১৫ বছরে পনেরোবার কোচ বদল করেছে চেলসি

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ - ১১:৫৯:৫০ পিএম

স্পোর্টস ডেস্ক : গত বছর জুনে চেলসির মালিকানা কেনেন মার্কিন ধনকুবের টড বোহলি। এর মাত্র তিন মাসের মাথায় সেপ্টেম্বরে তিনি ছাঁটাই করেন আগের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা এনে দেয়া কোচ টমাস টুখেলকে। জার্মান এই কোচও সরিয়ে তিনি কোচের দায়িত্ব তুলে দেন প্রিমিয়ার লিগের সাড়াজাগানো দল ব্রাইটনের কোচ গ্রাহাম পটারকে। কোচ হিসেবে খুব বেশি অভিজ্ঞতা না থাকলেও পটারের অধীন গত দেড় মৌসুমে দারুণ খেলেছে ব্রাইটন। চেলসিতে আসার পর তাকে নিয়ে তাই প্রত্যাশার পারদ চড়েছে দ্রুতই।

তবে কল্পনার জগৎ থেকে বাস্তবতার শক্ত মাটিতে পড়তে সময় লাগেনি কারোরই। দলবদলে রেকর্ড পরিমাণ খরচ করেও পয়েন্ট টেবিলে দলের অবস্থা তথৈবচ। তাই পটারের চাকরি যাওয়া যে সময়ের ব্যাপার তা জানাই ছিল।

অবশেষে সেটাই হয়েছে। এপ্রিলের দ্বিতীয় দিনেই কোচের পদ হারিয়েছেন পটার। শনিবার (১ এপ্রিল) অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের পরদিনই চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয় পটারকে। ২০০৩ সালে চেলসির মালিকানা কিনে নেন রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ। এরপরই ক্লাবটির উত্থান শুরু হয়। ক্লাবকে লাভের হাতিয়ার হিসেবে কখনো বিবেচনা করেননি এই রুশ। বরং এটি ছিল তার আভিজাত্যের প্রতীক। শিরোপাকে ধ্যানজ্ঞান করে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের দলে টানেন তিনি। আর সাফল্য-বুভুক্ষু হয়ে বদলেছেন একের পর এক কোচ। পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যায়, ২০০৭ সাল থেকে পরবর্তী ১৫ বছরে মোট পনেরোবার কোচ বদল করেছে চেলসি। এ তালিকায় আছেন হোসে মরিনহো, কার্লো আনচেলত্তি, রাফায়েল বেনিতেজ, লুইস ফেলিপ স্কলারিদের মতো কিংবদন্তি কোচও।

 আব্রামোভিচ ক্লাব কিনে ২০০৪ সালে কোচের দায়িত্বে বসান পোর্তোকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়ে স্পেশাল ওয়ান হিসেবে খ্যাতি পাওয়া হোসে মরিনহোকে। তিন মৌসুমে দুবার লিগ জিতিয়েও আব্রামোভিচের মন জিততে পারেননি এই পর্তুগিজ। তাই ২০০৭ সালে চেলসির চাকরি হারান তিনি। মরিনহো দিয়ে যে ধারার শুরু, তার সবশেষ শিকার পটার। মাঝখানে একের পর এক কোচ ছাঁটাই হয়েছে ক্লাবটি থেকে। আব্রামোভিচের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পটার, গত ১১ মাসে দুজন কোচকে চাকরিচ্যুত করলেন বোহলি।

মরিনহোর বিদায়ের পর ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত কোনো কোচই এক মৌসুমের বেশি চেলসির ডাগআউটে টেকেননি। ২০০৭-০৮ পর্যন্ত আব্রাম গ্রান্ট, ২০০৮-০৯-এ ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতানো লুইস ফেলিপ স্কলারি টেকেন এক মৌসুম করে। দুই দফায় ২০০৯ ও ২০১৫-১৬ মৌসুমে দায়িত্ব পালন করেন ডাচ কোচ গাস হিদিঙ্ক।

রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তিও আছেন তালিকায়। ২০০৯-২০১১ পর্যন্ত চেলসির কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০১১ সালে তাকে চাকরিচ্যুত করে আন্দ্রে ভিলাস বোয়াসকে কোচের পদে বসানো হয়। কিন্তু দলের বাজে পারফরম্যান্সে টেকেননি তিনিও। ব্যাটনটা চলে যায় রবার্তো ডি মাত্তেওর হাতে। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে চেলসিকে তাদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা এনে দিয়েও চাকরি টেকাতে পারেননি তিনি। পরের মৌসুমের শুরুতেই রাফায়েল বেনিতেজকে কোচ হিসেবে আনা হয়।
চেলসিতে দারুণ সফল হোসে মরিনহো দ্বিতীয় দফায় ফের কোচের পদে বসেন ২০১৩ সালে। একের পর এক কোচের ব্যর্থতায় আব্রামোভিচ ফের স্পেশাল ওয়ানের শরণাপন্ন হন। এই দফায়ও লিগ শিরোপা জেতান তিনি। তবে ২০১৫ সালে বিদায় নিতে হয় ফের। এরপর একে একে আন্তনিও কন্তে, মাউরিজিও সারি, ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডরা চেলসির কোচের হটসিটে বসেছেন। আব্রামোভিচের আমলে শেষ কোচ বদল হয় ২০২১ সালে।

ল্যাম্পার্ডকে সরিয়ে কোচের পদে বসানো হয় টমাস টুখেলকে। আস্থার প্রতিদান দিয়ে চেলসিকে তাদের দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতান। কিন্তু বোহলির আস্থা অর্জন করার জন্য তা হয়তো পর্যাপ্ত নয়। পটারের সংক্ষিপ্ত সময়কালের শেষে এবার হটসিটে নতুন মুখের অপেক্ষায় সমর্থকরা। যে আসবে, সে কতদিন টিকবে সেটাও দেখার বিষয়।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৩ এপ্রিল ২০২৩,/রাত ১১:৫০

▎সর্বশেষ

ad