ব্রেকিং নিউজ
আই হ্যাভ আ প্ল্যান : তারেক রহমান সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার : তারেক রহমান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের খবর কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে বিতর্কিতদের প্রশ্রয় : শংকিত জেলাবাসী গণতন্ত্রের জন্য চলা সংগ্রাম-লড়াই চালিয়ে যাব : মির্জা ফখরুল ঢাকায় এমপি প্রার্থী ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মমতাজ হোসেন লিপিকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে রৌমারীতে মশাল মিছিল আর্থিক অনিয়মে অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামঃ অভিযোগের ঝড় খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজে কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি

নবীজির অলৌকিক ঘটনাবলী

Ayesha Siddika | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ - ০৫:১৪:৩৭ পিএম

ডেস্ক নিউজ : মুফতি আবদুল্লাহ তামিম

নবীজির বুক চিরে অলৌকিক শক্তির প্রতিস্থাপন

সাক্কুস-সাদরি বা বক্ষ বিদারণ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর শৈশবে সংঘটিত অন্যতম প্রধান মুজিজা ও অলৌকিক ঘটনা। আল্লামা ইদরিস কান্ধলভি (রহ.)-এর বর্ণনামতে, রসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনে চারবার বক্ষ বিদারণের ঘটনা ঘটে। প্রথমবার চার, মতান্তরে পাঁচ বছর বয়সে, দ্বিতীয়বার ২০ বছর বয়সে, তৃতীয়বার নবুয়ত লাভের সময়, চতুর্থবার ইসরা বা ঊর্ধ্ব গমনের সময়। (সিরাতে মোস্তফা : ১/৭৫)

চন্দ্র দিখণ্ডিত করা

একবার হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিনায় উপস্থিত ছিলেন। অনেক কাফেরও সেখানে উপস্থিত ছিল। কাফেররা রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে কোনো অলৌকিক নিদর্শন দেখতে চাইল। হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আসমানের দিকে তাকাও। তারা আসমানে তাকিয়ে দেখল, চাঁদ দুই টুকরা হয়ে গেছে। মাঝখানে পাহাড়। সমস্ত কাফের ভালো করে দেখার পর পুনরায় চাঁদ এক হয়ে গেলো। কিন্তু হতভাগা কাফেররা এই চাক্ষুষ মুজেজাকেও অস্বীকার করে বসে।

এক নারী নবীজির নিকট তার এক যুবক ছেলেকে নিয়ে এসে বলল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমার ছেলে জন্ম থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত কথা বলেনি। হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, হে যুবক বলো আমি কে? সাথে সাথে সে বলে উঠল আপনি আল্লাহ তাআলার সত্য নবী। (বাইহাকি)

আঙুলের মাথা দিয়ে পানি বের হওয়া

হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় পানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। ফলে দেড় হাজার মানুষ খুব পেরেশানিতে ও কষ্টে ছিল। তখন হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এক মগ পানি নিয়ে আসা হলে তার মাঝে নবীজি নিজের হাত মুবারক রেখে দিলেন। তখন নবীজির আঙুল থেকে ঝরনার মতো পানি বের হতে শুরু করে। এরপর সবাই ওজু করেন। পান করেন। নিজেদের প্রয়োজন সেরে নিজ নিজ পাত্রে রেখেও দিলেন। কিন্তু সে পানি শেষ হলো না (বুখারি, তিরমিজি)

গাছ ও পাথরের সিজদা করাশাম দেশের রাস্তায় এক খ্রিস্টান পাদ্রি থাকত। যখন আবু তালেবের কাফেলা সেখানে পৌঁছল, তখন সেই পাদ্রি দেখল রাস্তার উভয় পাশের গাছ ও পাথর সিজদারত অবস্থায় আছে। সে যেহেতু তাওরাত ও ইঞ্জিলের আলেম ছিল, তাই সে জানত যে গাছ, পাথর নবী ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করে না। সে কাফেলার কাছে এলো। সবাইকে দেখল। আর হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামর হাত ধরে সে বলল, তিনি শেষ নবী।

