
ডেস্ক নিউজ : পবিত্র কোরআনে সুরা জুমা নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে। তাফসিরবিদরা বলেন, সুরা জুমার আগের সুরার নাম হলো সুরা ‘সফ’। সফ অর্থ কাতার বা সারি। জুমার নামাজ সারিবদ্ধভাবে আদায় করা হয়। এতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, এতে এই ইঙ্গিত রয়েছে।
রআনে জুমার আলোচনা
প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান-সম্পন্ন মুসলমান পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়া ফরজ। এ নামাজ জামাআতে আদায় করতে হয়। এ কারণেই মহান আল্লাহ জুমার দিন দ্রুত মসজিদে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا إِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ، ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
হাদিসে জুমার আলোচনা
জুমার দিন এই উম্মতের প্রতি বিশেষ দান
মহান আল্লাহ পূর্বের জাতিবর্গকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তোমরা সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিনে আমার জন্য বিশেষ একটি ইবাদত কর। কিন্তু তারা সেই শ্রেষ্ঠতর দিনটি নির্ণয় করতে ভুল করেছে। চিন্তা-ভাবনা করে ইহুদীরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য শনিবারকে নির্বাচন করেছে আর নাসারারা নির্ধারণ করেছে রবিবারকে। অথচ সবচেয়ে সম্মানিত দিন হল জুমাবার। এ দিনের অনেক ফজিলত, অনেক বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ মেহেরবানি করে সে দিনটি উম্মতে মুহাম্মদিকে দান করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
نَحْنُ الآخِرُونَ السّابِقُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، بَيْدَ أَنّهُمْ أُوتُوا الكِتَابَ مِنْ قَبْلِنَا، ثُمّ هَذَا يَوْمُهُمُ الّذِي فُرِضَ عَلَيْهِمْ، فَاخْتَلَفُوا فِيهِ، فَهَدَانَا اللهُ، فَالنّاسُ لَنَا فِيهِ تَبَعٌ: اليَهُودُ غَدًا، وَالنّصَارَى بَعْدَ غَدٍ.
জুমার দিনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার অন্যতম একটি বিষয় হল, এ দিন কালক্রমে সংঘটিত এমন কিছু মহাঘটনার নীরব সাক্ষী, যা পৃথিবীর মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল বা পৃথিবীকে নবজীবন দান করেছিল। এমনিভাবে এ দিনই সংঘটিত হবে ঐ মহাপ্রলয়, যা এই নশ্বর পৃথিবীর সমাপ্তি ঘটিয়ে এক অবিনশ্বর জগতের সূচনা করবে। বদরি সাহাবি আবু লুবাবা ইবনে আবদুল মুনযির (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إِنّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللهِ مِنْ يَوْمِ الْأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ، فِيهِ خَمْسُ خِلَالٍ: خَلَقَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَأَهْبَطَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَفِيهِ تَوَفّى اللهُ آدَمَ، وَفِيهِ سَاعَةٌ لَا يَسْأَلُ اللهَ الْعَبْدُ فِيهَا شَيْئًا إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُ، مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا، وَفِيهِ تَقُومُ السّاعَةُ، مَا مِنْ مَلَكٍ مُقَرّبٍ، وَلَا أَرْضٍ وَلَا سَمَاءٍ، وَلَا رِيَاحٍ وَلَا جِبَالٍ وَلَا بَحْرٍ، إِلّا وَهُنّ مُشْفِقُونَ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ.
জুমার দিনের করণীয়
প্রত্যেক সাবালক জ্ঞান-সম্পন্ন মুসলমান পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়া ফরজ। জুমার নামাজ জামাআতে আদায় করতে হয়। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
مَنْ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ، وَمَسّ مِنْ طِيبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَهُ، ثُمّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَلَمْ يَتَخَطّ أَعْنَاقَ النّاسِ، ثُمّ صَلّى مَا كَتَبَ اللهُ لَهُ، ثُمّ أَنْصَتَ إِذَا خَرَجَ إِمَامُهُ، حَتّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ، كَانَتْ كَفّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ جُمُعَتِهِ الّتِي قَبْلَهَا.
২ উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
৩ জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৪ সম্ভব হলে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৫. মসজিদে গিয়ে নফল নামাজ পড়া।
৬ মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। ৭.মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা এবং খুত্বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
১. জুমার দিন ও রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
২. সুরা কাহাফ তিলাওয়াত করা।
৩. জুমার নামাজের পূর্বে দুই খুৎবার মাঝখানে হাত না উঠিয়ে মনে মনে দোয়া করা।
৪. সূর্য ডোবার কিছুক্ষণ আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত গুরুত্বের সাথে জিকির, তাসবিহ ও দোয়ায় লিপ্ত থাকা।
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলিহী ওয়াসাল্লিম তাসলিমা।
কিউটিভি/আয়শা/১৭ মে ২০২৪,/বিকাল ৫:১২