
ডেস্ক নিউজ : জাহাজের ত্রুটির কারণে সেন্টমার্টিন থেকে ১৩শ’ পর্যটক নিয়ে ছেড়ে আসা বে ওয়ান ১৭ ঘণ্টা পেরলেও কক্সবাজারে পৌঁছাতে পারেনি। ফলে দীর্ঘ সময় সাগরে ভাসমান পর্যটকরা নানান সঙ্কটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জাহাজে থাকা পর্যটকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে এসব তথ্য জানাচ্ছেন। তারা জানান, জাহাজের ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় সমুদ্রের মধ্যে ভাসমান অবস্থায় থেকে দুর্ভোগে পড়েছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সি পর্যটকরা। তারা কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার নানা বিষয় তুলে ধরছেন ফেসবুকে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রওনা দেওয়া ১৩ শতাধিক পর্যটকবাহী জাহাজটি রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু এখনও তীরে ভেড়েনি জাহাজটি।
পর্যটকরা জানান, এ বছর টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় বিকল্প হিসেবে কক্সবাজার থেকে কর্ণফুলী নামক একটি জাহাজ চলাচল করে। পর্যটক মৌসুম এবং পর্যটক বেশি হাওয়ায় কর্ণফুলির পরিবর্তে বে ওয়ান জাহাজ চলাচল করে। তবে দিন দিন এই জাহাজ ভ্রমণ রীতিমতো দুর্ভোগ হয়ে উঠেছে।
তারা আরও জানান, মঙ্গলবার কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে ইঞ্জিন ক্রুটি দেখা দিলে পরে এমবি বে-ওয়ান নামের জাহাজে তাদের সেন্টমার্টিন নেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে এমবি বে-ওয়ানের মাধ্যমে ১৩শতাধিক পর্যটক নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তবে জাহাজে ওঠার কিছুক্ষণ পরই আটকা পড়ে জাহাজটি। ১৪ ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার কারণে নানা বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
ইশরাত জাহান নামে এক পর্যটক বলেন, “সেই কখন জাহাজে উঠেছি এখনও সাগরের মাঝে। কখন যে কক্সবাজার পৌঁছাব তার হিসাব নেই। আমার বাস মিস হয়েছে। এগুলোর ক্ষতিপূরণ কে দেবে। আমাদের উদ্ধার করুন।”
খলিল আহমেদে নামে এক পর্যটক মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “১৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও তীরে পৌঁছাতে পারেনি। এর মধ্যে নেই কোনো পানি ও খাবারের ব্যবস্থা। জাহাজ কর্তৃপক্ষের খোঁজখবর নেই। জাহাজে থাকা অনেক পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।”
মিরাজ নামে আরেক পর্যটক বলেন, “যে দুর্ভোগ তার কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। ছেলে মেয়ে নিয়ে কী যে একটা অবস্থা। জাহাজ আটকা পড়ছে, অথচ কর্তৃপক্ষের যে আচরণ তাতেই ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।”
ট্যুর অপারেটর জসিম উদ্দিন শুভ প্রশাসনের হেল্প চেয়ে তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের বাঁচান। একদিকে জাহাজে পথে পথে হয়রানি অন্য দিকে বাস মিস করাই মধ্যবিত্ত পরিবারদের কান্না দেখে নিজের চোখের পানি চলে আসে। তারমধ্যে অফিস থেকে বস দিচ্ছে বকা যেমনি হোক চাকরি বাঁচাতে আগামী কালকে সকাল দশটার মধ্যে অফিসে হাজির হতে হবে। কিন্তু আমরা এখনও সাগরে ভাসতেছি। দেখার কেউ নাই। নাই কোনো খাবার। দোকানপাট বন্ধ। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও বার আউলিয়া নাম দিয়ে বুকিং নিয়ে দুই শিপের যাত্রী এক শিপ করে অর্থাৎ বে ওয়ান শিপে করে কয়েকদিন ধরে বে ওয়ানকে হাইলাইট করতে যাওয়া আসা শুরু করছে। কোম্পানি তারই ধারাবাহিকতায় কবলে পড়ে ভ্রমণে আসা আজ প্রায় ২ হাজার পর্যটকের বাস মিস হয়েছে। এর দায়ভার কে নেবে, কেউ কি বলতে পারবেন?’
কিউটিভি/অনিমা/২১.১২.২০২২/সকাল ১১.২৬