
স্পোর্টস ডেস্ক : ‘শ্রীলঙ্কা জিতলে সমীকরণটা এমন, আফগানিস্তান জিতলেও সম্ভাবনা আছে তবে এভাবে জিতলে বাংলাদেশ যাবে শেষ চারে’ – এমন সমীকরণ প্রতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সঙ্গী। এবারের এশিয়া কাপেও সামনে চলে এসেছিল। ভাগ্যগুণে, শ্রীলঙ্কার দারুণ পারফর্ম্যান্সে সে সমীকরণটা মিলেও গেছে। বাংলাদেশ চলে গেছে সুপার ফোরে।
তবে বাংলাদেশ এসবে গা করে থোড়াই। হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৩ রান তাড়া করতে বাংলাদেশ যখন ১৮ ওভার পর্যন্ত খেলল, তখনই এসব নিয়ে আলাপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। জবাবে তাওহীদ হৃদয় অতি আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছিলেন, ‘রানরেট নিয়ে এত নেতিবাচক ভাবছি কেন আমরা? যদি তিনটা ম্যাচ জিতি তাহলে তো রানরেটের ব্যাপার থাকছে না।’
এশিয়া কাপের গ্রুপ অফ ডেথে পড়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা আর আফগানিস্তান তো শক্ত প্রতিপক্ষই, হংকং যে শ্রীলঙ্কাকে ধরাশায়ী করে দিচ্ছিল আরেকটু হলে, তা থেকে আঁচ পাওয়া যায়, তারাও দল হিসেবে খুব খারাপ নয়। এমন এক গ্রুপে থাকলে নেট রান রেটের হিসেব চলে আসতেই পারে, তবে বাংলাদেশ সেসবের কথা ভাবেনি। তিন ম্যাচ জেতার কথা ভেবেছে।
বিষয়টাকে দুই ভাবে দেখা যায়, প্রথমটা ইতিবাচক, আদর্শ ভাবনাও– যে কোনো পরিস্থিতিতে জেতার কথা ভাবতেই হবে। তবে নেতিবাচক যে বিষয়টা সেটা হলো, যদি যে ভাবনাটা বাস্তবে ফলানো না যায়, সে প্ল্যান বি-টা শুরু থেকেই ছিল না দলের কাছে। শেষ চার যে নিশ্চিত হলো, সেটায় তো শ্রীলঙ্কার বদান্যতাই বেশি!
শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান ম্যাচের আগে এত্তো এতো কঠিন সমীকরণ বাংলাদেশের সামনে নাও থাকতে পারত। আফগানিস্তান জিতলেও সমীকরণটা সহজ হতে পারত বাংলাদেশের। তিন ম্যাচেই সে সুযোগ পায়ে ঠেলেছে বাংলাদেশ। হংকংয়ের বিপক্ষে শেষ ২ রান তুলতে বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে ৬ বল, শেষ ১০ বলে এসেছে ৬ রান। সেটা আরও দ্রুত তুলে ফেলতে পারলে নেট রান রেটটাও আরেকটু ভালো থাকত শুরু থেকেই।
এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একাধিক ক্যাচ ফেলেছে বাংলাদেশ। শেষ দিকে তো মনে হচ্ছিল ম্যাচটা শেষ হলেই বাঁচোয়া! অথচ শ্রীলঙ্কাকে ১৮ ওভার পর্যন্ত খেলিয়ে নিতে পারলেই ঋণাত্মক রান রেটে যেতে হতো না!
এত কিছুর পর আফগানিস্তান ম্যাচে যদি ২৩ রানের জয় তুলে নেওয়া যেত, তাহলেও রান রেটটা ধনাত্মক থাকত। শেষ দিনে ক্যালকুলেটর নিয়ে বসতে হতো না। সে ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমান ১৯তম ওভারে একটা রান আউট মিস করেছেন। শেষ ওভারে তাসকিন আহমেদ ইয়র্কার করতে গিয়ে ছক্কা হজম করেছেন দুটি, তাতেই ব্যবধানটা নেমে এসেছিল এক অঙ্কে, জয় নিয়েও নেট রান রেটটা আর ভালোর দিকে নিয়ে যাওয়া যায়নি। সেসব ম্যাচের ফলাফল একটু এদিক ওদিক হলেই শেষ দিনে শ্রীলঙ্কা থাকত চাপে। বাংলাদেশকেও অত ভাবনা ভাবতে হতো না।
তবে এত কিছুর পরও ভাগ্যগুণে শেষ চার নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা তো আছেই, আছে ভারত আর পাকিস্তানের মতো দুই জায়ান্টও। সেখানেও একই পরিস্থিতিতে পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না মোটেও।
সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা না ভেবে, তার প্রস্তুতি না নিয়েই খেলার ভুলটা বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে করেছিল। সে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ এবার সুপার ফোরে অ্যাপ্রোচ বদলায় কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আয়শা/১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /দুপুর ১২:১৫