রমজানে ইবাদতে মগ্ন থাকার ঐতিহ্য

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ - ০৪:৫৩:৪৮ পিএম

ডেস্ক নিউজ : রমজানে মুসলিম মনীষীরা ইবাদত ও কোরআন তিলাওয়াতের জন্য সব কিছু ছেড়ে দিতেন। ইবনে আসাকির তাঁর ‘তারিখে দিমাশক’ গ্রন্থে লিখেছেন, ইসহাক বিন ইবরাহিম হুনাইনি রমজান মাস এলে হাদিসের মজলিসে বসতেন না। তখন তাকে মালিক বিন আনাস (রহ.) জিজ্ঞাসা করেন, হে আবু ইয়াকুব, তুমি রমজানে হাদিস শোনা ছেড়ে দাও কেন? রমজানে তা অপছন্দের হলে অন্য সময়েও তা অপছন্দনীয় হওয়ার কথা। তখন তিনি বলেন, হে আবু আবদুল্লাহ, এটি বরকতপূর্ণ মাস। এ সময় আমি নিজের জন্য সব কিছু থেকে অবসর নিতে চাই।

আল্লামা জামাখশারি (মৃত্যু ৫৩৮ হি.) তাঁর ‘রবিউল আবরার’ গ্রন্থে লিখেছেন, রমজান মাস শুরু হলে সুফিয়ান সাওরি (রহ.) সব ইবাদত ছেড়ে শুধু কোরআন তিলাওয়াত করতেন। আবু উসমান সাইদ বিন মানসুর আল-জুজাজানি (মৃত্যু ২২৭ হি.) তাঁর ‘আত তাফসির মিন সুনানি সাইদ বিন মানসুর’ গ্রন্থে লিখেছেন, প্রখ্যাত তাবেঈন আল-আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ আন-নাখয়ি (রহ.) রমজানের প্রতি দুই রাতে একবার পবিত্র কোরআন খতম করতেন। তিনি মাগরিব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ে ঘুমাতেন। রাত-দিনের অবশিষ্ট সময়ে শুধু ভালো ও কল্যাণমূলক কাজ করতেন।

আল-মাকরিজি তাঁর ‘আল-মাওয়ায়িজ’ গ্রন্থে লিখেছেন, মিসরে ফাতেমি মন্ত্রী আল আফজাল আল জামালির যুগে প্রচলিত ছিল যে প্রতিবছরের জুমাদাল আখিরার শেষে কায়রোর মদ্যপদের সব পানশালা বন্ধ করা হতো। রমজান শেষ হওয়া পর্যন্ত তাতে সরকারি তালা থাকত। মদ বিক্রি না করার ব্যাপারে সবাইকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হতো। রমজানের ঊনত্রিশতম দিনে ইমাম, মুয়াজ্জিন ও কারিদের বেতন বাড়ানোর নির্দেশনা থাকত। তাদের জন্য বরাদ্দ ভাতার দ্বিগুণ মাসের শেষ রাতে দেওয়া হতো।

হাদিসে রমজান মাসে ওমরাহ পালনে বেশি সওয়াবের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাই এ সময় ওমরাহ পালনের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। ‘আখবারু মক্কা’ গ্রন্থে আবদুল্লাহ বিন খুসাইম (মৃত্যু ১৩২ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি আতা বিন রাবাহ (রহ.), মুজাহিদ বিন জাবারত (রহ.) ও আবদুল্লাহ বিন কাসির আদদারি (রহ.)-সহ অনেক ফকিহকে দেখেছি। তারা রমজানের ২৭তম রাতে তানয়িমের উদ্দেশ্যে বের হতেন এবং ওমরাহ পালন করতেন। যেভাবে আয়েশা (রা.) ওমরাহ পালন করেছেন। প্রখ্যাত ফকিহ মুহাম্মদ আল-বানদানিজি শাফেয়ি (মৃত্যু ৪৯৫ হি.) রমজান মাসে ৩০টি ওমরাহ পালন করতেন।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৩ এপ্রিল ২০২৩,/বিকাল ৪:৫২

▎সর্বশেষ

ad