
ডেস্ক নিউজ : মিজান ইবনে মোবারক
খোদাভীরু ব্যক্তি সর্বদা শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে সতর্ক থাকে। যদি কখনো শয়তানের কুমন্ত্রণায় পড়ে যায় আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজত করেন।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে, তাদেরকে যখন শয়তানের পক্ষ হতে কোনও কুমন্ত্রণা স্পর্শ করে, তখন তারা (আল্লাহকে) স্মরণ করে। ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়। (সুরা আরাফ : ২০১)
আসমান ও জমিনের কল্যাণের দ্বার উন্মোচন
যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তাকওয়া অবলম্বন করে তারা যাবতীয় কল্যাণ লাভ করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, যদি সে সকল জনপদবাসী ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী থেকে কল্যাণধারা মুক্ত করে দিতাম। (সুরা আরাফ : ৯৬)
আল্লাহ তাআলা খোদাভীরু ব্যক্তিকে হক-বাতিল ও সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করার যোগ্যতা দান করেন। ফলে সে সহজেই বাতিল থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
হে মুমিনগণ! তোমরা যদি আল্লাহর সঙ্গে তাকওয়ার নীতি অবলম্বন কর, তবে তিনি তোমাদেরকে (সত্য ও মিথ্যার মধ্যে) পার্থক্য করার শক্তি দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহের মালিক। (সুরা আনফাল:২৯)
বিপদ থেকে মুক্তি
খোদাভীরু ব্যক্তি সর্বদা আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত হয়। যত বিপদই আসুক না কেন আল্লাহ তাআলা তাকে তা থেকে উত্তরণের কোনো না কোনো পথ তৈরি করে দেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
ধারণাতীত রিজিক দান
যে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করে এবং তার ওপর ভরসা করে, মহান আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। তাকে ধারণাতীত রিজিক দান করেন। পবিত্র কুরআনে মুত্তাকি সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং তাকে এমন স্থান থেকে রিযক দান করবেন, যা তার ধারণার বাইরে। যে-কেউ আল্লাহর উপর নির্ভর করে, আল্লাহই তার (কর্ম সম্পাদনের) জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয়ই আল্লাহ তার কাজ পূরণ করেই থাকেন। (অবশ্য) আল্লাহ সবকিছুর জন্য একটা পরিমাণ নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। (সুরা তালাক ৩)
আল্লাহর প্রশংসার পাত্র
মুত্তাকি ব্যক্তির প্রশংসা করে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর তাদের কী-বা গুণ আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেবেন না, অথচ তারা (মানুষকে) মসজিদুল হারামে যেতে বাধা দেয়, যদিও তারা তার মুতাওয়াল্লী নয়। মুত্তাকীগণ ছাড়া অন্য কোনও লোক তার মুতাওয়াল্লী হতেও পারে না। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক (এ কথা) জানে না। (সুরা আনফাল: ৩৪)
আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন
যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ভালোবাসেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই যে নিজ প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান : ৭৬)
আল্লাহর সাহচর্য লাভ
যারা খোদাভীরু হয় আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং জেনে রেখ, আল্লাহ তাদেরই সঙ্গে থাকেন, যারা (নিজেদের অন্তরে তাঁর) ভয় রাখে।’ (সুরা বাকারা : ১৯৪)
আমল কবুল হয়
মুত্তাকিদের আমল একমাত্র আল্লাহর জন্যই হয়ে থাকে। এতে শিরক-রিয়া কিংবা কোনো ধরনের হারামের সংমিশ্রণ থাকে না। আর আল্লাহ এমন বান্দার আমলই কবুল করে থাকেন। পবিত্র কুরআনে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ তো মুত্তাকীদের পক্ষ হতেই কবুল করেন।’ (সুরা মায়েদা : ২৭)
সুখময় নিশ্চিন্ত জীবন লাভ
যারা আল্লাহর জন্য নিজেদেরকে গুনাহ থেকে বিরত রাখে, মহান আল্লাহ তাআলাও তাদেরকে দুঃখ-কষ্ট হতে বিরত রেখে সুখময় জীবন দান করেন। পবিত্র কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা তাকওয়া অবলম্বন করবে ও নিজেদেরকে সংশোধন করবে, তাদের কোনো ভয় দেখা দেবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না।’ (সুরা আরাফ : ৩৫)
মহা পুরস্কার লাভ
খোদাভীরু ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার পছন্দের পাত্র। তিনি তার যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং মহা পুরস্কার দান করেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে-কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তাঁর পাপরাশি মার্জনা করবেন এবং তাকে দিবেন মহা পুরস্কার।’ (সুরা তালাক ৫)
আল্লাহর বন্ধু
খোদাভীরু ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ তাআলা এতটাই পছন্দ করেন যে, তাদেরকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ রেখ, যারা আল্লাহর বন্ধু তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না। তারা সেই সব লোক, যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে।’
(সুরা ইউনুস ৬২-৬৩)
সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান
যারা আল্লাহকে ভয় করে তারাই প্রকৃত পক্ষে সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। যে যত বেশি তাকওয়া অবলম্বন করে, সে ততটাই আল্লাহ তাআলার কাছে মর্যাদাবান। কুরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রকৃতপক্ষে তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বেশি মর্যাদাবান সেই, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি মুত্তাকি। (সুরা হুজুরাত : ১৩)
আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ লাভ
খোদাভীরু ব্যক্তির জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের সুসংবাদ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের দুনিয়ার জীবনেও সুসংবাদ আছে এবং আখেরাতেও। আল্লাহর কথায় কোনও পরিবর্তন হয় না। এটাই মহাসাফল্য। (সুরা ইউনুস: ৬৪)
কিউটিভি/আয়শা/০৪ মে ২০২৫, /সন্ধ্যা ৭:৫০