
খোরশেদ আলম বাবুল শরীয়তপুর প্রতিনিধি : আমাদের উপর আইন ১০০ শতাংশ প্রয়োগ করা হয়। তাই আইন মেনে শরীয়তপুরে ইট ভাটা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ ইট ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টাকা খরচ করে জেল জরিমানায় পড়তে চাই না। আক্ষেপের সাথে এসব কথা বলেছেন শরীয়তপুর জেলা ইট ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল খান।
তিনি আরো বলেন, ইট উৎপাদনের সাথে ইট বিক্রিও সরাসরি জড়িত। কুষ্টিয়া, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ইট পোড়াতে কাঠের ব্যবহার হয়। আমাদের জেলায় কয়লায় ইট পোড়াতে গিয়ে খরচ অনেকগুন বেড়ে যায়। তাছাড়া আইন মেনে ইট তৈরীতে মাটির সংকট। এক সময় ৬২টি ইট ভাটায় ইট তৈরী করে জেলায় ইটের চাহিদা পূরণ হতো। এখন ইটের চাহিদা দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও ইট উৎপাদনকারীদের বেশীরভাগ ভাটা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। জেলায় অবস্থিত ৬২টি ইট ভাটার মধ্যে এই বছর ৩২টি চালু আছে বলে তিনি দাবী করেছেন।
ইট বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইলে ইট মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, আমাদের উৎপাদিত প্রতি হাজার ১ নম্বর ইট ১১ হাজার টাকার কমে বিক্রি করা সম্ভব না। অথচ কুষ্টিয়া মেহেরপুর থেকে আসা কাঠে পোড়ানো ইট বিক্রি হয় সারে ৯ হাজার টাকায়। তাই প্রতিযোগিতার বাজারে আমাদের উৎপাদিত ইট কম বিক্রি হয়। এই কারণে গত বছর ১০ লাখ ইট কাটার পরে আমার একটি ভাটা বন্ধ করে দেই। লোকশান গুনে গুনে আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।
ইট উৎপাদনকারীদের উপর এই পর্যন্ত কি ধরণের আইনি চাপ এসেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইট উৎপাদনের লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নবায়ন করা হয় না। লাইসেন্স বিহীন ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে মালিকদের জরিমানা করে। আইনে আছে ৫০ হাজার থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে। টাকা বিনিয়োগ করে ইট উৎপাদন করি। সেই ইট বিক্রি করতে পারিনা। তার পরেও যদি জরিমানা দিতে হয়। সেই ভয়ে আমি ৫টির মধ্যে ৩টি ভাটা বন্ধ করে দিয়েছি। বাহির জেলা থেকে ইট আমদানী বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা যেয়েও কোন সুফল পাইনি। ভাবছি এই ব্যবসা বন্ধ করে দিব।
মেহেরপুর থেকে ইট নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মিলন জানায়, তিনি ১১ হাজার টাকার মধ্যে ক্রেতার বাড়িতে ইট পৌঁছে দিতে পারেন। কাঠে পোড়া ইট আরো কমেও দিতে পারেন। এতে ক্রেতাও খুশি। আমাদেরও ব্যবসা ভালো হয়। শরীয়তপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রাসেল নোমান বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী জেলার ৯০ শতাংশ ইট ভাটা অবৈধ। তাই তাদের ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব না। অবৈধ ইট ভাটার তালিকা জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ইট ভাটায় আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
কিউটিভি/আয়শা/০৬ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৪:৪২