
বাদল আহাম্মদ খান,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : আকাশে সাদা মেঘের দৃশ্য আর পথে প্রান্তরে ফুটে থাকা কাশফুল দেখে বুঝা যায় এখন শরৎকাল, আর শরৎকাল মানেই সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব ।এবছর দেবী মা দুর্গা গজে অর্থাৎ হাতিতে আগমন করবে যার অর্থ শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা আর মা দুর্গা বিজয় দশমীতে গমন করবে নৌকায় চেপে এর অর্থ শস্যবৃদ্ধি আশানুরূপ হলেও বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে কিছু শস্য নষ্ট হবে ।শারদীয় দুর্গাপূজা কে ঘিরে বিজয়নগর উপজেলার ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা । প্রতিটি পূজা মন্ডপেই এখন ধুম পড়েছে প্রতিমা তৈরীর । কে কার থেকে কত ভালো কত আকর্ষণীয় প্রতিমা তৈরি করে মানুষের হৃদয় ছুঁতে পারে তারই প্রতিযোগিতার মহা উৎসব যেন লেগেছে পুজা মন্ডপে মন্ডপে। পূজা মন্ডপ কমিটিগুলোর নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে প্রতিমা তৈরীর কারিগর নিয়ে এসে প্রতিমা তৈরি করছে ।
প্রতিমা তৈরীর কারিগর বিজয় চন্দ্র পাল জানান, এ বছর পাঁচটি পূজা মন্ডপে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছি, বংশীয়ভাবে এই কাজ করে আসছি আমার দাদা, বাবা, কাকা এবং আমরা সকলে এই পেশার সাথে যুক্ত। এবছর এই প্রতিমা তৈরিতে খরচ ৫০ হাজার টাকা নিলেও আমাদের প্রয়োজনীয় কাঠ, বাঁশ, রং, কাপড়,চুমকি, শোলা সহ বিভিন্ন উপকরণ এর দাম বেড়ে যাওয়ায এখন কাস্টমার এবং পেশাটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য এ কাজ করে যেতে হচ্ছে। বিগত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে অল্প দামে প্রতিমা নির্মাণ করেছিল পূজা মন্ডপ গুল।এ বছর আশায় বুক বেঁধেছিলাম কিন্তু বৈশ্বিক যুদ্ধের কারণে সকল পণ্যের দাম বেড়ে গেছে তাই খরচ বেরে লাভের অংশ শুধুই কমেনি অনেক কমে গেছে। মন্ডপ কমিটিও এ বাজেট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ।কারিগর দিপক পাল বলেন একটি চালার মধ্যে প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। দেবী দুর্গার সঙ্গে রয়েছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষী ও স্বরসতী। এখন পর্যন্ত মুখমণ্ডলসহ দেহের অবয়ব গঠন করা হয়েছে। প্রতিমাগুলো শুকানোর কাজ চলছে। আর কিছুদিনই পরেই রং তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে প্রতিমাগুলো।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ, এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ দৈনিক গণকন্ঠ কে বলেন, সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব হলো সবচেয়ে বড়ো উৎসব। আর এই উৎসবকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য উপজেলার পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটির সাথে ও সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, বিট পুলিশিং কমিটি সহ সকলদের সাথে আমরা আলোচনা করে মনিটরিং কমিটি গঠন করেছি। দুর্গা পূজার প্রতিটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ থেকে শুরু করে বিজয় দশমী আগ পর্যন্ত আমাদের নিরাপত্তা বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এছাড়া নিরাপত্তার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি পাশাপাশি প্রশাসন সর্বাত্মক সজাগ রয়েছে এবং তাদের দৃষ্টি রয়েছে আমাদের মন্ডপ গুলির উপর কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা কেউ যেন ঘটাতে না পারে আমরা সতর্কতার সহিত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।পাশাপাশি উপজেলার সকল দুর্গাপূজা মন্ডপের কমিটিকে ও নির্দেশ দেওয়া আছে আপনারা যদি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা মনে করেন তাহলে সাথে যোগাযোগ করবেন প্রশাসনের সাথে। প্রশাসন আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
বিজয়নগর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক কাত্তিক রায় ,বলেন ১লা অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে । এবছর বিজয়নগর উপজেলার প্রায় ৫৪টির মত মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে ।দুর্গা পূজার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, এছাড়া নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন পাশাপাশি প্রশাসন সর্বাত্মক সজাগ রয়েছে আমাদের মন্ডপ গুলির উপর কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা কেউ যেন ঘটাতে না পারে তাছাড়া আমরা সতর্কতার সহিত এই বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও করছি।আমরা আশাবাদী এই বছর শারদীয় দুর্গাপূজা কে ঘিরে বিজয়নগর উপজেলার প্রতিটি পৃজার মন্ডবে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রেখে সকলে এই দুর্গোৎসবকে আনন্দ সহিত ভাগ করে নেবেন।
কিউটিভি/অনিমা/১১.০৯.২০২২/দুপুর ২.০৬