
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ট্রাম্প প্রশাসন গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বিতর্কিত পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যেখানে ২০ লাখ গাজার অধিবাসীকে তাদের ভূমি ছাড়ার জন্য জনপ্রতি ৫,০০০ ডলার নগদ অর্থসহ নানা সুবিধা প্রদান করা হবে। এই পরিকল্পনার আওতায়, গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডটি ১০ বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে এবং একে অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র ও প্রযুক্তি হাবে রূপান্তর করা হবে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, হোয়াইট হাউসে আলোচিত ৩৮ পৃষ্ঠার এমনই এক প্রস্তাবনা থেকে এই তথ্য ফাঁস হয়েছে। এই পরিকল্পনাটির নাম ‘গাজা রিকনস্টিটিউশন, ইকোনমিক অ্যাক্সেলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট’ (গ্রেট ট্রাস্ট)। এই প্রস্তাবনায় গাজার অধিবাসীদের স্বেচ্ছায় অন্য দেশে চলে যাওয়ার অথবা গাজার ভিতরে সুরক্ষিত অঞ্চলে স্থানান্তরিত হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। তাদের ভূমির ওপর অধিকার ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দেওয়া হবে একটি ডিজিটাল টোকেন, যার মাধ্যমে তারা নতুন জীবন শুরু করতে পারবেন।
এছাড়া, যারা তাদের ভূমি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে রাজি হবেন, তাদের প্রত্যেককে দেয়া হবে নগদ ৫,০০০ ডলার, চার বছরের ভাড়া ভর্তুকি ও এক বছরের খাদ্যসামগ্রী। এই টোকেনের মাধ্যমে তারা গাজায় নির্মাণাধীন আটটি ‘এআই-চালিত স্মার্ট সিটি’-এর একটিতে অ্যাপার্টমেন্ট পাবেন অথবা অন্যান্য দেশে জীবন শুরু করতে পারবেন।
এই প্রস্তাবনায় গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কাঁচ এবং ধাতুর সুউচ্চ ভবন, পার্ক, গলফ কোর্স, এবং বিশ্বমানের রিসোর্ট থাকবে। একে পর্যটন এবং প্রযুক্তি হাবে রূপান্তরিত করা হবে, যা গাজার অর্থনীতি পুনর্গঠন করবে।
এই পরিকল্পনা ইসরায়েলিদের প্রতিষ্ঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) কর্তৃক তৈরি করা হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর নামেও বিভিন্ন ‘মেগা-প্রকল্প’ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে।
এছাড়া, ট্রাম্প সম্প্রতি টনি ব্লেয়ার এর সাথে গাজা পুনর্গঠন বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করছেন। এটি একটি নতুন গাজার ভূরাজনৈতিক কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তথ্য সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ।
কুইকটিভি/অনিমা/০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫/দুপুর ২:৫২