ফ্রি ফায়ার-পাবজি অ্যাকাউন্ট বিক্রি করে উপার্জন কি জায়েজ?

Ayesha Siddika | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৫ - ০৮:০৯:১৩ পিএম

ডেস্ক নিউজ : জাহিদ বিন জোবায়ের

ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এমন গেম খেলতে অনুপ্রেরণা নেই বরং নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, কারণ এগুলো সময়ের অপচয়, হৃদয় কঠিন করা এবং কখনো কখনো হারাম উপার্জনের পথে নিয়ে যায়। প্রশ্ন এসেছে, যেহেতু খেলা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তবে কি এর অ্যাকাউন্ট বিক্রি করা বৈধ হবে?
ইসলামি শরীয়তের নীতি হলো, যে জিনিস নিজেই হারাম বা নিষিদ্ধ, তার ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম। তাই ‘ফ্রি ফায়ার’ ও ‘পাবজি’ ইত্যাদি বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা কোনোভাবেই বৈধ নয়। 
আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا ۚ أُو۟لَٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌۭ مُّهِينٌ অর্থ: মানুষের মধ্যে এমনও কেউ আছে, যারা অজ্ঞতাবশত আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করার জন্য অবান্তর কথাবার্তা ক্রয় করে এবং সেটাকে ঠাট্টা-বিদ্রূপে পরিণত করে। তাদের জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। (সুরা লুকমান, আয়াত ৬)

তাফসিরে ইবনে কাসির (৬/২৯৬) এ বলা হয়েছে, لهو الحديث (অবান্তর কথা) বলতে গানের সুর, বাজনা, মিথ্যা গল্প, এবং এমন সকল কাজ বোঝানো হয়েছে যা মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখে। আধুনিক কালের অনেক ভিডিও গেমও এই অন্তর্ভুক্ত, বিশেষত যেগুলো সহিংসতা, অশ্লীলতা বা সময় নষ্টে প্ররোচিত করে।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

إِنَّ اللَّهَ إِذَا حَرَّمَ شَيْئًا حَرَّمَ ثَمَنَهُ (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৫৭৯) অর্থ: নিশ্চয় আল্লাহ যখন কোনো জিনিস হারাম করেছেন, তখন তার মূল্যও হারাম করেছেন। এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়—যে জিনিস ব্যবহার করা নিষিদ্ধ, তার বিক্রয়ও বৈধ নয়।

ফিকহের কিতাবগুলোতেও (যেমন: বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৪৪, আল বাহরুর রায়েক ৫/২৭৯, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১১৬, আপ কে মাসায়েল ৮/৪১১-৪১২) এ নীতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।

যেহেতু ফ্রি ফায়ার খেলা নিজেই শরিয়তসম্মত নয় এবং এটি মানুষকে অনর্থক কাজে লিপ্ত করে, তাই এর অ্যাকাউন্ট বিক্রি করাও বৈধ হবে না। নিজের জন্য বৈধ আয়ের পথ বেছে নেওয়াই উত্তম। মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত, সময়, অর্থ ও মনোযোগ এমন কাজে ব্যয় করা যা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর।

আয়শা/১০ আগস্ট ২০২৫/সন্ধ্যা ৭:৫৫

▎সর্বশেষ

ad