ব্রেকিং নিউজ
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপিকে নিয়ে পাহাড়সম অভিযোগঃ ১০ মাসেও হয়নি কাউন্সিল সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : শিক্ষক,লেখক-সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিম্যান একজনের বিদায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়ালে উপকৃত হবেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক- ভিসি ড.আমানুল্লাহ ফেরদৌস বাজে ব্যাটিংয়ে ফাইনাল মিস বাংলাদেশের জনস হপকিন্সের সাথে কাজ করবে বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  মজিদা কলেজে ৪০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, তোলপাড় কুড়িগ্রাম খারুয়ার পাড়ে ভাঙ্গনের শব্দ থেমে যাক — বদরুদ্দীন উমর : শিরদাঁড়া বাঁকা করে বাঁকা হয়নি যার কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক ভারতীয় নাগরিক, এনআইডি বাতিলে হাইকোর্টের রুল আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা : এইচআর হেডসহ আহত ১৫

টিকটক বানাতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ-অশ্লীল ভিডিও ধারণ, আটক ৬

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৫ জানুয়ারী ২০২৫ - ০৪:৫৫:০১ পিএম

ডেস্ক নিউজ : রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ওই নারী শ্রমিককে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, ফরিদপুর শহরতলীর একটি জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন স্বামী পরিত্যক্ত ১৯ বছরের এক নারী। রয়েছে তার ৪ বছর বয়সী একটি সন্তান।

অর্থের লোভ দেখিয়ে টিকটক ভিডিও তৈরির কথা বলে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী গ্রামের আকরাম খাঁন ওই নারী শ্রমিককে ডেকে নেয়। পরে একটি বসতঘরে আটকে রেখে ওই নারীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে আকরাম হোসেন। এরপর আটকে রাখা ওই নারীকে পুনরায় ধর্ষণ করে আকরাম ও তার সহযোগী জুয়েল।

বিষয়টি স্থানীয়দের সন্দেহ হলে গত ৩ জানুয়ারি রাতে চুমুরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার উদ্দিন মোল্লার ছেলে সাইদুল মোল্লাসহ আরও ৪/৫ জন ওই নারী ও জুয়েলকে দুই ঘণ্টাব্যাপী বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারপিট করে এবং বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে। একপর্যায়ে, ওই নারীর অশ্লীল ভিডিও দিয়ে ব্লাকমেইল ও মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে ইউপি সদস্যের ছেলে ও তার সহযোগীরা। কিছু অর্থ ও মোবাইল দিয়ে দিলে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ওই নারী শুক্রবার রাতে (৩ জানুয়ারি) ওই বাড়ী থেকে বের হয়ে থানায় চলে আসে।

বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে শনিবার (৪ জানুযারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ যুবককে আটক করে পুলিশ। এ সময় মেম্বারের ছেলের মোবাইলে ধারণকৃত নগ্ন ভিডিওর ফুটেজ জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হলেন, ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী গ্রামের আকরাম (২৫), জুয়েল মোল্লা (২৫), সাইদুল মোল্লা (৩০), মামুন শরীফ (৩২), বাবু মোল্লা (৩০) এবং মধুখালী উপজেলার মহিষাপুর গ্রামের জুয়েল মোল্লা (৩০)।

ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, একটি জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। দেড় বছর আগে স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। রয়েছে ৪ বছর বয়সী একটি সন্তান। জুট মিলের কোয়ার্টারেই বসবাস করেন তিনি, আর সন্তান থাকে তার মায়ের (নানী) কাছে। টিকটকের মাধ্যমে আকরাম নামের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার।

তিনি আরও জানান, আকরাম তাকে অর্থের লোভ দেখিয়ে তার সঙ্গে টিকটকের ভিডিও করতে বললে সে রাজি হয়ে যায়। আকরাম তাকে তার গ্রামের বাড়ি চুমুরদিতে নিয়ে গিয়ে একটি বাসায় রাখে। এরপর আকরাম তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে আকরামের আরেক সহযোগী জুয়েলও তাকে ধর্ষণ করে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে।

ওই নারী বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয় কয়েক যুবক জানতে পেরে তারা এসে আমার ওপর চড়াও হয়। এরপর জোরপূর্বক আমাকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবি করে। আমার কাছে থাকা অর্থ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় থানায় এসে অভিযোগ দিলে পুলিশ ৬ জনকে আটক করে। আমার মতো অসহায় নারীর সঙ্গ যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের শাস্তি চাই।’

ভুক্তভোগী ওই নারীর মা বলেন, ‘এবিষয়ে আমরা কিছুই জানি না, আমরা থাকি গ্রামের বাড়ি আর মেয়ে থাকে জুট মিলের কোয়ার্টারে। তিন দিন আগে থেকেই মোবাইলে তাকে পাচ্ছিলাম না। থানা থেকে ফোন দিয়ে আসতে বলা হয়েছে, স্বামী আর নাতিকে নিয়ে এসেছি। এসে জানতে পারলাম একটি ছেলে ওকে অর্থের লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে ওর সাথে এই আচরণ করেছে। এঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

আরেক ভুক্তভোগী সুজন মোল্লা বলেন, ‘আমার ফেসবুক পেজে সমস্যা হওয়ায় একজন আকরামের ঠিকানা দিয়ে বলে ওর কাছে গেলে সমাধান পাওয়া যাবে। আমি চুমুরদি আকরামের কাছে যাই। রাত হয়ে যাওয়ায় সেখানে একটি ঘরে আমাকে থাকতে দেওয়া হয়। এরপর রাতে কয়েক যুবক এসে আমাকে ডেকে ওঠায়। এরপর আমাকে মারতে শুরু করে। আমাকে উলঙ্গ করে ভিডিও করে অর্থ দাবি করে। আমার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাতেই আমার ভাইকে ফোন দিয়ে তারা বলে আরও বিশ হাজার টাকা দিতে হবে। পরে ভাই গিয়ে অল্প কিছু টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে আনে। মোবাইল তারা রেখে দিয়ে বলে, বিশ হাজার টাকা দিয়ে মোবাইল নিয়ে যাস।’

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে এবং অশ্লীল ভিডিও ধারনের অভিযোগে ৪ যুবককে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে আকরাম ও জুয়েলের নামে পৃথক ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া অন্য আরেক ভুক্তভোগী সুজন মোল্লা বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেছেন। রোববার সকালে ওই নারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে এবং আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৫ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৪:৫৩

▎সর্বশেষ

ad