
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদদূস মঙ্গলবার রাতে এক শ্রমিক নেতাকে চড় মারেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিকভাবে এক ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। বুধবার হওয়া বৈঠকে ওই কর্মকর্তা ‘সরি’ বললে বিষয়টির মীমাংসা হয়। স্থানীয় লোকজন ও পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে পৌর এলাকার ভাদুঘরের আন্ত:জেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৭ দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা। বিজয় মেলার প্রবেশমুখ বাসটার্মিনারে বেড় দিয়ে বাঁশ বসিয়ে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়। বাঁশের খুঁটি দিয়ে বেড়া দেওয়ায় টার্মিনালে বাস পার্কিং করতে অসুবিধা হচ্ছিল।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বাস টার্মিনালের প্রবেশ মুখ থেকে প্রায় ২০ হাত দূরে একটি বাস কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের উপর এসে অবস্থান করে। এতে মহাসড়কের যানজট সৃষ্টি হয়। বিজয় মেলার জন্য দেয়া বাঁশ খুলে টার্মিনালে বাস ঢুকানোর জন্য পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদদূসের সঙ্গে কথা বলতে যান আন্ত:জেলা বাস-মালিক সমিতির লাইন পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন।পৌরসভার নির্বাহী পরিবহন শ্রমিক নেতাকে বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু কমিশনার বিজয় মেলার মঞ্চের কাছে না থাকায় পরিবহন শ্রমিক নেতা কথা বলতে পারেননি। এর মাঝে এক শ্রমিক টার্মিনালের প্রবেশমুখের বাঁশ খুলে বাস টার্মিনালের ভেতরে ঢুকান।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরিবহন নেতা জাকির হোসেনকে ডেকে এনে তিন-চারটি থাপ্পড় মারেন। এতে টার্মিনালের পরিবহন ও শ্রমিক নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ভাদুঘর বাস টার্মিনালের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।এতে সড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি হয়ে প্রায় এক ঘন্টাব্যাপী সড়ক পথে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সেসময় শ্রমিকরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনাসাপেক্ষে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।
এদিকে বধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উভয়পক্ষ নিয়ে আলোচনায় ডাকেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। সেখানে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী মঙ্গলবার রাতে থাপ্পরের ঘটনার জন্য জাকিরের কাছে দু:খ প্রকাশ করেন।বুধবার সভায় থাকা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.হানিফ জানান, মঙ্গলবার রাতে বাঁশ সরানো নিয়ে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদদূসের সঙ্গে শ্রমিক নেতা জাকির মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়। পৌরসভার নির্বাহী এক পর্যায়ে তাকে কয়েকটি থাপ্পড় মারেন। এনিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে প্রশাসন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে তা তুলে নেওয়া হয়।বিষয়টির জন্য পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দু:খ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি থাপ্পড় দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
কিউটিভি/অনিমা/২২ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১০:৫০