নবীজিকে গাছ ও পাহাড়ের সালাম

হজরত আলী (রা.) বলেন, একদা আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মক্কার এক গলিতে যাচ্ছিলাম। আমি দেখলাম, যেই পাহাড় ও গাছ সামনে আসছে সেটা থেকেই শব্দ আসছে আসসালামু আলাইকা ইয়া রসুলাল্লাহ। (সিরাতে ইবনে হিশাম)

লিমা সাদিয়া (রা.)-এর উটনী ও তার ঘরে বরকত

হজরত হালিমা সাদিয়া (রা.) বলেন, আমি যখন আমার এলাকার নারীদের সাথে মদিনায় যাচ্ছিলাম দুধপানকারী সন্তানের জন্য, তখন আমার উটনীটা ছিল একেবারে দুর্বল ও ক্ষীণকায়। যেটা সবার পেছনে চলছিল। কিন্তু যখন হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলাম তখন উটনীটা সবল হয়ে গেল। সবার আগে দ্রুত গতিতে চলে আসল। তিনি আরো বলেন, 

আমার ঘরের বকরিগুলোতে দুধ খুব কম ছিল। একেবারে ছিল না বললেই চলে। কিন্তু যখন হুজুর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঘরে আসলেন তখন আমার বকরিগুলো দুধে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। এমন কি আমার প্রতিবেশীরা আমাকে বলতে লাগল, আমরাও তো একই জায়গায় বকরি চরাই। আমাদের বকরিগুলোতে তো এত দুধ আসে না। (সিরাতে মোস্তফা)

গাছের কালিমায়ে তাওহিদ পড়া

হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সফরে ছিলেন। এক গ্রাম্যলোক নবীজির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় যাচ্ছো? সে বলল বাড়িতে যাচ্ছি। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন, তোমার কি নেকির প্রয়োজন আছে? সে বলল, কী নেকি? নবীজি বললেন, কালিমা তাওহিদ বলো।

সে বলল, এই কালিমার সাক্ষী আর কে দেয়? তখন হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক গাছকে ডাক দিলেন। গাছ সাথে সাথে দৌড়ে নবীজির নিকট চলে এল। নবীজি ওই গাছকে বললেন, তুমি কালিমা বলো। সেই গাছ তিনবার কলিমা বলল। তখন ওই গ্রাম্যলোকটি বলল, আমি বাড়িতে গিয়ে সবাইকে নিয়ে আসব। আমরা সবাই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব। যদি সবাই না আসে তাহলে আমি একাই আপনার কাছে চলে আসব। (ইবনে সাদ)

এমন অসংখ্য মুজেজা নবী কারিম সল্লাল্লাহু থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি যে রহমাতুলিল আলামিন এটা পৃথিবীর বিস্ময়কর মুজেজার মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। উল্লিখিত মুজেজাগুলো ছাড়াও নবীজির মিরাজ ছিলো সবচেয়ে বড় মুজেজা। তিনি জান্নাত ও জাহান্নাম পরিভ্রমণ করে দেখেছেন। জান্নাতে মানুষের সুখ আর জাহান্নামে মানুষের কষ্ট নিজের চোখে দেখেছেন। 

 
এছাড়াও বিভিন্ন যুদ্ধে নবীজির অসংখ্য মুজেজা প্রকাশিত হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীজিকে বিশ্ববাসীর জন্য এক বিশেষ রহমত ও বিস্ময় হিসেবেই প্রেরণ করেছিলেন। এজন্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরা আলে ইমরানের ৩১ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেন,
  قُلۡ اِنۡ كُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡكُمُ اللّٰهُ وَ یَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوۡبَكُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তবে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহসকল ক্ষমা করবেন, বস্তুতঃ আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা আলে ইমরান-৩১)

অন্য আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেন,وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنٰكَ اِلَّا رَحۡمَۃً لِّلۡعٰلَمِیۡنَ আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি। (সুরা আম্বিয়া ১০৭) আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে নবীজির জীবনাদর্শমত চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। 

 

 

কিউটিভি/আয়শা/২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৫:১৪

▎সর্বশেষ

ad