
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছরই প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোয় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। চলমান সংকট কাটাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে নানাবিধ সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তান। একদিকে ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণে মুদ্রার মূল্যমানের রেকর্ড পতন, জ্বালানি তেলের আকাশছোঁয়া দাম আর নিত্যপণ্যের অস্থির বাজারে দিশেহারা সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ইস্যুতে দিনদিন আরো উত্তপ্ত হচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতির মাঠ। দেশটিতে চলমান এই সংকটের কয়েকটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশ্লেষকরা। পাকিস্তানের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি কৃষিপণ্য আর প্রবাসী আয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধান এই দুই খাতের বাইরে পরির্বতনশীল পৃথিবীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের অর্থনীতিকে বহুমুখী করতে পারেনি দেশটি।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন লকডাউনসহ নানা নিষেধাজ্ঞা আর এরপর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পরও জিডিপির একটা বড় অংশই সেনাবাহিনীর পেছনে খরচ করেছে পাকিস্তান। ২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছরই প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়েছে দেশটি, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। এছাড়া ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যাও ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলেছে পাকিস্তানকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি গত জানুয়ারিতে ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশটির প্রশাসন এখন অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের দূতাবাসের সম্পত্তি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
একদিকে যখন অর্থনীতির চাকা সচল করতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তান সরকার। ঠিক তখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নিয়ে উত্তপ্ত দেশটির রাজনীতির মাঠ। গত বছরের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের পরাজয়ের পর থেকেই চলছে উত্তেজনা। এছাড়া নিয়মিত বিরতিতে ঘটছে তালেবানের সন্ত্রাসী হামলাও। সব মিলিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও।
পাকিস্তানে বিভিন্ন পর্যায়ের চলমান সংকট কাটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে মত বিশ্লেষকদের। একইসঙ্গে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রেও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা মেনে চলার আহ্বান অর্থনীতিবিদদের।
কিউটিভি/আয়শা/০১ এপ্রিল ২০২৩,/রাত ১১:১৮