ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনী’র মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক ১ ঢাবি’র জহুরুল হক হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন পুনর্গঠন : সদস্য সচিব নিয়ে বিতর্ক রাস্তায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের ভিডিও ভাইরাল ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি দর্শন বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ঢাবি দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৪তম পুনর্মিলনী ও কমিটি গঠিত হয়েছে সাইদ সোহরাব ও শেখ মো. নাসিম এর নেতৃত্বে ঢাবি মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, যুবদল নেতার মৃত্যু কুড়িগ্রামে নবগঠিত জেলা বিএনপির আহবায়কের বিরুদ্ধে মশাল মিছিল

আল্লাহর জন্য ত্যাগের অমূল্য প্রতিদান

Anima Rakhi | আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ - ০৪:৩৪:৩১ পিএম

ডেস্ক নিউজ : যেকোনো ত্যাগ-তিতিক্ষার সর্বোত্তম প্রতিদান মহান আল্লাহর কাছে মেলে। শুধু ক্ষণস্থায়ী সুখ নয়, বরং এর জন্য আছে চিরস্থায়ী পুরস্কার, যা প্রতিশ্রুত হয়েছে পবিত্র কোরআনে এবং নবী করিম (সা.)-এর জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে। একটি চিরন্তন সত্য হলো—‘কোনো ব্যক্তি যদি আল্লাহর জন্য কিছু ত্যাগ করে, আল্লাহ তাকে তার চেয়ে উত্তম কিছু দিয়ে পুরস্কৃত করেন।’

যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোনো কিছু ত্যাগ করে, বাস্তবিক অর্থে সে কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

যদিও তা মানুষের দৃষ্টিতে ক্ষতি বলেই মনে হয়, বরং সে একজন সৌভাগ্যবান ব্যবসায়ীর মতো, যে লেনদেন করে মহান আল্লাহর সঙ্গে। আর আল্লাহর সঙ্গে যে ব্যবসা করে, সে কখনোই ক্ষতির মুখ দেখে না; সব সময় সে লাভবান হয়।

হাসান বসরি (রহ.) বলেন, একবার সুলাইমান (আ.) আল্লাহর দেওয়া সৌন্দর্য ও সম্পদের মধ্যে একটি পরীক্ষার সম্মুখীন হন। তিনি তাঁর প্রিয় ঘোড়াগুলোর প্রতি এতটাই মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েন যে তা তাকে আসরের নামাজ থেকে ব্যস্ত রাখেন।

তখন তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নেন, ঘোড়াগুলোর পায়ের স্নায়ুগুলো কেটে দেন, যেন এগুলো আর তাঁর দুনিয়াবি মনোযোগের কারণ না হয়। কিন্তু আল্লাহ, তাঁর সেই ত্যাগের বদলে সুলাইমান (আ.) কে আরো দ্রুতগামী, আরো ক্ষমতাশালী বাহন দান করেন। এমনকি তাঁর আদেশে বাতাস পর্যন্ত সুলাইমান (আ.)-এর অনুগত হয়ে যায়, যা তাঁকে এমনভাবে বহন করত, যাতে সকালে এক মাসের পথ আর সন্ধ্যায় আরেক মাসের পথ অতিক্রম করা যেত।

(ইবনে কাসির : ৪২৮/৬)

মানুষ প্রায়ই ভাবে, ত্যাগ মানে বঞ্চনা, ক্ষতি মানে দুঃখ আর বিচ্ছেদ মানে অপূর্ণতা।

কিন্তু একজন মুমিনের দৃষ্টিভঙ্গি এর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কিছু ত্যাগ করে, আল্লাহ তাদের কখনো একা রাখেন না; বরং তিনি তাদের জন্য এমন দ্বার উন্মোচন করেন, যা তাদের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “জাফর ইবনে আবি তালিব (রা.) জিবরাইল ও মিকাইল (আ.)-এর সঙ্গে জান্নাতের পথে বিচরণ করছিলেন। তাঁর দুটি ডানা ছিল, যা দিয়ে তিনি জান্নাতের বিশালতায় উড়ে বেড়ান। আল্লাহ তাঁর দুই হাতের বিনিময়ে তাঁকে এই ডানা দান করেছেন।

তিনি আমার সঙ্গে সালাম বিনিময় করলেন এবং বললেন, কিভাবে তিনি মুশরিকদের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। এজন্যই তাঁকে ‘উড়ন্ত শহীদ’ (তাইয়ার) বলা হয়।”

(তাবরানি, হাদিস : ১৪৬৬; সহিহুল জামে, হাদিস : ৩৩৬৩)

ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনি আমাদের জন্য অমর উদাহরণ। যখন মিসরের আজিজের স্ত্রী তাঁকে প্রলুব্ধ করতে চেয়েছিল, দরজাগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল, নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলেছিল এবং পাপের সব দরজা খুলে দিয়েছিল, তখন তিনি আল্লাহর সামনে সত্যনিষ্ঠ থেকে বলেছিলেন—

‘আল্লাহ, আমাকে রক্ষা করুন!’ (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ২৩)

এই সততার প্রতিদানস্বরূপ আল্লাহ তাঁকে পবিত্রতার শ্রেষ্ঠ সম্মানে ভূষিত করেন। প্রথমে তাঁকে সম্মান দেন নারীদের মধ্যে, তারপর মর্যাদায় উন্নীত করেন পুরুষদের মধ্যেও।

তিনি দুনিয়ার আকর্ষণীয় প্রলোভন ত্যাগ করে কারাবরণকে গ্রহণ করেছিলেন কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আর আল্লাহ তাঁকে এমনভাবে পুরস্কৃত করেন যে তিনি হয়ে উঠেছিলেন মিসরের রাজকীয় কোষাগারের তত্ত্বাবধায়ক, সমগ্র দেশের এক বিশ্বস্ত শাসক।

যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হারাম জাঁকজমক ত্যাগ করে, আল্লাহ তার হৃদয়ে অতুলনীয় সম্মান ও মর্যাদা দান করেন। যে হারাম উপার্জন পরিহার করে, আল্লাহ তাকে হালাল, বরকতময় ও প্রশান্তিদায়ক রিজিক দেন। যে আল্লাহর ভয়ে কোনো সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহ তাকে পবিত্র, পরিপূর্ণ ও সম্মানজনক ভালোবাসা দান করেন। আল্লাহর প্রতিদান সব সময় পূর্বের মতো নাও হতে পারে, তবে তা অবশ্যই এমন অতুলনীয়, যা কেবল তিনিই দিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আখিরাতের প্রতিদান তো আরো উত্তম।’

(সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৫৭)

নিজের চাওয়া-পাওয়ার চেয়েও আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত, তাহলে আল্লাহ তাকে এমন আনন্দ দান করবেন, যা অন্তরে প্রশান্তি আর জীবনে পরিতৃপ্তি বয়ে আনবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা নিপীড়িত হওয়ার পরও আল্লাহর পথে হিজরত করেছে, আমি অবশ্যই তাদের দুনিয়াতে কল্যাণময় বসতি দান করব। আর পরকালের প্রতিদান তো আরো মহৎ, যদি তারা তা জানত! তারা সেই সব মানুষ, যারা ধৈর্য ধারণ করে এবং স্বীয় প্রতিপালকের ওপর ভরসা করে।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪১-৪২)

কিউটিভি/অনিমা/২১ জুন ২০২৫, /বিকাল ৪:৩৪

▎সর্বশেষ

ad