ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে উপকৃত হবেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক- ভিসি ড.আমানুল্লাহ ফেরদৌস বাজে ব্যাটিংয়ে ফাইনাল মিস বাংলাদেশের জনস হপকিন্সের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  মজিদা কলেজে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তোলপাড় কুড়িগ্রাম খারুয়ার পাড়ে ভাঙ্গনের শব্দ থেমে যাক — বদরুদ্দীন উমর : শিরদাঁড়া বাঁকা করে বাঁকা হয়নি যার কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক ভারতীয় নাগরিক, এনআইডি বাতিলে হাইকোর্টের রুল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা : এইচআর হেডসহ আহত ১৫

ঢাকায় পানি সংকট

uploader3 | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ - ১২:৫৫:৪০ পিএম

ডেস্ক নিউজ : প্রায়ই ঢাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এসব আগুন নেভাতে পানির সংকটে নাকাল হতে হয়। পানির স্বল্পতায় জীবন ও সম্পদের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। ঢাকার প্রাকৃতিক পানির উৎস পুকুর, খাল ও জলাশয় ভরাট করে ফেলায় এখন ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কোনো সংস্থার আইনে সুনির্দিষ্টভাবে ফায়ার হাইড্রেন্টের বিষয়ে কিছু বলা নেই। ফলে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপনের দায় সবাই এড়িয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগুন নেভাতে প্রয়োজনের আলোকে ঢাকায় পুকুর, ডোবা ও জলাশয় সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ফায়ার হাইড্রেন্ট বা অগ্নিনির্বাপণে পানির উৎস তৈরি করতে হবে। এটা করা ঢাকা ওয়াসার পক্ষে সহজ। কেননা, তাদের হাতে পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব রয়েছে। তবে এখানে কোনো সংস্কার বা অর্থায়নের প্রয়োজন হলে সে ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি কোন সংস্থা এ কাজ করবে সেই দায়িত্বও নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বি.আই.পি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, অগ্নিনির্বাপণে ঢাকায় পানির সবচেয়ে ভালো উৎস হতে পারে পুকুর ও জলাশয় সৃষ্টি করে। এটা দীর্ঘমেয়াদি ব্যাপার। এজন্য পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার হাতে যেহেতু পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব, সে কারণে এটা ঢাকায় ওয়াসা করলে বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। এজন্য সরকারকে আন্তঃসংস্থার সঙ্গে সভা করে সিদ্ধান্ত দিতে হবে। ঢাকা ওয়াসা ফায়ার হাইড্রেন্ট করলেও এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে দুর্যোগ কমিটিকে তৎপর থাকতে হবে। কোনো রকম ভুল-ব্যবস্থাপনা হলে সরকারের ব্যাপক পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে। কেননা, ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদনে প্রচুর খরচ হয়। ঢাকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মূল নেতৃত্বে থাকবে সিটি মেয়র এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে এ কাজ করতে হবে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে।

নগর বিশেষজ্ঞ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঢাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির উৎস সৃষ্টি করতে হবে। এটার জন্য একদিকে স্থায়ী সমাধান হিসেবে পুকুর, ডোবা ও জলাশয় সৃষ্টি করতে হবে। অন্যদিকে প্রয়োজনের আলোকে ফায়ার হাইড্রেন্টও তৈরি করতে হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব ঢাকাবাসীকে খাবার ও দৈনিন্দন ব্যবহার্য পানি সরবরাহ করা। ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব, ঢাকা ওয়াসার না। এটা ফায়ার সার্ভিস করবে। কেননা, আগুন নেভাতে তাদের পানির দরকার হয়। তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসাকে যদি এটা করতে হয় তাহলে আমাদের টাকা দিতে হবে। ফায়ার সার্ভিস যদি আমাদের টাকা দেয় আমরা করে দেব। আর আমাদের পানি ব্যবহার করলেও টাকা দিতে হবে। কেননা, ঢাকা ওয়াসাকে পানি উৎপাদনে অনেক টাকা খরচ হয়। আর সেসব পানি বিক্রি করে সমস্যার সমাধান করতে হয়। ঢাকায় ফায়ার হাইড্রেন্ট করতে প্রকল্প নিলে তো হাজার হাজার কোটি টাকা লাগবে। এসব বিষয় সরকারকে ভেবে দেখতে হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এবং ঢাকা দুটি সিটি এলাকাজুড়ে চলমান আরবান রেজিলেন্স প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম দেশ রূপাান্তরকে বলেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট করার বিষয়ে সিটি করপোরেশন আইনে পরিষ্কার করে কিছু বলা নেই। ঢাকা ওয়াসার আইনেও নেই। ফায়ারের আইনেও সম্ভবত নেই। তবে ঢাকা ওয়াসা যেহেতু পানি সরবরাহ করে এ দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া যেতে পারে। তবে আইনগতভাবে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া না হলে এ কাজ বাস্তবায়ন হবে না। এজন্য সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ঢাকা) দিনমনি শর্মা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ফায়ার হাইড্রেন্ট করার দায়িত্ব ফায়ার সার্ভিসের না। এটা সিটি করপোরেশন করতে পারে। কেননা, সিটি করপোরেশনের মেয়র নগরের অভিভাবক।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বাসযোগ্যতার মানদ-ে ঢাকায় জলাভূমি ও ফাঁকা জায়গা থাকা দরকার ছিল ৩৫ শতাংশ। এখন মূল ঢাকায় জলাভূমি ও ফাঁকা জায়গা রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। অগ্নিনির্বাপণ, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ভরণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ দুটি উপাদানের বিষয় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। নগরায়ণের গোড়ার এই গলদে ছোট-বড় অগ্নিকান্ড ঘটলেই পানি এবং অগ্নিনির্বাপণের জায়গার সংকট দেখা যায়। দ্রুততম সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এতে করে আগুনে পুড়ছে জীবন ও সম্পদ।

কিউটিভি/অনিমা/১৩ এপ্রিল ২০২৩,/দুপুর ১২:৫৫

▎সর্বশেষ

ad