গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সার্ভেয়ার ইউপি সদস্য, দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

Ayesha Siddika | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ - ০৪:৩১:২৭ পিএম

শান্তা ইসলাম নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার পূর্বধলায় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, ইউপি সদস্য ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর দুই শিক্ষকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক গৃহবধূ মামলা করেছেন। বুধবার নেত্রকোনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলার নৈগাঁও গ্রামের গৃহবধূ মোছা. হোরে মদিনা বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. হাদিউল ইসলামকে (৪৫)। অন্য আসামিরা হলেন- বিশকাকুনী ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নৈগাঁও গ্রামের মো. সেলিম সরকার (৫০), একই গ্রামের আবদুর রাশিদ (৬০), নৈগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ ওরফে তৌহিদ মিয়া (৫৮) ও নৈগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ওরফে জজ মিয়া (৫২)।

শ্লীলতাহানি ও বসতবাড়ি দখল এবং মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি বিজ্ঞ নেত্রকোনা আমলি আদালতের বিচারিক আশরাফুন্নাহার আমলে নিয়ে জুডিসিয়াল তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দেন। গৃহবধূর শ্লীলতাহানি ও বসতবাড়ি দখলের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী শহীদুল্লাহ।

বাদী মোছা. হোরে মদিনার অভিযোগ, নৈগাঁও গ্রামে তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজ দখলীয় ভূমিতে বসবাস করছিলেন। সত্ব দখলীয় বসতবাড়ি দখল করে উচ্ছেদ করার জন্য আবদুর রাশিদ ও তার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে নানা পায়তারা করছিল। গত ৮ ফেব্রুয়ারী বিকেলে গৃহবধূর দিনমজুর স্বামী মো. শাহীন মিয়া কাজে চলে গেলে সার্ভেয়ার মো. হাদিউল ইসলাম, ইউপি সদস্য মো. সেলিম সরকারকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে গৃহবধূ হোরে মদিনা বাড়িতে উপস্থিত হন। কাউকে কোন কিছু জিজ্ঞেস না করে ফিতা দিয়ে মাপতে শুরু করেন।

এক পর্যায়ে বাদীর বসতঘরের মাঝখানে বাঁশের খুঁটি স্থাপন করা হয়। এবিষয়ে বাদী জিজ্ঞেস করলে হাদিউল ইসলাম বলেন খুঁটির পশ্চিম পাশে সরকারি জায়গা। হাদিউল ইসলাম অন্যান্য আসামি খুঁটির বরাবর পশ্চিম পাশের জায়গার ঘর ভেঙে ফেলার জন্য বলেন। আসামিগন বসতঘরের বেড়া ভাঙার সময় বাদী ফেরাতে গেলে হাদিউল ইসলাম তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন এবং শরীরের কাপড় টেনে খুলে অর্ধ উলঙ্গ করে শ্লীলতাহানি ঘটান।

ঘরের পশ্চিম পাশে টিনের বেড়া ভাঙ্গা শুরু করলে ফেরাতে গেলে হামলাকারীরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শরীরের নানা স্থানে কিল, ঘুষি মেরে জখম করে। ঘরের বেড়া ভেঙে ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে হাদিউল ইসলাম সরকারি সার্ভেয়ার বলে পরিচয় দেন।

ভাঙ্গার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি এবং হাদিউল উচ্চবাচ্য করে জবাব দেন এবিষয়ে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় নেই। পরে এই ঘটনার বিষয় দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। পরে ওইদিন রাতেই তার ওপর হামলার নাটক সাজিয়ে ২৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে প্র্বূধলা থানায় মামলা করেন। মামলার বাদী এ বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত করে দাষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে উপজেলা সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম বলেন, মামলার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। এ নিয়ে তিনি আর কিছু বলেন নি। পূর্বধলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মফিজুল হক শিক্ষকদের বিষয়ে মামলার বিষেয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। তবে বিষয়টি খোঁজ দিয়ে দেখবেন বলেও জানান।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:২৪

▎সর্বশেষ

ad