ডেস্ক নিউজ : এমনিতেই দ্রব্যমূল্য পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বে অস্থিরতা বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রভাব পড়ায় দেশের বাজারেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সব শ্রেণির মানুষই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে। এ ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও যারা মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখবে, ধৈর্য ধারণ করবে, মহান আল্লাহ তাদের উত্তম পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন। যারা অভাবী মানুষের ওপর দয়াশীল হবে, মহান আল্লাহও তাদের দয়া করবেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘দয়াশীলদের ওপর করুণাময় আল্লাহ দয়া করেন। তোমরা দুনিয়াবাসীকে দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের দয়া করবেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪১) এ ছাড়া মহান আল্লাহ সমগ্র মুমিন জাতিকে এক দেহের মতো করেছেন। ফলে দেহের কোনো অংশ আক্রান্ত হওয়া মানে গোটা দেহ আক্রান্ত হওয়া। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানবদেহের ন্যায়; যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয়, তখন তার সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮০)
তাই সংকটময় মুহূর্তে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করা প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব। এতে মানুষের যে অর্থ-সম্পত্তি খরচ হবে, তা তার পরকালীন জীবনের জন্য অনেক বড় বিনিয়োগ। কেননা মানুষের বিপদে এগিয়ে এসে তার জন্য খরচ করাকে মহান আল্লাহ বিনিয়োগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যা তিনি বহুগুণ ফেরত দেওয়ার ওয়াদা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। আর তোমরা নিজদের জন্য মঙ্গলজনক যা কিছু অগ্রে পাঠাবে তোমরা তা আল্লাহর কাছে পাবে প্রতিদান হিসেবে উত্কৃষ্টতর ও মহত্তর রূপে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৪৫)
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহকে ঋণ দেওয়ার অর্থ হলো, তাঁর পথে খরচ করা। গরিব, অসহায় ও বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা। একে ঋণ বলা হয়েছে রূপকার্থে। কেননা এর বিনিময় দেওয়া হবে সওয়াবরূপে। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী এবং যারা আল্লাহকে উত্তম কর্জ (ঋণ) দেয়, তাদের জন্য বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান। ’ (সুরা হাদিদ, আয়াত : ১৮)
তা ছাড়া যারা দান করে, ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করেন, আর যারা কৃপণতা করে, ফেরেশতারা তাদের বদদোয়া করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৪২) তাই আসুন, আমরা সবাই আমাদের আশপাশে থাকা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই। তাদের সহযোগিতা করি। এর বিনিময়ে মহান আল্লাহও আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতকে সুখময় করবেন।
কিউটিভি/আয়শা/৪ঠা মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১০:৩৫