মিয়ানমারে ৪ বছরের জরুরি অবস্থার অবসান, নির্বাচনের প্রস্তুতি

Ayesha Siddika | আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫ - ০৫:২৯:৪৬ পিএম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামরিক জান্তা সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর জারি হওয়া টানা জরুরি অবস্থার অবসান ঘটল।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ সংক্রান্ত একটি লিখিত আদেশ জারি করেছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।

পরে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের উদ্দেশে এক অডিও বার্তায় জান্তা মুখপাত্র জৌ মিন তুন জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার স্বার্থে সরকার পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলো।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। ইতোমধ্যে প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচন বর্জনের কথা জানিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও চলমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগের সমালোচনা করছে। জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে জানান, বহু-দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনের আয়োজন করা হচ্ছে। এই লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হচ্ছে। 

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সে সময় নোবেলজয়ী অং সান সুচি’র সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা নেয় তারা। এরপর থেকেই দেশটিতে চলছে গৃহযুদ্ধ। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

জরুরি অবস্থা জারির সময় দেশটির সর্বময় কর্তৃত্ব সামরিক বাহিনী প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনি একইসঙ্গে আইন প্রণয়ন, নির্বাহী ও বিচারবিভাগীয় ক্ষমতার অধিকারী হন। তবে সম্প্রতি তিনি সংঘাত নিরসনের পন্থা হিসেবে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি বারবার সামনে নিয়ে আসছেন।

সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—অভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাচ্যুত নেতা ও অন্যান্য বিরোধী নেতা-কর্মীরা আসন্ন নির্বাচন বানচালের পরিকল্পনা করছে। গত মাসে জাতিসংঘের এক বিশেষজ্ঞ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসনমূলক’ ও সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চক্রান্তের অংশ হিসেবে আখ্যা দেন।

মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে; আর সেই নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছিল— অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দখলের পর সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।

আয়শা/৩১ জুলাই ২০২৫,/বিকাল ৫:২৮

▎সর্বশেষ

ad