বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে একমত যে, কার্বন নির্গত হওয়ার পরিমাণ তা অপসৃত হওয়ার চেয়ে অনেক গুণ বেশি। এ কারণেই প্রধানত বিশ্ব উষ্ণ হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণ ২০২১ সালে ছিল আনুমানিক তিন হাজার ৩০০ কোটি টন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে তা অপসারণ করা হয়েছে মাত্র ২০০ কোটি টন।

ডেস্ক নিউজ : বায়ুমণ্ডল থেকে পৃথিবী উষ্ণ করে তোলা গ্রিনহাউস গ্যাস কার্বন ডাই-অক্সাইড অপসারণের প্রযুক্তি জরুরিভাবে জোরদার করতে হবে বলে মনে করেন শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। ‘কার্বন ডাই-অক্সাইড অপসারণের হালনাগাদ অবস্থা’ শিরোনামের নতুন এক প্রতিবেদনে জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা তাঁদের এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বনভূমি এবং মাটির মতো প্রাকৃতিক কার্বন অপসারণ প্রক্রিয়া বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট হবে না।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব কার্বন অপসারণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। এটি হয় মূলত গাছপালার মাধ্যমে বায়ু থেকে কার্বন শোষণের মাধ্যমে। এ ছাড়া মাটি কার্বন শোষণ করে এবং নিজের মধ্যে ধরে রাখে। কিন্তু প্রকৃতি কতটা করতে পারে, তারও সীমাবদ্ধতা আছে।
পৃথিবীর আর খুব বেশি অঞ্চল বনভূমির জন্য ছেড়ে দেওয়া বাস্তবে সম্ভব নয়। কিছু আশাবাদী হিসেবে বলা হয়, প্রাকৃতিক কার্বন অপসারণ ২০৫০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হতে পারে। কিন্তু তা হলেও বছরে মাত্র ৪০০ কোটি টন নিঃসরণ সরানো যাবে।
নতুন প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা সীমিত রাখা ও কমানোর জন্য প্রযুক্তিগত সমাধান এগিয়ে নিতে এখনই বিনিয়োগ করা দরকার। এতে যে পদ্ধতিগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে তার সবই বেশ নতুন। এগুলো তৈরি ও প্রয়োগের অগ্রগতি বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে কৌশলগুলো একসঙ্গে মিলে ক্ষুদ্র পরিমাণ কার্বন অপসারণ করতে পারবে। এর একটি কৌশল বিইসিসিএস নামে পরিচিত। এ পদ্ধতিতে কার্বন ধরে রাখার পদ্ধতিকে জৈববস্তুভিত্তিক বিদ্যুৎ উত্পাদনের সঙ্গে যুক্ত করে। এতে ফসলের অবশেষ এবং কাঠের টুকরার মতো জৈব পদার্থ পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উত্পাদন করা হয়। অন্য বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বাতাস থেকে কার্বন শুষে নিয়ে মাটিতে সংরক্ষণ করার জন্য বিশাল সব কাঠামো নির্মাণ, কার্বন ধরে রাখার বিশেষ ধরনের কাঠকয়লা (বায়োচার) ব্যবহার।
কার্বন অপসারণ প্রযুক্তির সমালোচনাও রয়েছে। অনেকে বলেন, এটি কতটা ব্যয় সাশ্রয়ী, তাতে সন্দেহ রয়েছে। তা ছাড়া নিঃসরণ কমাতে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাসের বিষয়টি বিলম্বিত করার অজুহাতও হতে পারে এটি।
এই প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্বন অপসারণকে ‘জাদুই সমাধান’ হিসেবে দেখা উচিত নয়। তবে এর প্রণেতাদের অভিমত, জাতিসংঘের জলবায়ুু লক্ষ্যগুলো পূরণের জন্য গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা কমাতে প্রকৃতির পাশাপাশি প্রযুক্তিরও প্রয়োজন হবে। সব তত্ত্বের পেছনেই অনুমান করা হচ্ছে, অনেক জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট নিঃসরণ সত্যিই দ্রুত হ্রাস পাবে। তবে এখন পর্যন্ত বার্ষিক নিঃসরণের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়নি। সূত্র : বিবিসি
কিউটিভি/আয়শা/২০ জানুয়ারী ২০২৩/দুপুর ১:২৫






