সাদিক কায়েম সমন্বয়ক ছিলেন না

Ayesha Siddika | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৫ - ০৪:৪৬:৪২ পিএম

ডেস্ক নিউজ : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরনেতা সাদিক কায়েম কখনোই সমন্বয়ক ছিল না। ৫ আগস্টের পর থেকে সে নিজেকে সমন্বয়ক বলে পরিচয় দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়া জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তার বক্তব্যটি সত্য নয়। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ছাত্র নেতৃত্ব অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে সেটি নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল।’

নাহিদ বলেন, ‘অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়। এছাড়া শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয়নি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, শিবিরনেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা (ছাত্রশক্তি) কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার। ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সঙ্গে জড়িত একটা অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। এর সঙ্গে জাবি’র একটা স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়েছিল।

তিনি বলেন, একটা নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রে দীর্ঘসময় কাজ করা হয়েছে। আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সব পক্ষের সঙ্গেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানে এই না যে, তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।

জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব সম্পর্কে নাহিদ বলেন, ‘৫ আগস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই ব্রিফিংয়ের পর তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয়, সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি। তিনি নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলি প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে।’

প্রবাসী সংবাদিক জুলাকার নাইন সায়ের অপপ্রচার চালাচ্ছেন দাবি করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ২ অগাস্ট ২০২৪ রাতে জুলকারনাইন সায়েররা একটি আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিলেন। এ উদ্দেশ্যে কথিত সেফ হাউজে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়। থ্রেট করা হয় যাতে সেই রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সঙ্গে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে। রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য ছিল-একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে, জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে। আর যারা এভাবে চাপ প্রয়োগ করছে, তাদের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক।

নাহিদ বলেন, ‘সায়ের গং ৫ আগস্টের পর বারবার চেষ্টা করেছে আমাদের বিরুদ্ধে পালটা নেতৃত্ব দাঁড় করাতে। সেক্ষেত্রে সাদিক কায়েমদের ব্যবহার করেছে এবং তারা ব্যবহৃতও হয়েছে। সায়ের গংদের এ চেষ্টা অব্যাহত আছে। কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভেইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা-হেন কোনো কাজ নেই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে, এ দেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হয়েছে কি না, জানা নেই। কিন্তু মিথ্যার ওপর দিয়ে বেশিদিন টেকা যায় না।

 

 

আয়শা/১ আগস্ট ২০২৫/বিকাল ৪:৪৪

▎সর্বশেষ

ad