
দুই পক্ষই আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়নের মধ্যে গাজীরচট চাড়াল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।অভিযোগে আলি হোসেন বলেন, আমি একজন ঠিকাদার ব্যবসায়ী বিবাদী সোহাগ মুন্সী পিতা- হরমুজ মুন্সী দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিয়ত চাঁদার দাবীতে আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখায়। গত রোববার বিকেলে আমার কর্মস্থলে একটি দোকানের পাশে আমার মোটরসাইকেল রেখে কর্মস্থলে গেলে তারা আমার মোটরসাইকেলটি ধারালো ছুরি দিয়ে সিট কেটে বিনষ্ট ও ভাঙচুর করে। আমি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং তাদের হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এছাড়াও আলী হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, সোহাগ আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। দেইনাই দেইখা আমার গাড়ি ভাঙচুর করছে এবং আমার বাড়িতে যাইয়া ভাঙচুর করছে। এর আগে সে আমার কাছে থাইকা কমবেশি বহুবার টাকা নিছে তার ভাইগ্না আনোয়াররে দিয়া। এখন এলাকায় কাজ করতে হইলে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হোইবো। যদি না দেই তাহলে কাজ করতে পারুম না। আমি তো বছরে ১ লাখ টাকা কামাই না কেমনে দিমু, দিতে অস্বীকার করছি দেইখা রোববার সন্ধ্যায় আমার কাজের সাইটে, হুমায়ূনের দোকানের সামনে রাখা ১লক্ষ ৩৫ হাজার দামের মোটরসাইকেল সোহাগ, রিয়াজ, পারভেজ, দুলাল সহ ২০-২৫ জন নিয়া কোপাইয়া ভাইঙ্গা দিছে। মোটরসাইকেল ভাঙছে দেইখা থানায় অভিযোগ করতে গেছি, এই কথা শুইনা আমার বাড়িতে যাইয়া পরে আবার হামলা করছে ভাঙচুর করছে। ঐসময় আমি থানায় ছিলাম’।পাল্টা অভিযোগে সোহাগ মুন্সী জানায়, রোববার রাত ৯:৩০ মিনিটে আশুলিয়ার চাড়ালপাড়া বাজারে আমার ইলেকট্রনিক্স শোরুম দোকানসহ বাজারের আরও তিনটা দোকান আলী ও হারুন ভান্ডারীর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন মানুষ ভাঙচুর করেছে। তহন আমার আব্বা হরমুজ মুন্সী (৫৫), সহ হারুন মুন্সী (৪০), ৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোফাজ্জল (২৯), রুবেল (৩০), রে মাইরা গুরুতর আহত করছে। কে বা কারা আলীর মোটরসাইকেলে দাগ অথবা সিট কাইটা দিছে, সেই সন্দেহে আমার নামে থানায় অভিযোগ করছে। অভিযোগের ভিত্তিতে থানা থাইক্যা সন্ধ্যায় পুলিশ তদন্ত করেও চইলা যায়। এরপর রাইত ৯ টার দিকে অতর্কিতভাবে আমাগো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, আলী ও কাজী হারুন ভান্ডারীর নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন হামলা চালায়। আলির সাথে আমার ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ে আগে থেকে একটু রেষারেষি ছিল। এখন মোটরসাইকেল ভাঙচুরের কথা কোইয়া থানায় অভিযোগ কইরা আমাগো উপর হামলা করছে’।আহত রুবেল(৩০) জানায়, আমার ভাইকে মারছে একথা শুনতে পেয়ে আমি বাজারে আসলে দেখি আলী ও কাজী হারুন ভান্ডারী(৫০) এর সাথে আরিফুল(৩২), কাদের(৩০), পারভেজ(২৭), সেলিম(৩০), টিক্কা মনির(২৫), আমির(৩০), ফাহাদ(১৯), রাব্বি(২০), সহ ২০/২৫ জন মার্কেটে সোহাগ ভাইয়ের দোকান, নওগাঁ জেলার নাজমুলের সেলুন ও হারুন মুন্সির মুদির দোকান ভাঙচুর করতেছে। এ সময় হারুন ভাইকে মারতে আসলে আমি তাকে জড়িয়ে ধরি তখন আমার মাথায় আঘাত লাগে।কাজী হারুন ভান্ডারীর বলেন, ‘আমি কারো গায়ে হাত দেই নাই । আলী হোসেন আমার ভাগ্নি জামাই লাগে ও একটা নিরীহ পোলা সাবকন্ট্রাকে কাজ করে। ওর কাছ থাইকা চাঁদা না পাইয়া ভয় ভীতি দেখাতে গাড়ি ভাঙচুর করছে সোহাগ। আলী আমারে এ কথা জানাইলে আমি বলেছি থানায় অভিযোগ করতে। আলী থানায় অভিযোগ করছে এই কথা শুইনা ওরা নিজেরাই নিজেগো দোকান ভাঙচুর কইরা আমাগো দোষ দিতেছে’।এ বিষয়ে এস আই মাসুদ বলেন, হামলার ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখতে পাই কিছু দোকানে ভাঙচুর হয়েছে। এবং কিছু ব্যক্তি আহত হওয়ার কথা শুনেছি। পরে জানতে পেরেছি ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ে আগে থেকে তাদের দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। আলী হোসেন রবিবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল ভাঙচুরের একটি অভিযোগ করেছে। এ বিষয়ে এসআই এমদাদ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন শুনেছি। আর রাতের ভাংচুরের ব্যাপারে সোহাগের পক্ষ থেকে এখনো লিখিত অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। লিখিত অভিযোগ আমার কাছে আসলে, অভিযোগের ভিত্তিতে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিউটিভি/অনিমা/২০ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:৫৮