আগারগাঁও-মতিঝিল মেট্রোরেল ঘিরে মানুষের আনন্দ যাত্রা

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩ - ০৬:১০:১০ পিএম

ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে আধুনিক নগরায়নের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছিল গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর। ওইদিন উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম ধাপের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপের উদ্বোধন করলেন সরকারপ্রধান। 

সরেজিমন ঘুরে দেখা গেছে, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল ঘিরে চলছে আনন্দ যাত্রা। ভ্যানে করে নৌকা সাজিয়ে, টানা বাজানো হচ্ছে জাতির জনকের ভাষণ। চলছে দেশাত্মবোধক গানও। মাইকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। সবমিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ।

আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের আশাপাশে কড়া নিরাপত্তা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শ্লোগান মুখর দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ সমর্থকরা। বিজয় সরণি এলাকায় রাস্তার দুপাশে শত শত সমর্থক, সাধারণ মানুষ অপেক্ষা করছেন কখন প্রধানমন্ত্রীসহ স্বপ্নের মেট্রোরেল তাদের অতিক্রম করে মতিঝিলের দিকে ছুটবে। 

আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, মেট্রোরেলের দুপাশে উৎসুক জনতার দৃষ্টি মেট্রোরেলের দিকে। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন, কখন ট্রেনটি আসবে। 

চানখারপুল এলাকা থেকে পরিবারের ৪ জন সদস্যকে নিয়ে দোয়েল চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে আছেন আলী আকবর শেখ। তিনি জানালেন, তিনি ও তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের সমর্থক। স্বজনদের নিয়ে এসেছেন মেট্রোরেল দেখাতে। ট্রেনটি যখন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মতিঝিলের দিকে যাবে তখন ছবি তুলবেন। স্ত্রী আয়শা করিম জানান, তিনি রংপুরের মানুষ। দুই সন্তানসহ ননদকে নিয়ে মেট্রোরেল দেখতে এসেছেন। 

হাইকোর্ট এলাকায় ভ্যানের মধ্যে নৌকা সাজিয়ে গান করছিলেন সেলিম মিয়া। জানালেন, গত ২ দিন ধরে তিনিসহ আরও বেশ কয়েকজন নৌকা সাজিয়ে আনন্দের বাজনা বাজাচ্ছেন। আগারগাঁও থেকে ভ্যান চালিয়ে এসেছেন। জাতির জনকের ভাষণ ও তাকে নিয়ে করা গান বাজাচ্ছেন। 

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সচিবালয় মেট্রোরেল স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো এলাকায় অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। স্টেশনের দিকে বার বার তাকাচ্ছেন তারা। কখন ট্রেনটি এ স্টেশন অতিক্রম করবে। স্টেশনের প্রবেশ সিঁড়িগুলোতে সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। 

স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, পুরো স্টেশন প্রস্তুত। কাউন্টারে দায়িত্বরত ব্যক্তিটিও বসে আছেন। চলন্ত সিঁড়ি, সিঁড়ি, লিফটের সামনে দায়িত্বরত কর্মীরা দাঁড়িয়ে আছেন। স্টেশনটি তৃতীয় তলায়। সবচেয়ে উপরে মেট্রোরেল লাইন দ্বিতীয় তলায় টিকিট কাটাসহ প্রশাসনিক অফিস কক্ষ। তৃতীয় তলার ছাদের বিশেষ একটি অংশ উম্মুক্ত (গ্লাস দিয়ে ঢাকা) রাখা হয়েছে। রোদের আলো পুরো প্লাটফর্মে পড়তে দেখা গেছে। তাছাড়া পুরো প্লাটফর্মটিতে আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতিসহ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যাত্রীদের দিকনিদের্শনায় বাংলা ও ইংরেজিতে ব্যবহারবিধি লেখা রয়েছে।  বিশাল আকারের সিঁড়ি ও লিফট রয়েছে।  প্লাটফর্মে উত্তর পাশ দিয়ে যে লাইনটি রয়েছে সেটি দিয়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে মেট্রোরেল। অপরদিকে দক্ষিণ পাশ দিয়ে মতিঝিল থেকে উত্তরাগামী ট্রেনগুলো চলবে। 

সরেজিমন দেখা যায়, ঢাকার মেট্রোতে আধুনিক সব প্রযুক্তি ও উন্নত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- তিনতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক স্টেশন, স্বয়ংক্রিয় মেশিনের মাধ্যমে টিকিট কাটার সুবিধা, স্মার্ট কার্ড, নির্ঝঞ্ঝাট যাতায়াতে র্যাপিড পাসের ব্যবস্থা, স্টেশনে ওঠা-নামার জন্য লিফট-এসকালেটরের সুবিধা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন লোকদের জন্য বিশেষ সুবিধা, স্টেশন প্লাজায় গাড়ি পার্কি ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা, দুর্ঘটনা এড়াতে ‘প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর’–এর ব্যবস্থা, ট্রেনের দরজার স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলা এবং বন্ধ হওয়াসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।  

মেট্রোরেল সংশ্লিষ্ট ও সাধারণ মানুষ বলছে, যানজটে নাকাল ঢাকাবাসীকে দেবে যাতায়াতের স্বস্তি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরেও বলা হয়েছে, এ প্রকল্প শেখ হাসিনা সরকারের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, এতে রাজনৈতিক ভাবমূর্তি বাড়াবে। এসব বড় বড় প্রকল্প আওয়ামী লীগকে ২০২৪ সালে সাধারণ নির্বাচনের আগে বড় স্বস্তি দেবে।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৪ নভেম্বর ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:০৮

▎সর্বশেষ

ad