
স্পোর্টস ডেস্ক : পার্থ টেস্ট দিয়ে অ্যাশেজ মাঠে গড়ানোর এখনও ছয় সপ্তাহ বাকি। এর মধ্যেই ব্রড ইংল্যান্ডের অন্যান্য ক্রিকেটারদের মতোই সফরকারী দলের সম্ভাবনা নিয়ে উচ্ছ্বসিত মন্তব্যে যোগ দিলেন।
গত দুই সপ্তাহে জ্যাক ক্রলি বলেছেন, ‘বাজবল’ শব্দটি অস্ট্রেলিয়ানদের ‘বিরক্ত’ করে; আর জো রুটের দাবি, এবারই নাকি তার ‘ডাউন আন্ডারে’ (অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড) জেতার সেরা সুযোগ।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল অ্যাথারটনও বলেছেন, প্যাট কামিন্সের চোটে অস্ট্রেলিয়া ‘আতঙ্কিত’, আর স্কট বোল্যান্ডও নাকি এখন আর ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের মনে ভয় ধরাতে পারছেন না।
তবে ইংলিশদের সাহসী মন্তব্যের ভেতরেও সবচেয়ে আলোচনায় এসেছে ব্রডের কথা। ২০২৩ সালের অ্যাশেজের পর অবসর নেওয়ার আগে গত ১৫ বছর তিনিই ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান শত্রু।
গত ২০ বছরে নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ২০০৬-০৭ এবং ২০১৩-১৪ মৌসুমে ইংল্যান্ডকে ৫-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছে; ২০১৭-১৮ এবং ২০২১-২২ মৌসুমে জিতেছে ৪-০ ব্যবধানে। এই সময়ে একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল ২০১০-১১ মৌসুম, যখন পুনর্গঠনের মধ্যে থাকা অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড।

ব্রডের মতে, বর্তমান অস্ট্রেলিয়া দলও তখনকার মতোই ‘পরিবর্তনের পর্যায়ে’ রয়েছে। তিনি নিজে সেই ২০১০-১১ সিরিজে খেলেছিলেন এবং এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে ইংল্যান্ডের তিনটি সিরিজ হারও দেখেছেন।
ব্রড তার বিবিসি পডকাস্ট ‘ফর দ্য লাভ অব ক্রিকেট’-এ সহ-উপস্থাপক জস বাটলারের সঙ্গে বলেন, ‘সম্ভবত এটা ২০১০ সালের পর থেকে সবচেয়ে দুর্বল অস্ট্রেলিয়া দল, আর ২০১০ সালের পর এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ইংল্যান্ড দল। এটা আসলে মতামত নয়, বাস্তবতা। তাই সব দিক থেকেই এটি হবে এক দারুণ অ্যাশেজ সিরিজ।’
ব্রডের এই মন্তব্যটি আসে ডেভিড ওয়ার্নারের বক্তব্যের জবাবে, যিনি দাবি করেছিলেন অস্ট্রেলিয়া ৪-০ ব্যবধানে জিতবে, কারণ তারা অ্যাশেজ জয়ের জন্য খেলছে, আর ইংল্যান্ড ‘নৈতিক বিজয়’ চায়। ব্রড উল্লেখ করেন, অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ এখনো স্থির নয়। তিনি আরও বলেন, বোলিং লাইনআপেও গভীরতা নেই, বিশেষ করে অধিনায়ক কামিন্স নিজেই বলেছেন, তার প্রথম টেস্টে খেলার সম্ভাবনা কম।
ব্রড বলেন, ‘২০১০ সালের পর থেকে কবে আমরা এমন পরিস্থিতি দেখেছি, যখন আলোচনা চলছে অস্ট্রেলিয়ার ১, ২, ৩, ৬, ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান কে হবে, কিংবা অতিরিক্ত পেসার কে হবে? সব সময়ই তো বলতাম: “অসি দলটা খুব শক্তিশালী, একই বোলার, একই ব্যাটার।” কিন্তু ২০১০ সালে, যখন তারা (গ্লেন) ম্যাকগ্রা, (শেন) ওয়ার্ন, (ম্যাথু) হেইডেন, (জাস্টিন) ল্যাঙ্গারদের বিকল্প খুঁজছিল, তখন তাদের কোনো নির্ভরযোগ্য স্পিনার ছিল না, পেসাররা ঘুরত বারবার, আর ব্যাটাররাও ছিল অস্থির। তাই কেউই অস্বীকার করতে পারবে না—এটা ২০১০ সালের পর তাদের সবচেয়ে দুর্বল দল।’
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা স্বীকার করেছেন—ইংল্যান্ডও এবার বেশ শক্তিশালী, বিশেষ করে দ্রুত গতির দুই পেসার মার্ক উড এবং জফরা আর্চার দুজনেই সুস্থ আছেন। তবুও, ইংল্যান্ড কীভাবে এই দুই বোলারের ইনজুরি ঝুঁকি সামলাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট বর্তমানে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার হলেও, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এখনো তার কোনো সেঞ্চুরি নেই, এবং তিনবার সফর করেও তিনি কোনো টেস্ট জেতেননি। তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হ্যারি ব্রুক, যিনি তার প্রথম ৫০ টেস্ট ইনিংসে ১০টি সেঞ্চুরি করেছেন। স্ট্রাইক রেটও ৮৭.৫২—যা আধুনিক ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ের আগ্রাসী রূপের প্রতীক।
আয়শা/১৫ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ৮:০০