
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপে মাথাগোঁজার কিছু জিনিস খোঁজার চেষ্টা করছিলেন মিরাদ মুকাদ। অথচ কয়েক মাস আগেও তার বাড়িটি ছিল বেশ সাজানো-গোছানো। আর এখন কোনো কিছুর চিহ্ন মাত্র নেই। মুকাদের মতো আরও অনেকেরই একই অবস্থা।
কেউ কেউ বাড়ি ফিরতে পারলেও, আবারও হামলার আশঙ্কায় অনেকে ফেরার ভরসা পাচ্ছেন না। যুদ্ধবিরতি কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এতে, খান ইউনিসে শরণার্থী শিবিরে বাড়ছে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এবং ইসরাইলের সংঘাত। টানা ১৫ মাস উপত্যকাটিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরাইলি বাহিনী। সম্প্রতি, গাজায় প্রাণহানি ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
যেখানে বলা হয়, গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। এছাড়া ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি গাজার অভ্যন্তরেই ১০ বারের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সংঘাত শুরুর আগে গাজা ছিল উৎপাদনে স্বনির্ভর। জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরাইলি সেনাদের অব্যাহত হামলায় ৯৬ শতাংশ কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে গাজাবাসী। যুদ্ধবিরতির পর বিভিন্ন দেশ সেখানে সহায়তা পাঠাচ্ছে। গেল তিন দিনে খাবার ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে দুই হাজারের বেশি ট্রাক প্রবেশ করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য খাতেরও বেহাল দশা। ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগে উপত্যকায় ৩৬টি হাসপাতাল চালু ছিল। বর্তমানে একটি হাসপাতালও পুরোপুরি কাজ করছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, স্বাস্থ্যখাত লক্ষ্য করে ৬শ’র বেশি হামলা চালানো হয়েছে। স্কুল, কলেজ, মসজিদসহ দুই-তৃতীয়াংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের প্রকাশিত স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, প্রায় ৬৮ শতাংশ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গাজায় ঘরবাড়ি পুনর্গঠনেই ২০৪০ সাল বা এখন থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। আর এই মুহূর্তে ১৮ লাখ মানুষের জরুরি আশ্রয় প্রয়োজন।
কিউটিভি/আয়শা/২০ জানুয়ারী ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:০২