আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সাভারে জেঁকে বসেছে শীত। এঅঞ্চলের কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি। একারণেই শীতের প্রকোপ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা বেশী। ফলে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর থেকে একটু উষ্ণতা পেতে বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে স্বস্তি নিচ্ছেন বয়স্করা। আগুন পোহানো থেকে বাদ পড়েনি যুবকরা। তবে বেশী বেগ পেতে হচ্ছে পোশাক শ্রমিকদের। পোশাক শ্রমিক এলিজা বেগম বলেন, এই শীতের মধ্যে ভোর ৫টার সময় ঘুম থেকে উঠে রান্নাবান্না সেরে তারপরে অফিসে যেতে হয়। একটু দেরী হলে হাজিরা বোনাস থেকে বঞ্চিত হওয়া লাগে। খুব শীতে কাবু হয়ে যাই ।

আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছেন শিশুসহ বৃদ্ধরা। এখান থেকে ছফের আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, শীতের জন্য আর বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। আমি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। শুধু শীত হলে তবুও সহ্য করা যায়। কিন্তু শীতের সাথে মৃদু ঠান্ডা বাতাস আমাকে কোনঠাসা করে ফেলেছে। পর্যাপ্ত শীতের কাপড় পড়েও আর রাস্তায় টিকতে পারছি না। তাই আগুন জ্বালানো দেখে রিকশা সাইড করে আগুনের পাশে এসে দাঁড়ালাম।
আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিতে ঝুঁকিও রয়েছে বেশ। তার পরেও শীত যেন বাধ্য করছে আগুনের কাছে যেতে। সরোয়ার হোসেন নামের এক সচেতন ব্যাক্তি বলেন, আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিতে শরীরে আগুন ধরার ঝুঁকি থাকে। শীত সহ্য না হলে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। আগুনের তাপ নেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, যতদূর সম্ভব আগুন থেকে দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে। অত্যন্ত সাবধানতার সাথে আগুনের কাছে যাওয়া উচিৎ। সরাসরি আগুনের তাপ এড়িয়ে চলাই উত্তম বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে শীতের কাপড়ের বাজারে গরম কাপড় কেনা হিরিক পড়েছে। টানা ৬ দিনের শীতে বেড়েছে বিক্রি। ফুটপাতের কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে অনেক। বগাবাড়ির ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রি করেন আসলাম। তিনি বলেন, প্রতিবারই এখানে গরম কাপড় বিক্রি করি। আমি কাপড় অনেক মজুদ রেখেছিলাম। কিন্তু আগেই সব শেষ হয়ে গেছে। এখন শীত ও চাহিদা অনুযায়ী কাপড় সরবরাহ করতে পারছি না। গরম কাপড় কিনতে আসা মাহী নামের এক ক্রেতা বলেন, শীতের ওপর নির্ভর করে একটু পাতলা জ্যাকেট কিনেছিলাম। কিন্তু সেই জ্যাকেট দিয়ে আর শীত নিবারন হচ্ছে না। তাই আরেকটু মোটা কাপড় কিনতে আসলাম। কিন্তু শীত অনুযায়ী মোটা কাপড় পাচ্ছি না।
প্রচন্ড শীতে বাড়তে পারে শীতজনিত রোগের প্রকোপ। যে কারনে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানালেন সাভার উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা। তিনি বলেন, শীতকালে শীতজনিত রোগ বাড়ে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা এসব রোগে আক্রান্ত হন। শিশুরা ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বর, সর্দি নিউমোনিয়া রোগের মত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শিশুদের অবশ্যই বাড়তি যত্ন নিতে হবে। সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং নিজেদেরও থাকতে হবে। এছাড়া বয়স্করা শীতে আমাশয়, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তারা আগুন পোহাতেও পছন্দ করেন। সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
কিউটিভি/আয়শা/০৮ জানুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৪:০৮