
ডেস্ক নিউজ : পরিবারে পুরুষ জেলেদের পাশাপাশি নারী জেলেদেরও কার্ড দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকারের দেওয়া জেলে কার্ডে মাত্র ৪ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্ত হলেও বাস্তবে মাছ ধরার কাজে পরিবারের সবাই অংশ নেয়, বিশেষ করে নারীরা অধিকাংশ সময় বেশি পরিশ্রম করেন।
উপদেষ্টা বলেন, নারী জেলেদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আইনগত সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের আইনগুলো মূলত পুরুষকেন্দ্রিক। নারীরা মাছ ধরে সংসার চালালেও তাদের স্বীকৃতি নেই। তালিকায় নারী জেলের সংখ্যা মাত্র ৪ শতাংশ। অথচ সমাজে অসংখ্য নারী জেলে রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, অনেক সময় সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে পুরুষ জেলেরা মারা গেলে বা হারিয়ে গেলে তাদের স্ত্রী ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারেন না কিংবা বিধবা ভাতাও পান না। এসব আইনি জটিলতা দ্রুত সমাধান করার আশ্বাস দেন তিনি।
অমৎস্যজীবীদের কার্ড বাতিলের কথা উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, আমরা চাই প্রকৃত জেলেরা যেন কার্ড পায়। যে পরিবারে পুরুষ জেলের কার্ড থাকবে সেখানে নারীদেরও থাকতে হবে।
এ ছাড়া তিনি কাঁকড়া ও ঝিনুককে খাদ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন এবং মাছ ধরতে কীটনাশক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন। জলমহাল ইজারা প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয় প্রকৃত জেলেদের নামেই ইজারা দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ বলেন, নারী শ্রমিকরা এখনও পুরুষদের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম মজুরি পান। জলমহাল ইজারা রাজস্বভিত্তিক না দিয়ে ‘জাল যার জলা তার’ নীতিতে দেওয়া উচিত। বর্তমানে নিবন্ধিত ১৭ লাখ জেলের মধ্যে মাত্র ৪৪ হাজার নারী রয়েছেন, এ সংখ্যা বাড়াতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংলাপে সিএনআরএস পরিচালক এম. আনিসুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএনআরএস-এর পরিচালক ড. এম. আমিনুল ইসলাম এবং জাগো নারী টিম লিডার রিসার্চ আহমেদ আবিদুর রেজা খান।
সংলাপ শেষে মুক্ত আলোচনায় নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন ও টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা জোরদারে নানা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, শিক্ষাবিদ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যসম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আয়শা/১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /সন্ধ্যা ৭:২৮