
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংঘাত বন্ধ না করলে ভারত ও পাকিস্তানের ওপর ২৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি উভয় দেশের ওপর ২৫০ শতাংশ করে শুল্ক আরোপ করব। এর মানে হলো, আপনি কখনো ব্যবসা করতে পারবেন না…এর মধ্য দিয়ে আমি এই কথাটা সুন্দর করে বলেছিলাম, আমরা আপনাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাই না।’ট্রাম্পের কথা শোনে অনুষ্ঠানের শ্রোতারা হাততালি দেন। ট্রাম্প আগেও একই ধরনের দাবি করেছিলেন। কিন্তু ভারত তা খারিজ দিয়েছে।
ট্রাম্পের আজকের মন্তব্যের বিষয়ে জানতে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, গত জুনে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে মোদি বলেছিলেন, চার দিনের সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বা মার্কিন মধ্যস্থতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
দিল্লি বারবার বলে আসছে, পাকিস্তানের অনুরোধে মে মাসের সংঘাত বন্ধ হয়েছিল। অর্থাৎ এতে যুক্তরাষ্ট্র বা তৃতীয় কোনো পক্ষের ভূমিকা ছিল না। কিন্তু সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ইসলামাবাদ। শুধু তা–ই নয়, সংঘাত বন্ধ করায় ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনয়নয় দিয়েছে পাকিস্তান।
কিন্তু এপেক শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, প্রথম উভয় পক্ষই প্রথমে তাঁর অস্ত্রবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে পরে তারা রাজি হয়। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা উভয়ে বলেছিল, না, না, না। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে দিন। কিন্তু দুই দিন পর, তারা ফোন করে বলল, আমরা বুঝতে পেরেছি। এরপর তারা সংঘাত বন্ধ করল।’
পরবর্তী সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের কিছু পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। পাশাপাশি রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার অভিযোগে দিল্লির ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ওয়াশিংটন। তবে শুল্ক কমিয়ে বাণিজ্য চুক্তি করার বিষয়ে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে আলোচনা চলছে।
অন্যদিকে প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলেও পরে তা ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।
গত ২২ এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত দাবি করেছিল, এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান তা জোর দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে।
ওই হামলার জেরে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বৃদ্ধি পেতে থাকে। একপর্যায়ে ৭ মে পাকিস্তানের বিভিন্ন নিশানায় বিমান হামলা চালায় ভারত। পাকিস্তানও জবাব দেয়। চার দিনের পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ১০ মে উভয় দেশ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়।
আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১০:৩৩






