ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনী’র মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক ১ ঢাবি’র জহুরুল হক হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন পুনর্গঠন : সদস্য সচিব নিয়ে বিতর্ক রাস্তায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের ভিডিও ভাইরাল ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি দর্শন বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ঢাবি দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৪তম পুনর্মিলনী ও কমিটি গঠিত হয়েছে সাইদ সোহরাব ও শেখ মো. নাসিম এর নেতৃত্বে ঢাবি মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, যুবদল নেতার মৃত্যু কুড়িগ্রামে নবগঠিত জেলা বিএনপির আহবায়কের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল

রোজার যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

Ayesha Siddika | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ - ১২:৫৬:১২ পিএম

ডেস্ক নিউজ : রমজান আসার পূর্বে তওবা ইস্তেগফার করে যাবতীয় কল্যাণ লাভে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। রোজা রেখে কী করা যাবে আর কী করা যাবে না তা জানা থাকলে সঠিকভাবে আমরা রোজা পালন করতে পারব। বিগত রমজানের যদি কোনো কাজা রোজা থাকে, তাহলে রমজান শুরুর আগেই সেগুলো আদায় করে নেয়া জরুরি। রমজানজুড়ে আমরা কখন কী আমল করব তার একটা রুটিন তৈরি করাও জরুরি। কেননা, আগাম রুটিন থাকলে রমজানে চরম ব্যস্ততার মাঝেও আমরা আমলগুলো যথাসময়ে আদায় করতে পারব।

সাওম বা সিয়াম আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো কোনো কিছু থেকে বিরত থাকা। ইসলামের রোজার বিধান হলো সুবহে সাদেক থেকে শুরু করে সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত দিনের বেলায় যেকোনো ধরনের পানাহার, মিথ্যা বলা, হানাহানিতে জড়ানোসহ রোজা ভেঙে যায় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, রোজা রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তোমরা তাদের সঙ্গে সংগত হও এবং আল্লাহ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে উষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। অতঃপর রাত আসা পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

যে কাজে রোজা ভেঙে যায়

ওষুধ ও ধূমপান পানাহারের অন্তর্ভুক্ত এবং স্বেচ্ছায় যেকোনো প্রকার বীর্যপাত স্ত্রী-সংগমের অন্তর্ভুক্ত। কোনো স্বামী যদি স্ত্রীকে সহবাসে বাধ্য করে তবে স্ত্রী শুধু রোজা কাজা করবে এবং স্বামীর কাজা-কাফফারা দুটোই করবে।

এ ছাড়া যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হলে প্রতিবিধান হিসেবে শুধু কাজা করতে হয়, কাফফারা দিতে হয় না। এমন কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে–

১. ইচ্ছা করে বমি করা
২. বমির বেশির ভাগ মুখে আসার পর তা গিলে ফেলা
৩. মেয়েদের মাসিক ও সন্তান প্রসবের পর ঋতুস্রাব
৪. ইসলাম ত্যাগ করলে
৫. গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক ইনজেকশন বা সেলাইন দিলে
৬. কুলি করার সময় অনিচ্ছায় গলার ভেতর পানি প্রবেশ করলে
৭. প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ বা অন্য কিছু শরীরে প্রবেশ করালে
৮. রোজাদারকে জোর করে কেউ কিছু খাওয়ালে
৯. রাত অবশিষ্ট আছে মনে করে সুবেহ সাদিকের পর পানাহার করলে
১০. ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে সূর্যাস্তের আগে ইফতার করলে
১১. মুখ ভরে বমি করলে
১২. ভুলবশত কোনো কিছু খেয়ে, রোজা ভেঙে গেছে ভেবে ইচ্ছা করে আরও কিছু খেলে
১৩. বৃষ্টির পানি মুখে পড়ার পর তা খেয়ে ফেললে
১৪. কান বা নাক দিয়ে ওষুধ প্রবেশ করালে
১৫. জিব দিয়ে দাঁতের ফাঁক থেকে ছোলা পরিমাণ কোনো কিছু বের করে খেয়ে ফেললে
১৬. অল্প বমি মুখে আসার পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা গিলে ফেললে
১৭. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় অজুতে কুলি বা নাকে পানি দেয়ার সময় ভেতরে পানি চলে গেলে (ফাতাওয়ায়ে শামি ও ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি)


যেসব কাজে রোজা ভাঙবে না–
১. গোসল করা।
২. কুলি করা।
৩. নিজেকে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম ব্যক্তির স্ত্রীকে আসক্তিহীনভাবে চুম্বন করা বা জড়িয়ে ধরা।
৪. পানি দিয়ে নাক-মুখ ধোয়া।
৫. মুখের লালা খাওয়া।
৬. (রান্নার কাজে জড়িত লোকের|) খাবার না খেয়ে স্বাদ চেখে দেখা।
৭. (প্রয়োজনে) ইনজেকশন নেয়া।
৮. ফুল বা সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৯. ভুলে কোনো কিছু খাওয়া বা পান করা।
১০. অবিচ্ছিন্নভাবে অল্প বমি করা।

রোজার কাজা ও কাফফারা কী?
রোজার কাজা হলো ভেঙে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা রোজার প্রতিবিধান হিসেবে শুধু রোজা আদায় করা। অতিরিক্ত কিছু আদায় না করা। অন্যদিকে রোজার কাফফারা হলো প্রতিবিধান হিসেবে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা।

রোজার কাফফারা বিষয়ে আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার কী হয়েছে? সে বলল, আমি রোজা অবস্থায় আমার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, স্বাধীন করার মতো কোনো ক্রীতদাস তুমি মুক্ত করতে পারবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেন, তুমি কি একাধারে দুই মাস সওম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেন, ৬০ জন মিসকিন খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না।

হাদিস বর্ণনাকারী বলেন, তখন নবী (সা.) থেমে গেলেন, আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম। এ সময় নবী (সা.)-এর কাছে এক ‘আরাক পেশ করা হলো যাতে খেজুর ছিল। আরাক হলো ঝুড়ি। নবী (সা.) বললেন, প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। তিনি বললেন, এগুলো নিয়ে দান করে দাও। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমার চেয়েও বেশি অভাবগ্রস্তকে সাদকা করব? আল্লাহর শপথ, মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কেউ নেই। রাসুল (সা.) হেসে উঠলেন এবং তার দাঁত দেখা গেল। অতঃপর তিনি বললেন, এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৩৬)

বেশির ভাগ ফকিহ বলেন, হাদিসে বর্ণিত ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। অর্থাৎ, রোজা ভঙ্গকারী দাস মুক্ত করতে অক্ষম হলে দুই মাস রোজা রাখবে। আর দুই মাস রোজা রাখতে ব্যর্থ হলে ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/১৭ মার্চ ২০২৩,/দুপুর ১২:৫০

▎সর্বশেষ

ad