ডেস্ক নিউজ : শনিবার (১ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেফতার নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংবাদে বলা হচ্ছে যে, জীবনযাত্রার মান নিয়ে প্রতিবেদন লেখার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুল ও বানোয়াট। ওই সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে একটা শিশুকে ‘ব্যবহার’ করা এবং তার সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করে সংবাদ করার দায়ে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় বলছে, কাউকে এসব প্রতিবেদন লেখার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। ওই সাংবাদিক ৯ বছরের একটি শিশুকে ১০ টাকা দিয়েছিলেন এবং নিজের ভাষ্য ওই শিশুকে দিয়ে বলিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এটি অবশ্যই ‘চাইল্ড অ্যাবিউজ ও এক্সপ্লয়টেশন’। দ্বিতীয়ত, মহান স্বাধীনতা দিবসে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে খাটো করে দেখার চেষ্টা করেছেন। এ ধরনের কার্যকলাপ অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতিটি নাগরিকের জন্য বাকস্বাধীনতা বজায় রাখার ব্যাপারে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু প্রতারণামূলক কাজের মাধ্যমে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করা সৎ সাংবাদিকতার পরিপন্থি।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় জাকির হোসেন নামে এক দিনমজুরের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ‘কার্ড’ তৈরি করে। এতে বলা হয়, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কি করুম? বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম থাকলেও, ছবি দেয়া হয় একটি শিশুর। ১৭ মিনিটের মাথায় নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটে প্রথম আলো। খবরটি সংশোধন করে তারা। কিন্তু ততক্ষণে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপরই একটি বেসরকারি টেলিভিশন বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনটিতে যা পরিবেশন করা হয়েছে, সেটি ভুল। শিশু জাকির হোসেন আসলে দিনমজুর নয়, একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী, আর তার নাম সবুজ। টাকার বিনিময়ে তার ছবি তোলা হয়েছে।
পরে এ ঘটনায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানায় প্রথমে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া (৩৬) নামে এক ব্যক্তি।
একই প্রতিবেদনের জেরে বুধবার (২৯ মার্চ) রাতে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেন আবদুল মালেক নামে এক আইনজীবী। ওই মামলায় বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেন।
কিউটিভি/আয়শা/০১ এপ্রিল ২০২৩,/রাত ১১:১৯