ব্রেকিং নিউজ
চিলমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ : অব্যহতি দুই বিক্ষোভকারীকে কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনী’র মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক ১ ঢাবি’র জহুরুল হক হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন পুনর্গঠন : সদস্য সচিব নিয়ে বিতর্ক রাস্তায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের ভিডিও ভাইরাল ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি দর্শন বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ঢাবি দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৪তম পুনর্মিলনী ও কমিটি গঠিত হয়েছে সাইদ সোহরাব ও শেখ মো. নাসিম এর নেতৃত্বে ঢাবি মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, যুবদল নেতার মৃত্যু

‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ গানের পিছনের সব কথা

admin | আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২২ - ০৬:০৯:৫১ পিএম

ডেস্কনিউজঃ বিবিসি বাংলা একটি জরিপ চালিয়েছিল। বিগত ১০০ বছরের শ্রেষ্ঠ বাংলা গান কোন কোন গুলো ? জরিপে ১০০ বছরের শ্ৰেষ্ঠ গানের মধ্যে ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ সেরা ২০টি গানের মধ্যে চতুর্থ স্থান দখল করে। এই ঐতিহাসিক ও জনপ্রিয় গানটির পিছনের অনেক কথা আজ জেনে নেয়া যাক।

এই গানটির ইতিহাস ঘাটতে গিয়ে দুটি ভয়াবহ দিক উম্মোচিত হয়েছে। যা শ্রোতাদের বিস্মিত করে তুলবে। এর একটি দিক হল, যে কফি হাউজকে নিয়ে মান্নাদের কণ্ঠে আহাজারি প্রকাশ পেয়েছে, সেই কফি হাউজে বাস্তবে তিনি কোনদিনই যাননি। অন্যটি হলো, গানের গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদার এই গানের শেষ তিনটি লাইন লিখেছিলেন হাওড়া স্টেশনে কুড়িয়ে পাওয়া সিগারেটের প্যাকেটের উল্টো সাদা অংশে।

‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত বাংলা সঙ্গীত। স্মৃতিচারণী এই সঙ্গীত বা গানটি ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত। গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের লেখা ও সুপর্ণকান্ত ঘোষের সুরে এই গানে কন্ঠ দেন মান্না দে।

১৯৮৩ সালের দিকে, গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদার অনেক জনপ্রিয় প্রেমের গান লিখে ফেলেছেন, কিন্তু তখনো তিনি মান্না দের জন্য গান লিখেনি। কারন, ঔ সময় মান্না দের জন্য কেবল পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় গান লিখতেন। গীতিকার গৌরী প্রসন্নের মনে মান্না দের জন্য পূজার গান লেখার ইচ্ছা ছিল। সেই সময় নচিকেতা ঘোষ ও গৌরী প্রসন্ন মজুমদার বাংলা সংগীতের সেরা সুরকার-গীতিকার জুটি হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। কিছুদিন পর গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদার, শক্তি ঠাকুরকে দিয়ে একটি গানে কন্ঠদানের জন্য একদিন নচিকেতা ঘোষের নিউ আলিপুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যকার সম্পর্কও ছিল বেশ মুধুর, সেই সূত্রে নচিকেতার ছেলে সুপর্ণকান্তির সঙ্গেও গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের বেশ ভাল সম্পর্ক ছিল। গৌরী প্রসন্ন, নচিকেতার বাড়িতে আসার বেশ অনেকক্ষণ পরে নচিকেতার ছেলে সুপর্ণকান্তির সাথে সাক্ষাত হওয়াতে গৌরী প্রসন্ন মজুমদার অনেকটা মজা করেই সুপর্ণকান্তিকে বলেন, কী বাইরে আড্ডা মেরেই সময় কাটাচ্ছ বুঝি? উত্তরে সুপর্ণকান্তি তার গৌরী কাকাকে বলেন, কী সব গদগদে প্রেমের গান লিখছো একটা অন্যরকম গান লিখে দেখাও না, এই আড্ডা নিয়েও তো গান লিখতে পারো।

জবাবে গৌরী প্রসন্ন বলেন, তুমি (সুপর্ণকান্তি) তো বিশ্ববিখ্যাত অক্সফোর্ড থেকে এমএ লাভ করেছো। তুমি আড্ডা নিয়ে কি আর বাংলা গান গাইবে? সুপর্ণ এবার বলে, কেন নয়। কফি হাউসের আড্ডা নিয়েও তো একটা গান লিখতে পারো। গৌরী প্রসন্ন বলেন, লিখলে তোমার বাবা (নচিকেতা ঘোষ) কি সে গান গাইবেন? তাদের দুজনের কথারবার্তার ফাঁকেই গৌরী প্রসন্ন মনে মনে তৈরি করে ফেলেন গানের দুটি লাইন।

এরপর সুপর্ণকান্তিকে বলেন, আচ্ছা তাহলে লিখে নাও – কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই ,কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই। সুপর্ণও সঙ্গে সঙ্গে সেই গানের দুটো লাইনেই সুর দিয়ে শুনিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শক্তি ঠাকুর গানটি সুপর্ণকে সেবার পূজায় গানটা গাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন কিন্তু সুপর্ণ তাতে রাজি হননি। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই ঠিক করে নিয়েছিলেন যে গানটি মান্না দে কে দিয়ে গাইবার কথা।

কিন্তু গানের বাকি লাইনগুলো তখনো অসম্পূর্ণ ছিল, পরের দিন সকালেই গৌরী প্রসন্নের স্ত্রী সুপর্ণকান্তিকে ফোন দিয়ে জানান যে, বহুদিন পরে সারা রাত জেগে অসুস্থ গৌরী প্রসন্ন গান লিখেছেন। ঐ সময় তখন গৌরী প্রসন্ন ক্যান্সারেও আক্রান্ত ছিলেন। দু’দিন পরে গৌরী প্রসন্ন গানটা প্রস্তুত করে নিয়ে হাজির হয়। কিন্তু গৌরী প্রসন্ন শেষ স্তবক যোগ করার পক্ষপাতী ছিলেন না। কিন্তু সুপর্ণকান্তির ইচ্ছাতেই শেষ পর্যন্ত গৌরী প্রসন্ন আরও একটি স্তবক যোগ করতে রাজি হন। এরপর দুর্দান্ত সেই লাইন লেখেন- সেই সাতজন নেই, তবুও টেবিলটা আজও আছে। কিন্তু সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি(গৌরী প্রসন্ন) শেষ তিনটি লাইন তিনি লিখেছিলেন চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার পথে হাওড়া স্টেশনে বসে একটি সিগারেটের প্যাকেটের উল্টো পিঠের খালি সাদা অংশে করে। যা একজন পরিচিত লোকের মাধ্যমে তা সুপর্ণকান্তির কাছে পাঠিয়ে দেন।

তারপর সুপর্ণকান্তির গানটিতে সুরকরে মুম্বইয়ে মান্না দে কে দিয়ে গানটি রেকর্ড করান। যে গান তৈরি হয়ে যায় বাংলা গানের একটি ইতিহাস।

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া

লেখকঃ লেখকঃ লুৎফর রহমান। লেখক, কলামিস্ট, রাজনীতিবিদ।

কিউএনবি/বিপুল/১লা এপ্রিল, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ |সন্ধ্যা ৬:০২

▎সর্বশেষ

ad