
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গবেষকরা বলছেন, এই আন্দোলনগুলোর শক্তিশালী হাতিয়ার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মস। রাজনীতির পুরনো কাঠামোয় অবিশ্বাস, দুর্নীতি, বৈষম্যের প্রতি ক্ষোভ, আর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা সব দেশের তরুণদের একসূত্রে গেঁথেছে। ফলে আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ছে দেশে দেশে।
সপ্তাহজুড়ে চলা তরুণদের বিক্ষোভের পর গত সপ্তাহে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজুয়েলিনা। পতন ঘটে সরকারের। নিজেদের জেন-জি মাদাগাস্কার পরিচয়ে তরুণরা দাবি তোলে বিদ্যুৎ, পানি আর ন্যায্য প্রশাসনের। পরে এই বিক্ষোভ রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে।
একই চিত্র দেখা গেছে নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, কেনিয়া আর মরক্কোতেও। কোথাও দুর্নীতি, কোথাও অর্থনৈতিক বৈষম্য বা সরকারি নিপীড়ন, কিন্তু মূল চালিকা শক্তি একই প্রজন্ম। নেপালের সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার পর শুরু হওয়া তরুণ বিক্ষোভ যেমন প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগে গড়ায়, তেমনি ইন্দোনেশিয়ায় মন্ত্রীদের সুবিধা-ভোগের বিরুদ্ধেও জ্বলে ওঠে তরুণ সমাজ। সম্প্রতি ভারতেও জেন-জি আন্দোলনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সামাজিক আন্দোলনের গবেষকরা বলছেন, এই আন্দোলনগুলোর কিছু মিল রয়েছে। এগুলো প্রায় নেতৃত্বহীন। আর নেতৃত্বে রয়েছে জেন-জি প্রজন্ম। ১৯৯৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া এই প্রজন্ম সম্পূর্ণ ডিজিটাল যুগে বেড়ে ওঠা মানুষ। রাজনীতির পুরানো কাঠামোতে অবিশ্বাস, দুর্নীতি ও বৈষম্যের প্রতি ক্ষোভ, আর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তাদের এক সূত্রে গেঁথেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক মাধ্যমই জেন-জি আন্দোলনের মেরুদণ্ড। টিকটক, ইনস্টাগ্রাম আর এক্সে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভের বার্তা, মন্ত্রীদের সন্তানের বিলাসী জীবন আর জনমানুষের বঞ্চনার তুলনামূলক চিত্র। এমনকি গেমিং চ্যাট প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ড ব্যবহার করে নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। আন্দোলনকারী তরুণরাও বলছেন, ডিজিটাল দুনিয়া এক বিশ্বে যুক্ত করেছে তাদের।
এসব আন্দোলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ‘ওয়ান পিস’ মাঙ্গার খুলি-টুপিওয়ালা কালো পতাকা। নেপাল থেকে মরক্কো, পেরু থেকে ইন্দোনেশিয়া—সবখানেই দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে এই টুপিকে।
আয়শা/১৭ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১০:২৩