুতর বলে বিবেচিত হবে। ফুকুয়ামা জানান, তার ওপর যৌন নির্যাতন শুরু হয় যখন তিনি জুনিয়র হাইস্কুলে পড়তেন এবং তার মা তখন বাড়িতে থাকতেন না। গত বছর মার্চ মাসে তার পিতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর তিনি বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। রায়ের পর আদালতের বাইরে ফুকুয়ামা সাংবাদিকদের বলে, রায় শোনার পর আমি স্বস্তি পেয়েছি। আমি সবাইকে বলতে চাই, পারিবারিক যৌন সহিংসতা সত্যিই ঘটে। দয়া করে ভুক্তভোগীদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। এর আগে সাংবাদিক শিওরি ইতো এক প্রভাবশালী টিভি প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে ঐতিহাসিক রায় জিতেছিলেন। ২০২১ সালে রিনা গোনোই তার সহকর্মী সেনাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনেন, যার পর তিনজন সেনাকে স্থগিত সাজা দেয়া হয়। ঘটনার পর গোনোই সেনাবাহিনী ছেড়ে দেয়। ইতো ও গোনোই দু’জনই প্রকাশ্যে আসার জন্য ব্যাপক প্রশংসা পেলেও, তারা অনলাইনে প্রচুর ঘৃণার শিকার হন। এ কারণে ইতোকে লন্ডনে চলে যেতে হয়।
সম্প্রতি আলোচিত এক মামলায় ওসাকার এক নারী প্রসিকিউটর তার সাবেক বসের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। তবে তিনি এখনো নাম প্রকাশ করেননি। কারণ তিনি আবার কাজে ফিরতে চান। যদিও জাপানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বড় কোনো মিটু আন্দোলন গড়ে ওঠেনি, তবুও ২০১৯ সালে কয়েকজন অভিযুক্ত ধর্ষক খালাস পাওয়ার পর দেশজুড়ে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে ছোট ছোট বিক্ষোভ হয়। আইন পরিবর্তনের ফলে ভুক্তভোগীদের জন্য বিচার পাওয়া কিছুটা সহজ হয়েছে। ২০১৭ সালে ধর্ষণের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত হয়, এবং ২০২৩ সালে আইন থেকে ভুক্তভোগীদের জন্য ‘সহিংসতা বা ভয় প্রদর্শনের প্রমাণ’ দেয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়।
Raz/২২.১০.২০২৫/সন্ধ্যা ৬.৫৬






