
স্পোর্টস ডেস্ক : মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভালো না করতে পারলেও ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সফরকারীরা। শেষ ওভারে তাদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৫ রান। কিন্তু সাইফ হাসানের করা সেই ওভারে ৪ রান নিলে ম্যাচ হয়ে যায় টাই, আর তাতেই খেলা গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে বাংলাদেশকে ১১ রানের লক্ষ্য দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে সেই রান তুলতে ব্যর্থ হন সৌম্য, শান্ত, সাইফরা। তবে এসব ছাপিয়ে এ ম্যাচে রেকর্ড হয়েছে একাধিক।
১. ওয়ানডে ক্রিকেটের ৫৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ইনিংসের পুরো ৫০ ওভার স্পিন বোলারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ৩ বার ৪৪ ওভার করে বোলিং করিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের মাঠে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্পিন বোলিংয়ের রেকর্ডও এটাই। এর আগে বাংলাদেশে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্পিন বোলিংয়ের রেকর্ড ছিল ৪০ ওভার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার করে ৪০ ওভার স্পিন বোলিং করিয়েছিল বাংলাদেশ।
২. ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি স্পিন বোলিং দেখা ফেছে এই ম্যাচে। ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে স্পিন বোলিং করিয়েছে ৯২ ওভার। মোট খেলা হয়েছে ১০০ ওভার। বাংলাদেশের হয়ে কেবল ৮টি ওভার করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এর আগে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি স্পিন বোলিং করানোর রেকর্ডটা ছিল আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তানের। ২০১৯ সালে দেরাদুনে অনুষ্ঠিত এক ম্যাচে এই রেকর্ড গড়েছিল এই দুই দল। সেদিন দুদল মিলিয়ে ৭৮.২ ওভার স্পিন বোলিং করেছিল।
৩. এই ম্যাচে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবার দুই প্রান্ত থেকে স্পিন বোলিং করেছে উইন্ডিজ। এছাড়া কেবল পাঁচজন স্পিনারকে দিয়ে বল করিয়েও ইতিহাস গড়েছে দলটি। দুই পেসার জাস্টিন গ্রিভস এবং শেরফান রাদারফোর্ড দলে থাকলেও তাদেরকে দিয়ে এক ওভারও বোলিং করানো হয়নি।
৪. বাংলাদেশের বিপক্ষে পার্ট টাইম স্পিনার হিসেবে বোলিংয়ে এসে রেকর্ড গড়েছেন আলিক আথানেজ। এর আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কেবল ৪ ওভার বোলিং করা আথানেজ আজ বোলিং করেছেন পুরো ১০ ওভার। তাতে ১৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের রেকর্ড এটাই। এর আগে এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ, ১০ ওভারে ১৫ রান দিয়েছিলেন তিনি।
৫. শ্লথ ব্যাটিংয়ের ইনিংসে স্রোতের ধারার বিপরীতে গিয়ে ব্যাট হাতে একটি রেকর্ড গড়েছেন রিশাদ হোসেন। ১৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে ২৭৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। আর তাতে রেকর্ডবুকে নাম উঠেছে তার। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে ২৫ বা এর অধিক রানের ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ড ছিল সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসানের। ২০০৬ সালে বগুড়ায় মাশরাফি কেনিয়ার বিপক্ষে করেছিলেন ১৬ বলে অপরাজিত ৪৪ রান। স্ট্রাইক রেট ছিল ২৭৫.০০। ২০১৪ সালে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিবও ১৬ বলের ৪৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
৬. অভিষেকের পর এটি ছিল তানভীর ইসলামের অষ্টম ম্যাচ। আর ৮ ম্যাচেই বল হাতে উইকেট তুলে নিয়ে রেকর্ড পাতায় নাম বসিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে এমন অর্জন নেই আর কারও। উইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে ৮ ম্যাচে এখন তানভীরের উইকেট মোট ১৪টি। এর আগে অভিষেকের পর টানা ৭ ম্যাচে উইকেট পাওয়ার রেকর্ড ছিল এবাদত হোসেনের।
৭. তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে ৮শ’র ওপরে, তবে এতদিনেও কোনোদিন সুপার ওভারের সম্মুখীন হয়নি টাইগাররা। নিজেদের ৮১৩ ম্যাচের ইতিহাসে প্রথমবার আজ টাইয়ের সম্মুখীন হয় বাংলাদেশ।
আয়শা/২১ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১১:৫৫