ব্রেকিং নিউজ
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন হুমায়ুন কবির  মেয়েকে ধর্ষণ, নরপিশাচ পিতার কারাদণ্ড কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে উপকৃত হবেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক- ভিসি ড.আমানুল্লাহ ফেরদৌস বাজে ব্যাটিংয়ে ফাইনাল মিস বাংলাদেশের জনস হপকিন্সের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  মজিদা কলেজে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তোলপাড় কুড়িগ্রাম খারুয়ার পাড়ে ভাঙ্গনের শব্দ থেমে যাক — বদরুদ্দীন উমর : শিরদাঁড়া বাঁকা করে বাঁকা হয়নি যার

ভারতের রাষ্ট্রপতির রাফালে উড্ডয়ন, শক্তির প্রদর্শন নাকি আঞ্চলিক বার্তা?

Ayesha Siddika | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ - ০৫:২৫:১৩ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আম্বালার আকাশে ভারতের রাষ্ট্রপতির উড্ডয়ন যেন এক প্রতীকী বার্তা— যুদ্ধবিমানের গর্জনের ভেতর দিয়ে প্রকাশ পেল এক রাষ্ট্রের আত্মবিশ্বাস, আবার সেই আত্মবিশ্বাসের ছায়ায় লুকিয়ে রইল শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতি। 

বুধবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু যখন রাফাল যুদ্ধবিমানে উড্ডয়ন করেন, তখন দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে শুধু এক বিমানের শব্দই শোনা যায়নি, শোনা গেছে এক অঘোষিত বার্তা— সামরিক শক্তির প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিযোগিতা এখন আর গোপন কিছু নয়। 

রাষ্ট্রপতি এই অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করলেও বিশ্লেষক মহলে প্রশ্ন উঠেছে— এই প্রদর্শন কি সত্যিই কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক, না কি এর মধ্য দিয়ে আরেকটি শক্তির ভারসাম্য তৈরি করার রাজনৈতিক বার্তা পাঠানো হলো? দ্রৌপদী মুর্মু গত বছর সুহই-৩০ যুদ্ধবিমানে উড্ডয়ন করেছিলেন। এবার রাফাল— ফরাসি প্রযুক্তিতে নির্মিত বহুল আলোচিত যুদ্ধবিমান, যা আম্বালা ঘাঁটিতে প্রথম পৌঁছেছিল দাসো এভিয়েশনের কারখানা থেকে। 

রাষ্ট্রপতির এই উড্ডয়ন যেন সেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতা, যেখানে প্রতিরক্ষা শক্তির প্রতিটি পদক্ষেপ কূটনৈতিক সঙ্কেতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান ভূরাজনীতিতে এই ধরনের প্রদর্শনকে নিছক প্রতিরক্ষা মনোবল হিসেবে দেখা কঠিন। কারণ এই অঞ্চলে প্রতিটি সামরিক পদক্ষেপেরই পড়শি দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। 

রাষ্ট্রপতির উড্ডয়নের সময় যে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হলো— “দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা অদম্য, আকাশ এখন সুরক্ষিত”— তা নিঃসন্দেহে এক আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ, কিন্তু একইসঙ্গে এটি প্রতিবেশী অঞ্চলে উদ্বেগেরও কারণ হতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে প্রতিটি সামরিক সংকেতই একে অপরের দিকে দৃষ্টিপাত করে পাঠানো হয়, আর রাষ্ট্রপতির এই উড্ডয়ন তারই অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। 

রাফাল যুদ্ধবিমান ভারতের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে একটি মাইলফলক হলেও তার প্রতিটি উড্ডয়ন প্রতিবেশী দেশগুলোর মনোভাবের ওপর প্রভাব ফেলতে বাধ্য। রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে সেই বার্তা আরও তীব্রতর হলো। এই অভিজ্ঞতা যেমন রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত গর্বের অংশ, তেমনি এটি এমন এক শক্তি প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার ভারসাম্যে নতুন প্রশ্ন তুলছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির এ ধরনের অংশগ্রহণ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের মানসিক দূরত্ব কমাতে সাহায্য করলেও একই সঙ্গে এটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতীকী ক্ষমতা প্রদর্শনের কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে। রাফাল ফ্লাইটকে কেন্দ্র করে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে, তার ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে এক নীরব প্রতিযোগিতা— আকাশ নিয়ন্ত্রণের, প্রভাব বিস্তারের, এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার।

 রাষ্ট্রপতির মুখে ‘গর্ব’ শব্দটি যতই উচ্চারিত হোক, তার অন্তর্নিহিত অর্থ নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে— কারণ এই আকাশযাত্রা কেবল এক জাতির গর্ব নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে শক্তির নতুন ভারসাম্য রচনারও প্রতীক।

 

আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৫:২২

▎সর্বশেষ

ad