ব্রেকিং নিউজ
চিলমারীতে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ : অব্যহতি দুই বিক্ষোভকারীকে কুড়িগ্রামে সেনাবাহিনী’র মাদক বিরোধী অভিযানে ফেনসিডিল, ইয়াবা ও গাঁজাসহ আটক ১ ঢাবি’র জহুরুল হক হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন পুনর্গঠন : সদস্য সচিব নিয়ে বিতর্ক রাস্তায় অভিনেতা সিদ্দিককে মারধরের ভিডিও ভাইরাল ইন্টারপোলের মাধ্যমে হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারির সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবি দর্শন বিভাগের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ঢাবি দর্শন বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ১৪তম পুনর্মিলনী ও কমিটি গঠিত হয়েছে সাইদ সোহরাব ও শেখ মো. নাসিম এর নেতৃত্বে ঢাবি মুহসীন হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গঠন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ডিসপ্লে-তে ভেসে উঠেলো ‘ছাত্রলীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, যুবদল নেতার মৃত্যু

বরগুনায় যুবদল নেতা হত্যা, অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা

Ayesha Siddika | আপডেট: ০৩ জানুয়ারী ২০২৫ - ০২:৩৬:০৪ পিএম

ডেস্ক নিউজ : বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক চলছেই। জেলা যুবদল নেতারা বলছেন অভিযুক্তরা আগে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলো, যারা এখন শিবিরে যোগ দিয়েছে। এ বক্তব্যের প্রতিবাদে জেলা জামায়াতে ইসলামী সংবাদ সম্মেলন করেছে। তাদের অভিমত, ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে যুবদল মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করেছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন পাথরঘাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের ইউনিট সভাপতি ঈসা রুহুল্লাহ (৩৮), পৌর ছাত্রশিবির সভাপতি কাইউম (২৪), আব্দুস সালাম মুন্সী (৫৫), হাসান (২৫), ইব্রাহিম (১৯), আবু সাঈদ (২৩), রাব্বি (১৯) ও তার বাবা মাহবুব (৫২)। পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মেহেদী হাসান মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এদিকে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামি বরগুনা জেলা শাখার নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, যুবদল নেতা নাসির হত্যার ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরগুনা জেলা শাখার আমীর অধ্যাপক মাওলানা মুহিবুল্লাহ হারুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, পাথরঘাটা উপজেলায় গত ১ জানুয়ারী যুবদলের কর্মী মোঃ নাসির হত্যাকাণ্ডের যে ঘটনা ঘটেছে তা দুটি পক্ষের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে হয়েছে। যার বাস্তব সাক্ষী এলাকাবাসী এবং পাথরঘাটার স্থানীয় সংবাদকর্মীগণ। তবে পাথরঘাটার একটি রাজনৈতিক দলের কিছু কর্মী ও নেতৃবৃন্দ সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করতে চাচ্ছে। এ কারণে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী বলে চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চেষ্টা চালানো হয়েছে।

অপরদিকে প্রথমে অনেকেই অভিযুক্তদের ছাত্রলীগের সদস্য বলায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা তার ফেইসবুক পোস্টে একটি প্রতিবাদ লিপি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন যুবদল কর্মী নাসিরকে পায়ের রগ কেটে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় অভিযুক্ত হত্যাকারী হাসান ও রাব্বি ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত থাকার মিথ্যা বিভ্রান্তিমূলক তথ্যা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা পরিস্কার করে বলছি হত্যাকারী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের কোন ইউনিটের সদস্য বা কোন রকম সম্পৃক্ত নয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বরগুনার জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের যুবদলের সাবেক নেতা নাসির হাওলাদারকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত শিবিরের কর্মীরা। রাব্বি এবং হাসান স্থানীয় একটি দোকানে বসে সিগারেট খাচ্ছিলেন। এ সময় নাসির তাদেরকে পাশে গিয়ে সিগারেট খেতে বলেন। এ কথাকে কেন্দ্র করেই নাসির যখন গতকালকে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল তখন রাব্বি এবং হাসান সহ আরো কয়েকজন মিলে তাকে কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আমরা শুনেছি শিবির রগ কাটা সংগঠন একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন। আমরা গতকালকে বরগুনার মানুষ দেখেছি ছাত্রশিবিরের কর্মী কি করতে পারে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

এ ঘটনায় নিহতের বোন রুমী আক্তারের দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়, নিহত নাসির হওলাদার পরিবারের অমতে গত ৪-৫ মাস আগে পাথরঘাটার ছোনবুনিয়া নামক এলাকায় ২য় একটি বিবাহ করে তার শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন। গত ১ জানুয়ারি  পাথরঘাটা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খাদ্য গুদাম সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে বসে অভিযুক্ত হাসান গাজী সিগারেট খাওয়ার সময় নাসির হাওলাদারের মুখে সিগারেটের ধোয়া দেয়। এ ছাড়াও গত ৫ তারিখের বিএনপি নেতা বলে উস্কানি দেয়। একপর্যায়ে নিহত নাসিরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা করে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নাসির হাওলাদারকে তার শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে অভিযুক্ত আসামিরা পথিমধ্যে আটকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা নাসিরকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাসিরকে মৃত ঘোষনা করেন। 

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, নাসির নামে যুবদল কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মূলত হাসান এবং রাব্বি নামে দুই যুবক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েই পালিয়ে যায়। অভিযুক্তরা আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। তবে বিভিন্ন সময়ে স্থান পরিবর্তন করায় তাদেরকে এখনো আমরা গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে আশা করি খুব দ্রুতই তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব। অভিযুক্তরা কোন সংগঠনের জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত রেষারেষির কারণেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত হাসান এবং রাব্বির বয়স খুবই কম এরা মূলত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে চলাফেরা করতো। এ কারণেই কেউ কেউ তাদেরকে ছাত্রলীগ আবার কেউ তাদেরকে শিবির বলে দাবি করছেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ব্যক্তিগত রেষারেষিতেই ঘটেছে বলে জানান তিনি।  

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারী বুধবার ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন শেষে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে যুবদল নেতা নাসিরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এদিকে যুবদল নেতা নাসির হত্যাকান্ডের ঘটনার পরপরই পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ শাখা শিবিরের সভাপতি হাফেজ মোঃ রাকিব হাসানের ওপর হামলাও করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় বরিশালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় যুবদলের সম্পৃক্ততা আছে বলে দাবি করেছেন আহত রাকিব হাসান। 

 

 

কিউটিভি/আয়শা/০৩ জানুয়ারী ২০২৫,/দুপুর ২:৩৩

▎সর্বশেষ

ad