জিশান-আফিফ-রাকিবুলে চড়ে টপ এন্ড সিরিজে বাংলাদেশের প্রথম জয়

Ayesha Siddika | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫ - ০৯:২৮:১২ পিএম

আর কে আকাশ, পাবনা প্রতিনিধি : ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী পাবনার কৃতি সন্তান সাতারু মাহফিজুর রহমান সাগর কে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। শনিবার বেলা ১১ টায় তার শৈশবের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বীপচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।

দ্বীপচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাফিনা শামসুন্নাহার কবিতার সভাপতিত্বে ও সহকারী শিক্ষক তুহিনা আক্তার এর পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মহরম হোসেন, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, নাসিম হায়দার, জিনিয়াস প্রি-ক্যাডেট স্কুলের উপদেষ্টা সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাদের মিঠু, ফাহমিদা জামান প্রমূখ।

এসময় সাংবাদিক আর কে আকাশ, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস, রেহেনা পারভীন, মোছা. শামসুন্নাহার, খাদিজা ইয়াসমিন, সামছুন নাহার পপি, ইমদাদুল হক, শাহীনা পারভীন, নাজনীন আক্তার, সম্পা ইসলাম, ফিরোজা খাতুনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্যকালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সময় সাতারু মাহফিজুর রহমান সাগর বলেন, একেবারে ছোটবেলা থেকে ব্রজেন দাসের ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার গল্প পড়েছি ও শুনেছি। যখন সাঁতারু হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করি তখন আরেক কিংবদন্তী সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খানের ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার বিষয়টি জেনেছি।

আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করব। সেটা অবশেষে করতে পেরেছি। একজন মানুষ যখন দীর্ঘদিন থেকে একটি স্বপ্ন লালন করে, সেটা বাস্তবায়ন হলে অনুভূতির ভাষা থাকে না। তিনি আরও বলেন ‘প্রচন্ড ঠান্ডা পানিতে শরীর অনেকটা জমে যাবার উপক্রম হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ১২ ঘন্টা ১০ মিনিটে চ্যানেল অতিক্রম করতে সক্ষম হই।’

‘ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে  প্রচন্ড প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে অগ্রসর হতে হয়েছে। কিন্তু দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে। ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে হলে প্রতিকূল ঠান্ডা আবহাওয়ার মুখোমুখি হতে হয়। এজন্য বহু বছর যাবত নিজেকে তৈরি করেছি।’ সংবর্ধনা দেয়ায় তিনি তার শৈশবের অধ্যায়নরত বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

 জিনিয়াস প্রি-ক্যাডেট স্কুলের উপদেষ্টা সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাদের মিঠু বলেন ‘দীর্ঘ প্রায় ৩৭ বছর পরে বাংলাদেশের দুই সাতারু ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেবার যে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তাতে পাবনাবাসী গর্বিত। এই অর্জনের মধ্যে দিয়ে সাতারু মাহফিজুর রহমান সাগর তরুণদের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে তিনি বাংলাদেশের জন্য আরো নতুন নতুন বিজয় বয়ে আনবে।

গত ২৯ জুলাই মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে আটটায় (ইংল্যান্ড সময় মধ্যরাত আড়াইটা) ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে নামেন দুই সাহসী বাংলাদেশি সাঁতারু—মাহফিজুর রহমান সাগর ও নাজমুল হক হিমেল। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে বিভক্ত করেছে আটলান্টিক মহাসাগরের ইংলিশ চ্যানেল। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬২ কিলোমিটার এবং এর প্রস্থ অবস্থানভেদে সর্বোচ্চ ২৪০ কিলোমিটার থেকে সর্বনিম্ন ৩৪ কিলোমিটার।

বিখ্যাত এই চ্যানেল অতিক্রম করা প্রথম এশীয় ও বাঙালি ব্রজেন দাস। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মোট ছয়বার চ্যানেলটি অতিক্রম করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন আবদুল মালেক। ‎স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম সাঁতারু হিসেবে ১৯৮৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি  মোশাররফ হোসেন।

 

আয়শা/১৬ আগস্ট ২০২৫/রাত ৮:৫০

▎সর্বশেষ

ad