ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন চিলমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ : অব্যহতি দুই বিক্ষোভকারীকে কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনী’র মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক ১ ঢাবি’র জহুরুল হক হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন পুনর্গঠন : সদস্য সচিব নিয়ে বিতর্ক রাস্তায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের ভিডিও ভাইরাল ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি দর্শন বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ঢাবি দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৪তম পুনর্মিলনী ও কমিটি গঠিত হয়েছে সাইদ সোহরাব ও শেখ মো. নাসিম এর নেতৃত্বে ঢাবি মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’

উন্নয়নশীল হলে রপ্তানিতে চাপ বাড়বে, প্রস্তুত নয় সিমেন্টশিল্প

Anima Rakhi | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ - ১১:৩৬:০১ এএম

ডেস্ক নিউজ : এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় বাংলাদেশের উত্তরণ নিয়ে আশাবাদের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে নানা শঙ্কাও। প্রভাব পড়বে সিমেন্ট খাতেও। গণমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলেন ক্রাউন সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোল্লা মোহাম্মদ মজনু। 

এলডিসি উত্তরণে সিমেন্টশিল্পে কতটা প্রভাব পড়বে?

সিমেন্টশিল্প সরাসরি রপ্তানিনির্ভর নয়। তবে আমাদের বড় ক্রেতা গার্মেন্টস খাত। তারা যখন এক্সপানশন করে, নতুন ভবন তৈরি করে, তখনই আমাদের পণ্য বেশি যায়। এলডিসি-পরবর্তী সময়ে গার্মেন্টস খাতের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। শুল্ক সুবিধা হারানো, কঠোর বাজার প্রতিযোগিতা ও ভর্তুকি হ্রাসের কারণে যদি গার্মেন্টস খাত উৎপাদন বা সম্প্রসারণে পিছিয়ে পড়ে, তাহলে সিমেন্ট খাতও সেই প্রভাব থেকে রেহাই পাবে না। আমরা গার্মেন্টসের ডায়িং ইন্ডাস্ট্রিতেও নিয়মিত পণ্য দিই। ওরা যদি নতুন প্রকল্প না নেয়, তাহলে আমাদের ব্যবসাও সংকুচিত হবে।

রপ্তানিতে কী ধরনের বাধা অনুভব করেন?

ক্রাউন সিমেন্টের মাধ্যমেই ২০০৩ সালে বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট রপ্তানির সূত্রপাত। একমাত্র আমাদেরই রয়েছে পরপর দুবার স্বর্ণপদকসহ মোট তিনবার জাতীয় রপ্তানি পদক অর্জনের গৌরব। বর্তমানে মোট সিমেন্ট রপ্তানির ৪৬ শতাংশ ক্রাউন সিমেন্টের দখলে। তবু কাঙ্ক্ষিত সহায়তা এখনো মেলে না। রপ্তানির ক্ষেত্রে আগাম শুল্ক ফেরত পাওয়াটা এখনো অত্যন্ত জটিল। এতে আমাদের পুঁজি আটকে থাকে। এলডিসি অবস্থায় যেটা ছিল, আমরা চাই উন্নয়নশীল হলেও যেন অন্তত এই অংশে সহায়তা অব্যাহত থাকে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সিমেন্ট রপ্তানির জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করা প্রয়োজন। ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান- সবখানেই আমাদের পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাধা হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, সীমান্ত জট এবং আন্তর্দেশীয় সমঝোতার অভাব।

জ্বালানিসংকট ও উচ্চ সুদ কতটা বাধা?

এলডিসি-পরবর্তী সময়ে রপ্তানির প্রতিযোগিতা বাড়বে, তাই উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কিন্তু দেশে গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি ও ঋণের উচ্চ সুদ হার সেই প্রতিযোগিতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা গত ১৬ বছরে ১০ শতাংশ সময়ও গ্যাস পাইনি। কয়লা ব্যবহার করতে হয়, যার খরচ বেশি, আবার পরিবেশদূষণও হয়। অন্যদিকে ১২-১৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে কেউ শিল্প চালাতে পারবে না। বিদেশে শিল্প-কারখানা ৪-৫ শতাংশ সুদে ঋণ পায়, ফলে তাদের উৎপাদন ব্যয় অনেক কম।

রপ্তানিতে বন্দরের সীমাবদ্ধতা কেমন?

সীমান্তে ট্রাক আটকে থাকা, স্থলবন্দরে ধীরগতির কার্যক্রম, পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রতা- এসবই সিমেন্ট রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক। ভারতের অংশে অবকাঠামো যেভাবে উন্নত হয়েছে, আমাদের এখানে তার ধারেকাছেও যাওয়া হয়নি। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকি, অথচ রপ্তানির জন্য কোনো আলাদা সহায়তা মেলে না।

স্থানীয় বাজারে সিমেন্টের চাহিদা কেমন?

২০০০ সালে মাথাপিছু সিমেন্ট ব্যবহার ছিল ৪৫ কেজি। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১০ থেকে ২১৫ কেজিতে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী এটি এখনো খুবই কম। চীনে এই হার এক হাজার ৭০০ কেজি, ভারতে ৪৫০ কেজি। আমাদের জনসংখ্যা ও গৃহায়ণের হার বিবেচনায় ভবিষ্যতে এই চাহিদা ৮০০ কেজি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন যদি কাঁচামাল আমদানি, উৎপাদন সক্ষমতা ও সরবরাহ ঠিক না থাকে, তাহলে বড় সংকট তৈরি হবে।

আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

সিমেন্টশিল্পের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিশাল। আমরা শিল্পের আঁতুড়ঘরেই আছি। এই জনবহুল দেশে শিল্প ও প্রযুক্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এসব প্রকল্প শুধু ব্যবসার জন্য নয়, কর্মসংস্থান ও সিএসআরের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখার জন্যও। আমরা থাকি বা না থাকি, এই শিল্প থাকবে। এলডিসি উত্তরণ মানেই শুধু সুবিধা হারানো নয়, বরং সেটি সামাল দেওয়ার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। রপ্তানি টিকিয়ে রাখতে হলে এখনই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সহজ শর্তে ঋণ, জ্বালানির নিশ্চয়তা এবং স্থলবন্দর উন্নয়নে মনোযোগ দিতে হবে। তা না হলে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় আমরা পিছিয়ে পড়ব।

সৌজন্যে – কালের কণ্ঠ।

কিউটিভি/অনিমা/১৬ জুলাই ২০২৫,/সকাল ১১:৩৫

▎সর্বশেষ

ad