ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ গাজী মাজহারুল আনোয়ার : তুমি সুতোয় বেধেছ শাপলার ফুল নাকি তোমার মন ‘নবীন বরণ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হলো ড্যাফোডিল পলিটেকনিকে যমুনায় ৮ দলের প্রতিনিধি, আশপাশ এলাকায় নেতাকর্মীরা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন হুমায়ুন কবির  মেয়েকে ধর্ষণ, নরপিশাচ পিতার কারাদণ্ড কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায়

আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে মাহাথিরের অভিযোগ

Ayesha Siddika | আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১০:৩৫:৪৫ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালয়েশিয়ার ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা ঘটল মঙ্গলবার। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নাশকতা ও দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্নের অভিযোগ এনেছেন।

শতবর্ষী নেতা মাহাথির মঙ্গলবার সকালে আইনজীবী রফিক রশিদের সঙ্গে পুত্রাজায়া পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। মাহাথির বলেন, গত ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আনোয়ারের স্বাক্ষরিত মালয়েশিয়া–ইউএস অ্যাগ্রিমেন্ট অন রিসিপ্রোক্যাল ট্রেড (এআরটি) দেশের জন্য হুমকি তৈরি করেছে।
তার দাবি, চুক্তিটি মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করতে পারে, বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরতা বাড়াবে এবং জাতীয় নীতিনির্ধারণে দেশের ক্ষমতা কমিয়ে দেবে।
মাহাথির বলেন, এই চুক্তি মালয়েশিয়ার সার্বভৌমত্ব অগ্রাহ্য করে বিদেশি প্রভাবের কাছে দেশকে বন্ধক রাখার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। তিনি চুক্তিতে থাকা চারটি উল্লেখযোগ্য ধারা উল্লেখ করেন, যা মালয়েশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করতে পারে এবং দেশের সীমান্ত পারের তথ্য (ক্রসবর্ডার ডাটা) আমেরিকার কাছে প্রকাশে বাধ্য করতে পারে। যা জাতীয় নীতি প্রণয়নে হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করবে।
মাহাথির আরও অন্তত ১৪টি নেতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করেন। যার মধ্যে রয়েছে- হালাল শিল্পের নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত হওয়া, বুমিপুত্র অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বাধাগ্রস্ত হওয়া, উচ্চ প্রযুক্তি খাতে জাতীয় কৌশল দুর্বল হওয়া, রেয়ার আর্থসহ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের ঝুঁকি।  
মাহাথিরের মতে, এই ধারা ও প্রতিশ্রুতিগুলো মালয়েশিয়ার স্বাধীন নীতি—বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও কৌশলগত সম্পদ ব্যবহারের ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মাহাথির শুধু আনোয়ার নন, ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর, এবং চুক্তি প্রণয়ন–আলোচনা–চূড়ান্তকরণে যুক্ত সব কর্মকর্তাকে তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, চুক্তিতে রেয়ার আর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পর্কিত সিদ্ধান্তগুলোতে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দায়িত্বে অবহেলা থাকতে পারে। চুক্তি সইয়ের পর থেকেই মালয়েশিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে। সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল টমি থমাস বলেন, মালয়েশিয়া আসলে কোনো আলোচনাই করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া হুবহু আনোয়ার সই করেছেন। ট্রাম্পের উপহার দেওয়া কলম আর গাড়িতে চড়াই যেন ছিল সবচেয়ে বড় সাফল্য।

চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ মালয়েশিয়ার সামনে আসে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ার পর, যা আরও ক্ষোভ সৃষ্টি করে। মাহাথিরের ঐতিহাসিক এই রিপোর্ট দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক ছড়িয়েছে। আনোয়ার সরকারের পক্ষে যেখানে চুক্তিটিকে কূটনৈতিক অর্জন বলা হচ্ছে, সেখানে সমালোচকরা বলছেন, এটি মালয়েশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংঘাতে সরাসরি অংশীদার বানিয়ে ফেলতে পারে। মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিতে এই অভিযোগ কী প্রভাব ফেলবে- এখন সেদিকেই দৃষ্টি সবার।

 

 

আয়শা/০২ ডিসেম্বর ২০২৫,/রাত ১০:৩৩

▎সর্বশেষ

ad