
স্পোর্টস ডেস্ক : গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাইমন টাওফেল পরামর্শক হিসেবে প্রায় সব বোর্ডের সঙ্গেই কাজ করেছে। আইসিসি একাডেমিতেও কিন্তু সে পরামর্শক। তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে….আমরা আমাদের পুরো সিস্টেমকে একটা সুন্দর ডিজাইন করে প্রক্রিয়াকরণ করব। একটা নতুন আম্পায়ারকে নিয়ে কাজ করে তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতি সে করে দেবে।’
টাওফেলের সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানি চুক্তি হয়নি বিসিবির। তবে চুক্তির কথাবার্তা প্রায় সম্পন্ন। দুই পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কিছু কাগজপত্রের বিনিময় হলেই সেটা পূর্ণতা পাবে, এমনটাই জানিয়েছেন মিঠু। বিসিবির এই পরিচালক বলেন, ‘তিনি এখন আমেরিকায়। তাদের একটা টুর্নামেন্টের জন্য। সে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে ফেরত আসবে। আমি আশা করছি জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে…ও আমাদের কাছে কিছু ডকুমেন্ট চেয়েছে। তারপর তার চুক্তি যে হবে, সেই চুক্তির কাগজপত্র আদান-প্রদান বাকি আছে। আমরা মূলনীতিগুলোতে সম্মত হয়েছি…এখন চুক্তিটা সম্পন্ন হলে ও কবে আসবে তার জন্য অপেক্ষা করছি।’
টাওফেলের সঙ্গে ৩ বছরের চুক্তি করতে যাচ্ছে বিসিবি। চুক্তি এখন পর্যন্ত না হলেও বাংলাদেশে এই আম্পায়ারের কার্যক্রম সম্পর্কে একটা খসড়া ছক তৈরি করে ফেলেছে বিসিবি। সেখানে সেসব বিষয় থাকছে, তারও বিবরণ দিয়েছেন মিঠু। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্বলতা হলো গত ১৫-২০ বছরে আমরা পিছিয়ে গেছি আম্পায়ারদের মূল্যায়ন নিয়ে…কে এ গ্রেড, কে বি গ্রেড আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা এখনও জানি না, জানি অভিজ্ঞতার বিষয়ে। হয়তো আপনি ৩০ বছরের অভিজ্ঞ হতে পারেন, কিন্তু আসলে আপনি সি গ্রেড আম্পায়ার। এই বিষয়টাতে ও (টাওফেল) আমাদের সাহায্য করবে একদম মাঠে থেকে।
বাইরে থেকে একজন আসলে ফেয়ার এবং ফ্রি মূল্যায়নটা হবে, সেটাই আমাদের চাওয়া। দ্বিতীয়ত, আমাদের যে ট্রেনিংয়ের জিনিসপত্র আছে সেটাকে ওর অভিজ্ঞতার আলোকে আরও বাড়ানো। ও নিজে কাজ করবে আমাদের আম্পায়ারদের নিয়ে এবং ও কিছু ট্রেইনার তৈরি করে দিবে৷ প্রথম বছর কাজ হচ্ছে এটা। পরের বছর কাজ হবে এটা আমরা মেন্টেইন করছি কিনা সেটা নজর রাখা। এখানে আমাদের বড় সমস্যা হলো আমরা সবকিছু তৈরি করে ফেলি কিন্তু তারপর মনিটরিংয়ের অভাবে আস্তে আস্তে সেখান থেকে নেমে যায়। তো সেজন্য ওর সঙ্গে চুক্তিটা তিন বছরের।’
ঢাকার বাইরের বিভিন্ন ম্যাচে ঢাকা থেকে বিসিবির আম্পায়ারদের নিয়ে খেলা পরিচালনা করা হয়। বিসিবির পরিকল্পনা হলো, এসব ম্যাচে স্থানীয় আম্পায়ারদের দিয়ে চালানো। সেজন্য তাদের যোগ্য করে তুলতে এই প্রোগ্রাম কাজ করবে বলে মনে করেন মিঠু। তিনি বলেন, ‘বোর্ডের পরিকল্পনা হচ্ছে যেসব ম্যাচ বাইরে হয় সেখানকার আম্পায়ার দিয়ে ম্যাচ চালানো। বিসিবি থেকে আর পাঠাতে চাই না। এটা সম্পূর্ণ সামর্থ্যের ওপর। কিন্তু আমরা চেষ্টা করতে পারি। যেহেতু আমাদের বর্তমান সভাপতির ইচ্ছা সারা বাংলাদেশে লিগ চালানোর সেহেতু আম্পায়ারদের প্রয়োজন বেড়ে যাচ্ছে। তাই আম্পায়ার তৈরি করতে হবে। আমরা সার্টিফিকেশন করব। তো এসবের পথ ও (টাওফেল) তৈরি করে দিবে।’
৩ বছর টাওফেল সঠিকভাবে প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে পারলে বাংলাদেশের আম্পারিং বিভাগ ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠবে বলে মনে করেন মিঠু, ‘প্রথম বছর চারটা কাজ (টাওফেলের)- একটা পথ তৈরি করে দেয়া, ট্রেনিংয়ের জিনিসপত্র তৈরি করা এবং বর্তমানে যে আম্পায়াররা আছে তাদের তৈরি করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আনা ও মূল্যায়ন করা। দ্বিতীয় বছর কাজ হলো এটা নজরে রাখা। দ্বিতীয় আর তৃতীয় বছর সবকিছু ঠিকঠাকমতো অনুসরণ করলে আমরাই প্রস্তুত হয়ে যাব দায়িত্ব বুঝে নেয়ার জন্য।’
এদিকে, ভারত-ইংল্যান্ডের মধ্যকার এজবাস্টন টেস্টে আম্পায়ারিং করে সুনাম কুড়িয়েছেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। এই ম্যাচে তার বিরুদ্ধে নেয়া ১০ টা রিভিউয়ের ৮ টাই ব্যর্থ হয়েছে। সৈকতের এমন আম্পায়ারিং পুরো দেশবাসীর মতো মুগ্ধ করেছে আম্পায়ার্স কমিটির প্রধানকেও। সৈকতের আম্পায়ারিং নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মিঠু বলেন, ‘এটা শুধু ক্রিকেট বোর্ডের গর্ব নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। সবাই বলছে, বাংলাদেশ থেকে সৈকত কী ভালো আম্পায়ারিং করছে। সে এখন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে, এটাই তো একটা বড় বিষয়৷ ইংল্যান্ডের মাঠে ভারতের বিপক্ষে এত চাপের টেস্ট ম্যাচে তার বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গুণগত মান বলেন….সে এত ভালো যে পুরো বিশ্ব তার প্রশংসা করছে।’
কিউটিভি/আয়শা//১০ জুলাই ২০২৫,/রাত ৯:৫৪