ব্রেকিং নিউজ
টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ নিউইয়র্কে বিএনপির ৩ শাখা কমিটির ভোটাভুটির মাধ্যমে কাউন্সিল সম্পন্ন অভ্যন্তরীণ কারণে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফর স্থগিত : পররাষ্টমন্ত্রী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে ব্যারিস্টার খোকনকে অব্যাহতি বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদকের অসাংগঠনিক তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে তোলপাড় টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশের মেয়েরা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৪’ পেলেন কুড়িগ্রামের এসএম আব্রাহাম লিংকন বই মেলায় আসছে ‘বন্দিনী’ : জেল জীবনে ডা.সাবরিনা’র যত কাহিনী ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ফায়াজুন্নেসা চৌধুরী পেলেন ইউজিসি ফেলোশিপ বেড়েছে সবজি,গরুর মাংসের দাম

অতিবেগুনি রশ্মি থেকে হতে পারে ক্যান্সার, যেভাবে থাকবেন নিরাপদ

Anima Rakhi | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ - ০৪:২০:০০ পিএম

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : এপ্রিলের এই সময়ে প্রায় প্রতিবছরই অসহনীয় গরম পড়ছে। বছরের এই সময়ে সূর্যের তাপ থাকে সবচেয়ে বেশি। বেশ কিছুদিন ধরেই দুর্বিসহ গরমে নাজেহাল অবস্থা বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকার মানুষের। গরমের পাশাপাশি আরেক দুশ্চিন্তার বিষয় এখন মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ের অতিবেগুনি রশ্মি। প্রতি বছরই এই মৌসুমে অতিবেগুনি রশ্মির তীব্রতা বিপজ্জনক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়।

অতিবেগুনি রশ্মির তীব্রতা বেশি হলে মানুষের ত্বকের ক্যান্সার থেকে শুরু করে চোখের বিভিন্ন রকম সমস্যা, অকালে চামড়া কুঁচকে যাওয়া বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো বিভিন্ন উপসর্গ তৈরি হতে পারে।

অতিবেগুনি রশ্মির পূর্বাভাস দেওয়া সংস্থাগুলোর মতে আগামী কয়েকদিন ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় অতিবেগুনি রশ্মির সর্বোচ্চ মাত্রা থাকবে ৭, যা অতিবেগুনি রশ্মির সূচক অনুযায়ী উচ্চ মাত্রার হিসেবে বিবেচিত। সেইসঙ্গে ২৪ এপ্রিল থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহে প্রতিদিন সর্বোচ্চ মাত্রা ১২ পর্যন্ত উঠতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, যা সূচক অনুযায়ী উচ্চ পর্যায়ের মাত্রাও ছাড়িয়ে যাবে। এই সূচকে মাত্রা যত বৃদ্ধি পায়, ত্বক ও চোখে ক্ষতির সম্ভাবনা তত বাড়তে থাকে এবং তত কম সময়ে ক্ষতিসাধন করার সক্ষমতা তৈরি হয়। এই মাত্রা সবচেয়ে বেশি হয় মধ্য দুপুরের দুই থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে। সাধারণত দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে এই মাত্রা সর্বোচ্চ হয়ে থাকে। কোনো অঞ্চলে গাছপালা ও জলাশয়ের পরিমাণের ওপরও অতিবেগুনি রশ্মির তীব্রতার পার্থক্য হয়ে থাকে।

অতিবেগুনি রশ্মি কেন ক্ষতিকর?

সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমাদের রোদ ও সূর্যালোক প্রয়োজন, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু অতিরিক্ত রোদের কারণে শরীরে অতিবেগুনি রশ্মির নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। অতিবেগুনি রশ্মির ফলে সবচেয়ে মারাত্মক যে রোগ হতে পারে তা হলো ত্বকের ক্যান্সার।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী ত্বকের যেসব জায়গা বেশিক্ষণ রোদে উন্মুক্ত থাকে– যেমন মুখমণ্ডল, ঘাড়, গলা, হাত– সেসব জায়গার ত্বকে ক্যান্সার সেল তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে এলে ত্বক পুড়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া, জ্বলুনি হওয়া থেকে শুরু করে জ্বর, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ইউভি রশ্মি চোখের জন্যও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত মাত্রায় ইউভি’র কারণে ক্যাটারাক্ট হতে পারে, যার ফলে চোখে ঝাপসা বা অস্পষ্ট দেখার মতো উপসর্গ তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা এনভায়রনমেন্টাল প্রটেকশন এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী ইউভি রশ্মির কারণে ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন বা চোখে স্পট তৈরি হতে পারে, যা পরবর্তীতে অন্ধত্বেও রূপ নিতে পারে। এছাড়া ইউভি রশ্মির আধিক্যের কারণে সময়ের আগে মানুষের চামড়া কুঁচকে যায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়।

অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

  • দুপুরের রোদে বাইরে বের না হওয়া ও ত্বকে রোদ না লাগানো
  • আঁটোসাটো কাপড় পরা। কারণ কাপড়ের সেলাইয়ের মধ্যে থাকা ছিদ্র ভেদ করে ইউভি রশ্মি ত্বকে আঘাত করতে পারে। তাই ঘাড়
  • ঢাকা ও লম্বা হাতাওয়ালা জামা পরার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
  • চওড়া হ্যাট বা টুপি পরা, যেন টুপি মুখমণ্ডল, ঘাড় ও চোখে রোদ লাগতে না দেয়। টুপি বা হ্যাটের বদলে ছাতাও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • শতভাগ ইউভি সুরক্ষা দেয়, এমন সানগ্লাস পরা।
  • ত্বকের জন্য সানস্ক্রিন ও ঠোঁটের জন্য লিপ বাম ব্যবহার করা।

অতিবেগুনি রশ্মি শুধুই কী ক্ষতিকর?

ইউভি বা অতিবেগুনি রশ্মি যে শুধু মানুষের জন্য ক্ষতিকর, সেরকমও নয়। ইউভি রশ্মির ইতিবাচক দিক নিয়ে অসলো ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের গবেষক আস্তা জুযেনিয়েন ও জোহান মোন ২০১৩ সালে ‘বেনেফিসিয়াল এফেক্টস অব ইউভি রেডিয়েশন আদার দ্যন ভিটামিন ডি প্রোডাকশন গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে।

তাদের ঐ গবেষণাপত্রে উঠে আসে যে ভিটামিন ডি উৎপাদনের পাশাপাশি শরীরের জন্য আরো বেশ কিছু ইতিবাচক ভূমিকা রাখে অতিবেগুনি রশ্মি। সূর্যের আলো মানবদেহের সংস্পর্শে আসলে মানুষের শরীরে যে ভিটামিন ডি সৃষ্টি হয়, তা বিশেষ ধরনের ইউভি রশ্মি ইউভি বি’র দ্বারা তৈরি হয়।

এছাড়া ইউভি রশ্মির কারণে ত্বকের রোগ যেমন হয়, তেমনি ইউভি বি রশ্মি সোরিয়াসিস, ভিটিলিগো, অ্যাটোপিক ডারমাটাইটিস সহ বেশ কিছু রোগ থেকে ত্বককে রক্ষাও করে। ইউভি রশ্মি দেহে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদনে সহায়তা করে যা রক্তচাপ কমায় ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আর ইউভি রশ্মি শরীরে এন্ডরফিন নিঃসৃত করতে সহায়তা করে, যার ফলে মানসিক চাপ কমে ও মেজাজ ভালো থাকে।

সূত্র: বিবিসি। 

কিউটিভি/অনিমা/২৫ এপ্রিল ২০২৪,/বিকাল ৪:২০
▎সর্বশেষ

ad