বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার প্রধান সড়ক টিএ রোড হয়ে মধ্যপাড়া যেতে যে সড়কটি ব্যবহার করা হয় সেটি বেশ ভাঙাচোরা। মঠের গোড়া দিয়ে প্রবেশ করে মৌলভীপাড়া হয়ে একটু সামনে যেতেই ভাঙাচোরা সড়কের পাশে চোখে পড়বে পৌরসভার ’সৌন্দর্য্যবিলাস’। সেখানে থাকা একটি পুকুর পাড়কে বেশ সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ওই সড়কসহ পুরো পৌর এলাকার অনেক সড়কই যখন ভাঙাচুরা ঠিক সেই সময়ে পুকুর পাড়ের সৌন্দর্য্য বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মজার বিষয় হলো, এ কাজটির জন্য কোনো ধরণের দরপত্র আহবান করা হয়নি। জরুরি প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে ‘কোটেশন’ প্রক্রিয়ায় কাজটি করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন উঠেছে। কাজটি সম্পন্ন করতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হবে বলে ধারণা পাওয়া যায়।
এদিকে এ কাজটি করতে গিয়ে কোনো ধরণের দরপত্র আহবান করা হয়নি। পৌরসভার তহবিল থেকে কর্মকর্তারা নিজেরাই টাকা খরচ করছেন। পরে ‘কোটেশন’ প্রক্রিয়ায় কোনো ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ হয়েছে মর্মে বিলের কাগজপত্র জমা দেওয়া হবে। শনিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাওয়াল দিঘী (মহেশ^র দিঘী) নামে পরিচিত ওই পুকুরটিতে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ এগিয়ে চলছে। পুকুরের উত্তর পাড়ে বসানো হয়েছে সাতটি বেঞ্চ। বেশ দামি ইট বিছানো হয়েছে ওই পাশটিতে। পুকুরের পূর্ব পাশেও একইভাবে দামি কিছু ইট বসিয়ে রাখা হয়েছে। ওই পাশটি মূলত এলাকার ভেতরে ঢোকার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়। ওই রাস্তাটির প্রবেশ মুখে একটি গেইট নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে এ বিষয়ে কেউ সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। তবে এ নিয়ে অনেকের মনেই ক্ষোভ ঝড়ে। তারা বলছেন, মূলত এখানে একাধিক নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ওইসব ভবনের মালিকদের সঙ্গে পৌরসভার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সখ্যতার সুবাদে তাদেরকে সুবিধা দিতে প্রয়োজন ছাড়াই এটি করা হচ্ছে। গেইট নির্মাণের ফলে ওই এলাকাটি একটি আবাসিক এলাকার মতো দেখতে হবে বিধায় জায়গার দামও বাড়বে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কাউছার আহমেদ শনিবার বিকেলে কুইক নিউজ কে বলেন, ‘পৌর পরিষদে সিদ্ধান্ত নিয়ে পুকুর পাড় দিয়ে হাঁটার রাস্তা করা হচ্ছে। এছাড়া বসার জন্যও বেঞ্চ করা হয়েছে। তবে এ কাজের বিপরীতে দরপত্র আহবান না করা হলেও কোটেশন প্রক্রিয়ার যে নিয়ম আছে সেভাবে করা হবে। বেশি টাকা গেলে কাজটাকে দুইভাগে ভাগ করা হবে।’ তবে কে কাজ পেয়েছেন সে বিষয়ে তিনি কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবেন না বলে জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পৌরসভার একাধিক সড়কের মেরামত কাজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ওই পুকুরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটির মেরামত কাজও শিগগির শুরু করা হবে। আশা করছি কয়েকমাসের মধ্যে পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো মেরামত হয়ে যাবে।’পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ওই পুকুরের পাড় দখল হয়ে যাচ্ছে বলে সেখানে কিছু উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় কাজ করা হচ্ছে সেটি আমি জানি না। পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কাজটি করাচ্ছেন। ওনিই এ বিষয়ে ভালো করে বলতে পারবেন।’তবে কাজটির বিষয়ে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কুদদূস এর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রবিবার দুপুরে ওনার মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলে তিনি ট্রেনিংয়ে আছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
কিউটিভি/অনিমা/০৭ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:১৫