স্পোর্টস ডেস্ক : ব্যাটাররা রান পাহার গড়ে ভিতটা পাকা করে দিয়েছিলেন। বাকি কাজ করলেন বোলাররা। দারুন টিম পারফর্মেন্সে চলতি বিপিএলে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অন্যদিকে ঢাকার মতো তারকাবহুল দলকে প্রথম ম্যাচে উড়িয়ে দেওয়া খুলনা পেল প্রথম হারের স্বাদ।মিরপুরে আজ সোমবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম জিতেছে ২৫ রানে। ঘটনাবহুল ম্যাচটিতে খুলনার ক্যারিবীয় ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার হেলমেটে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন। চট্টগ্রামের ১৯০ রানের জবাবে খুলনার ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৬৫ রানে।
রান তাড়ায় নেমে খুলনাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন আন্দ্রে ফ্লেচার এবং তানজিদ হাসান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দুজনের থেকেই ছক্কা হজম করেন পেসার শরীফুল। ওভারের শেষ বলে মিড অফে তানজিদ হাসানের সহজ ক্যাচ ছাড়েন সাব্বির রহমান। নতুন ওভারের পরের বলেই তিনি নাসুমের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে যান ৯ রানে। ১৮ রানে প্রথম উইকেটের পতন। মিরাজ এসেই ওভারের তৃতীয় বলে বোল্ড করে দেন রনি তালুকদারকে (৭)। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪৫ রান। রেজাউর রহমানের করা ৭ম ওভারের প্রথম বলেই হেলমেটের নিচে আঘাত পান দারুণ খেলতে থাকা ফ্লেচার। শেষ পর্যন্ত রিটায়ার্ড হার্ট হয়েই ১২ বলে ১৬* রানে তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়।
২৪ বলে ৫ চারে ৩০ রান করা মেহেদি হাসানকে উইকেটকিপার লুইসের দারুণ ক্যাচে পরিণত করেন শরীফুল। এরপর মুশফিকও ১৫ বলে ১১ রানে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরলে খুলনার শিবিরে হারের শংকা জেঁকে বসে। কনকাশন সাব হিসেবে আসা জিম্বাবুয়ের তারকা অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা চেষ্টা করেছিলেন। তার ১২ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২২ রানের ইনিংস থামে রেজাউরের বলে মিরাজের তালুবন্দি হয়ে। এরপর দ্রুত উইকেট পড়তে থাকে। বিধ্বংসী থিসারা পেরেরা ‘ডাক’ মারেন। ফরহাদ রেজা করেন ৪ বলে ৬। একপ্রান্ত আগলে লড়ে যাচ্ছিলেন ইয়াসির আলী। কিন্তু পরাজয় আটকাতে পারেননি। তার ২৬ বলে ২ চার ৩ ছক্কায় ৪০ রানের ইনিংসটি থামে শরীফুলের বলে নাঈমের তালুবন্দি হয়ে। শেষ ৬ বলে খুলনার প্রয়োজন হয় ৩৭ রানের। এই হিসাব শেষ উইকেটে আর মেলেনি। ২৫ রানে ম্যাচ জিতে নেয় চট্টগ্রাম। ২টি করে উইকেট নেন শরীফুল, মিরাজ এবং রাজা।
এর আগে মিরপুর শেরে বাংলায় টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১৯০ রান তোলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। কেনার লুইস এবং উইল জ্যাকসের ব্যাটে তাদের দারুণ শুরু হয়। সোহরাওয়ার্দী শুভর করা প্রথম বলেই ওয়াইড এবং বাউন্ডারিসহ আসে ৫ রান। পরের বলেই ছক্কা হাঁকান লুইস। দুই ছক্কা দুই চারে ওভার থেকে আসে ২৩ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে ছক্কা মারেন জ্যাকস। তৃতীয় বলে জ্যাকসকে (৭ বলে ১৭) ফিরিয়ে ২৯ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন রাব্বি। চতুর্থ ওভারে রাব্বির দ্বিতীয় শিকার হন ১৪ বলে ২টি করে চার ছক্কায় ২৫ রান করা লুইস। এরপর আফিফ আর সাব্বির ভালোই খেলছিলেন। দলীয় ৬৯ রানে সিঙ্গেলস নিতে গিয়ে একপ্রান্তে চলে যান আফিফ ও সাব্বির। রান-আউট হয়ে ফিরতে হয় ১৩ বলে ১৫ রান করা আফিফকে।
ধীরলয়ে খেলতে থাকা সাব্বির রহমানের সঙ্গী হন অধিনায়ক মেহেদি মিরাজ। প্রথম ১০ ওভারে রান আসে ৭৮। দুজনের জুটি বেশ জমে ওঠে। জুটিতে আসে ৩৮ বলে ৪৮ রান। ধীরগতির সাব্বিরের বিপরীতে হাত খুলে মেরেছেন মিরাজ। চট্টগ্রাম অধিনায়ক ২৩ বলে ৩০ রান করে নাভিন উল হকের শিকার হলে ভাঙে জুটি। এরপর সাব্বিরও ৩৩ বলে ৩২ রান করে ফরহাদ রেজার শিকার হন। দুজনেই একাধিকবার ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছেন। সাব্বিরের পুরো ইনিংসে একটিই বাউন্ডারি। এরপর বেনি হাওয়েলের ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকে চট্টগ্রামের স্কোর। শামীম ৬ বলে ৯ করে রান-আউট। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন ৫ বলে ১৫ রান করা নাঈম ইসলাম। আর বেনি হাওয়েল খেলেন ২০ বলে ৪ চার ১ ছক্কায় অপরাজিত ৩৪* রানের ইনিংস।
কিউটিভি/আয়শা/২৪শে জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ১০:০৩