প্রবাস ডেস্কঃ সুষ্ঠু নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েও কমিটির অনুমোদন পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য স্টেট বিএনপি। কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের নির্দেশে গত বছরের ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় এ নির্বাচন। ভার্জিনিয়া বিএনপির ৫টি পদের জন্য দু’টি প্যানেলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওই নির্বাচনে গ্রিন প্যানেলকে নির্বাচিত করেন তিন সদস্যের নির্বাচিত কমিশন। অভিযোগ রয়েছে, ৬ মাস আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদকের মন মতো না হওয়ায় দীর্ঘদিনে মেলেনি কেন্দ্রীয় কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন। ফলে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৫ অক্টোবর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভার্জিনিয়া স্টেট বিএনপির নির্বাচনে গ্রিন ও লাল দু’টি প্যানেল অংশ গ্রহণ করে। মোট ৬১ জন ভোটারের মধ্যে ৫৮ জন ভোটার গোপন ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনী ফলাফলে ৫টি পদে গ্রিন পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করেন।
নির্বাচিত প্রার্থীরা হলেন সভাপতি জহির খান (৩০ ভোট), সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ (৩৫ ভোট), সহ-সভাপতি নিজাম আহমেদ (৩৪ ভোট), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মানিক (৩২ ভোট) ও সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির আলম জসিম (৩৪ ভোট)। অপর দিকে পরাজিত লাল প্যানেলের পরাজিত প্রার্থীরা হলেন-সভাপতি পদে নাসের আহমেদ (২৪ ভোট), সাধারণ সম্পাদক পদে কামরুন নাহার কণা (১৯ ভোট), সহ-সভাপতি পদে আবুল কালাম আজাদ (২০ ভোট), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান (২২ ভোট) ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জাহিদ এ চৌধুরী (২০ ভোট) ভোট পেয়ে পরাজিত হন। ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কমিশন মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম, এটিএম আলম ও মহিউদ্দিন আনোয়ার বিজয়ী প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে সনদপত্র প্রদান করেন।
বিজয়ী প্রার্থীদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ভোট গণনা শেষে থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন নির্বাচন কমিশনারদের ফোন করে ফলাফল সংগ্রহ করেন। তাঁর মনোনীত লাল প্যানেল নির্বাচিত না হওয়ায় তিনি কথা শেষ হবার আগেই ফোন কেটে দেন। এরপর অনেকেই তাঁর সঙ্গে কথা বলার অনেক চেষ্টা করলে ওইদিন তিনি কারো ফোনই আর ধরেননি। কিছুদিন পর উভয় প্যানেলের প্রার্থী ও অন্যান্য বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি জুম মিটিংয়ের আয়োজন করেন। উক্ত সভায় নতুন আহ্বায়ক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করে পুনরায় ভোট গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বিজয়ী প্রার্থীদের অভিযোগ, তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা ও একচেটিয়া এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পড়েন ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্য স্টেট বিএনপির নেতাকর্মীরা। তিনি অন্যান্য অঙ্গরাজ্যগুলোতেও দীর্ঘদিন ধরে একই ধরণের একচেটিয়া কমিটি বাণিজ্য করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে চরমভাবে বিতর্কিত করেছেন। অধিকাংশ বিএনপির নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভ থাকলেও কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। ফলে কমিটি বাণিজ্যের মাত্রা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।
অপরদিকে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কাউন্সিল চলতি এপ্রিল মাসের ২১ তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। এখানেও আনোয়ার হোসেন খোকন তার পছন্দের প্যানেলকে জিতিয়ে আনার জন্যে অসুস্থ এক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছেন। শুরুতেই তিনি আহবায়ক কমিটি প্রদানে তার নিজ জেলা কুমিল্লাকে প্রাধান্য দিয়ে নিরপেক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনের পথকে রুদ্ধ করেছেন। কেবল মাত্র তার কুমিল্লা অঞ্চলের অত্যাধিক ভোটার রেখে তিনি সাজানো নির্বাচন করার পায়তারা করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউইয়র্ক স্টেট্ বিএনপির শীর্ষ এক নেতা বলেছেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন অষ্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং উওর-দক্ষিন আমেরিকা সাংগঠনিক সমন্বয়ক। এখনি তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না দিলে তিনি এই সকল রাষ্ট্রে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো ধ্বংস করে ফেলবেন।
এতদসংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে লন্ডনের ম্যাকডোনাল্ডস এ কর্মরত আনোয়ার হোসেন খোকন এর হোয়াটস্যাপ এ যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
কিউটিভি/বিপুল/১৩.০৪.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২.৪৮