ডেস্ক নিউজ : পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। রাজধানীর বারিধারা এলাকায় পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে, খালে বা লেকে দেওয়া বন্ধ করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজ বুধবার সকালে এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। অভিযানের অংশ হিসেবে বারিধারা ১১ নম্বর রোডের চারটি বাড়ির সামনে ড্রেনে কলাগাছ দিয়ে সারফেস ড্রেন থেকে পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাড়ির মালিকরা অনতিবিলম্বে নিজ থেকে এসব সংযোগ বন্ধ না করলে স্থায়ীভাবে বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দেন ডিএনসিসি মেয়র।
এ সময় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা হিসেবে খ্যাত বারিধারার ৫৫০টি বাড়ির মধ্যে ৩৪২ বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়েছে। সার্ভের রিপোর্ট অনুযায়ী বেঁধে দেওয়া আট স্তরের ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে বারিধারা এলাকার মাত্র পাঁচটি বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়াও ২০৩টি বাড়ি আটটি শর্তের মধ্যে কিছু সংখ্যক শর্ত পূরণ করেছে। অন্যদিকে একদমই শর্ত পূরণ করেনি ৩৪২টি বাড়ি, যাদের বাড়ির পয়োবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেনে।’
এ বিষয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটি অভিজাত এলাকায় যদি এমন চিত্র আমাদের দেখতে হয় তাহলে আমাদের আর কী করার আছে? অভিজাত এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ খুবই দুঃখজনক। বারবার বলছি সিটি করপোরেশনের স্যুয়ারেজ লাইনে পয়োবর্জ্যের সংযোগ দেওয়া যাবে না।’
‘ওয়াসার পৃথক লাইনে এসব বাড়ির বর্জ্য যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি নেই’ জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, ‘যেখানে ওয়াসার লাইন নেই সেখানে নিজস্ব ব্যবস্থায় ইটিপি প্লান্ট বসিয়ে পয়োবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আজ আমরা দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান পরিচালনা করেছি। পরবর্তীতে বনানী ও নিকেতন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘কোনোভাবেই পয়োবর্জ্য বা ব্ল্যাক ওয়াটার সিটি করপোরেশনের ড্রেনে, খালে, লেকে ঢুকতে পারবে না। অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে তাদের জানিয়ে আসছি, সচেতন করে আসছি। গণবিজ্ঞপ্তিও দিয়েছি, কিন্তু তারা কথা শোনেননি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অভিযান শুরু করলাম। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এখানে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
পয়োর্জ্যের কারণে লেকগুলোর পানি দূষিত হয়ে গেছে উল্লেখ করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেকে মাছ চাষ করা যাচ্ছে না। মশা নিধনে ন্যাচারাল সলিউশন সম্ভব হচ্ছে না, মাছ চাষ করতে না পারার কারণে। আমরা ড্রেন ও খাল আর দূষিত হতে দেব না।’উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে নিজ বাড়িতে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসিয়েছেন বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
অভিযানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হাছিনা বারী চৌধুরী এবং বারিধারা সোসাইটির প্রতিনিধিরা। উল্লেখ্য, এর আগে ৪ জানুয়ারি গুলশান-২-এর ১০৪ ও ১১২ নম্বর রোড এলাকায় পয়োবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ বন্ধে ডিএনসিসি প্রথমবার অভিযান পরিচালনা করে।
কিউটিভি/আয়শা/১১ জানুয়ারী ২০২৩/রাত ৮:৪৮