
বাদল আহাম্মদ খান ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : গ্যারেজ বন্দি অ্যাম্বুলেন্স। রোগী বহনের কোনো কাজে আসছে না অ্যাম্বুলেন্সগুলো। কোথাও একপ্রকার অচল হতে চলেছে। এ অবস্থায় অন্য কাজে লাগিয়ে সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ অ্যাম্বুলেন্সগুলো লাইফ সাপোর্টসহ বেশ আধুনিক সুবিধা সংবলিত।২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের পক্ষ উপহার হিসেবে থেকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হাতে লাইফ সাপোর্টের সুবিধা থাকা ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিন অ্যাম্বুলেন্স আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিনটি হাসপাতালে। গত বছরের ২৯ অক্টোবর এসব অ্যাম্বুলেন্স বুঝিয়ে দেওয়া হলেও রোগী পরিবহনের কোনো কাজে আসছে না।
সরজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্স এখন একেবারে গ্যারেজ বন্দি। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, চালানো হয় না বলে এটি’র ব্যাটারি অকেজো হয়ে আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর ও কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সটি সচল থাকলেও শুধুমাত্র করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো একেবারেই কোনো কাজে লাগবে না। এতে করে ওই দু’টি অ্যাম্বুলেন্সও অচল হয়ে পড়বে।
কথা হলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পবিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, ‘ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটিসহ আমার এখানে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। এর মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে গেছে। আরেকটি এখনো সচল। ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটি গ্যারেজে রাখা আছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য আমার এখানো কোনো চালক নেই। তবে আমার জন্য সরকারি বরাদ্দের যে গাড়ি আছে এর চালক দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স চালানো হয়। তবে এটাও নিয়মের বাইরে। কারণ আমার গাড়ির চালক আউটসোসিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত। নিয়ম অনুসারে এ ধরণের নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ অ্যাম্বুলেন্স চালাতে পারবেন না। তবে মানবিক কারণে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত রোগী পৌঁছে দেওয়া হয়। আর ভারতীয় অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে গেলে অনভ্যস্থ চালকের বেশ সমস্যা হয়। চালক বলছেন যে চালাতে গিয়ে এটির নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়। যে কারণে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে না।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অরূপ পাল বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিনের কার্যক্রমে ভারতের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স কাজে লাগানো হয়েছে। তবে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে এটি কাজে লাগানো হয়। বাড়তি খরচসহ নানা কারণেও বেশিরভাগ রোগীর স্বজনরাই এ অ্যাম্বুলেন্সটি নিতে চাওয়াটা একটা সমস্যা। এছাড়া আমাদের এখানে আরো দু’টি অ্যাম্বুলেন্স আছে।২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামন বলেন, ‘ভারতের দেওয়া উপহারের অ্যাম্বুলেন্সটি চালাতে চালকের অনীহা রয়েছে। চালক বলছেন যে এ অ্যাম্বুলেন্সটি চালাচল নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। যে কারণে ঝুঁকি নিতে চান না। এ অবস্থায় এখন করোনার ভ্যাকসিনের কার্যক্রমে লাগানো হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সটিকে। তবে ভ্যাকসিনের কার্যক্রম শেষ হলে এটি আর কোনো কাজে আসবে না। সারাদেশেই অ্যাম্বুলেন্সগুলো রোগী বহনের কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে জানি।
কিউটিভি/অনিমা/১২.১০.২০২২/সকাল ১১.৪১






