ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রামের খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক তিন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু কুড়িগ্রামে পরপর ৬ ডিসির মধ্যে ৪ জনই নারী ডিসি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ গাজী মাজহারুল আনোয়ার : তুমি সুতোয় বেধেছ শাপলার ফুল নাকি তোমার মন ‘নবীন বরণ ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হলো ড্যাফোডিল পলিটেকনিকে যমুনায় ৮ দলের প্রতিনিধি, আশপাশ এলাকায় নেতাকর্মীরা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হলেন হুমায়ুন কবির  মেয়েকে ধর্ষণ, নরপিশাচ পিতার কারাদণ্ড কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায়

বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাবিত ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের উদ্দেশ্য কি?

Ayesha Siddika | আপডেট: ২৬ জানুয়ারী ২০২৪ - ০৫:৪৪:৩২ পিএম

ডেস্ক নিউজ : যার মাধ্যমে জাতিসংঘের প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অধীনে দারিদ্র্য নিরসন ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবিলা সম্ভব হবে। এই লক্ষ্যে ওই তহবিল থেকে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বল্পসুদে কিংবা নামমাত্র সুদে অর্থ সহায়তা দেয়া হবে।

নেপথ্যে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা

বিশ্বের উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দিতে এই ধরনের প্রস্তাব গত কয়েক বছর ধরে আলোচনায় উঠে আসে। তবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিশ্বব্যাংকের বর্তমান প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা গত বছরের জুনে তার দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকেই মূলত দ্রুত হয় এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের কার্যক্রম। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য এই তহবিল গঠনের প্রস্তাবকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অজয় বাঙ্গার জন্য একটি সাফল্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এই তহবিলের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহজ শর্তে আরও বেশি করে ঋণ সুবিধা দেয়ার কথা জানানো হয় প্রস্তাবনায়।

বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চীনের উত্থান এবং বেল্ট অ্যান্ড রোডসহ চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এ ধরনের উদ্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত এক দশক ধরেই নিজেদের সহায়তা ও ঋণদান কর্মসূচির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে আসছিল পশ্চিমা দেশগুলো নিয়ন্ত্রিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। তারই ধারাবাহিকতায় এই তহবিল গঠনের উদ্যোগ বলে জানায় বিশ্বব্যাংক।

 
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার লক্ষ্যগুলো অর্জনের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলা ও দারিদ্র্য নিরসনে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার বিষয়টিও বিশ্বব্যাংকের তহবিল গঠনের উদ্যোগের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
 
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক এবং এর অধীনস্থ আইএমএফের কার্যক্রম তদারককারী একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটির কাছে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ২৪ পাতার একটি প্রতিবেদনে ডেভেলপমেন্ট কমিটি তাদের শেয়ারহোল্ডারদের কাছে প্রয়োজনীয় তহবিল গঠনের পরিকল্পনার অনুমোদন চায়।
 
অবশ্য এই ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের উদ্যোগ, এর আগে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহজ শর্তে ঋণ দিতে বিশ্বব্যাংকের পূর্বের প্রস্তাবিত ৫০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের থেকে আলাদা। মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় সহজ শর্তে দেয়া চীনা ঋণের পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আকর্ষণ করতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে এই ৫০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল বিশ্বব্যাংক।
 

চীনকে ঠেকানোই এই ঋণ তহবিলের উদ্দেশ্য?

অনেক দিন ধরেই নিজেদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআইয়ের মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে আকর্ষণীয় শর্তে ঋণ দিয়ে আসছে চীন। যদিও পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর দাবি, এর মাধ্যমে মূলত এসব দেশকে ঋণের ফাঁদে ফেলে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করছে বেইজিং। তবে চীনের দেয়া ঋণ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সামনে আর্থিক সহায়তা লাভের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক কিংবা আইএমএফের পূর্বের একচেটিয়া প্রভুত্বের বিকল্পের সন্ধান দেয়। এ পরিস্থিতি ঋণদানের মাধ্যমে বিশ্বের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চীনা নীতির বিপরীতে পাল্টা কোনো আর্থিক কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ব্লক। মূলত এই প্রয়োজনীয়তার অংশ হিসেবেই দারিদ্র্য নিরসন কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন সংকট মোকাবিলার নাম করে বিশ্বব্যাংকের এই নতুন তহবিল গঠনের তোড়জোড় বলে মনে করা হচ্ছে।

অবশ্য এই বিষয়টি উঠে আসে বিশ্বব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট কমিটির উপস্থাপিত প্রতিবেদনেও। ১০০ বিলিয়ন ডলারের এই তহবিল গঠনের কারণ হিসেবে ‘ব্যতিক্রমী সময়ে দ্রুত পদক্ষেপ এবং নতুন উদ্যোগ’ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দারিদ্র্য নিরসনকে এই তহবিল গঠনের উদ্দেশ্য হিসেবে তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

তহবিলে উপকৃত হবে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো

এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্বের ঋণদাতা সংস্থাগুলোর ঋণ কাঠামোর আমূল সংস্কারের পাশাপাশি উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ঋণ দেয়ার হারও বাড়ানো প্রয়োজন, বিশেষ করে এক্ষেত্রে স্বল্প সুদহার কিংবা প্রায় বিনাসুদে ঋণদানের ব্যবস্থাপনাও প্রয়োজন। এর অংশ হিসেবেই প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাবনা উঠে আসে বিশ্বব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রস্তাবনায়।

‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট গ্রুপ’ বা আইইজি কমিটি হিসেবে পরিচিত এই ডেভেলপমেন্ট কমিটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন হবে ৩ হাজার বিলিয়ন ডলার। আর এ লক্ষ্য পূরণে বর্তমানে দেয়া আর্থিক ও ঋণ সহায়তাকে বছরে তিনগুণ বাড়াতে হবে ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে। উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বছরে এই ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জনেরও প্রত্যাশা করছে বিশ্বব্যাংক।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/২৬ জানুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:৪২

▎সর্বশেষ

ad