ডেস্ক নিউজ : তিনি বলেন, ‘সকালের কাজে আল্লাহ বরকত রেখেছেন।’ ইসলামের এই নির্দেশনা অনুযায়ী সকালবেলা কাজ করার অভ্যাস মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আজকের শহুরে জীবনযাত্রায় সকালের ঘুম যেন একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। কর্মব্যস্ততা ও রাতজাগার সংস্কৃতির কারণে শহরের মানুষদের অনেকেই দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। সকালবেলার বরকত থেকে বঞ্চিত হন। তবে গ্রামবাংলার সংস্কৃতিতে এখনো সকালের গুরুত্ব অটুট রয়েছে। সেখানে মানুষ ভোর বেলায় উঠে কাজ শুরু করে, যা শরীর ও মনের প্রশান্তি এনে দেয় এবং আল্লাহর দেওয়া বরকতও লাভ করে।
সকালের কাজে শারীরিক উন্নতি হয় বলেও চিকিৎসকরা বলেছেন। ঠিক তেমনই সকালের ঘুমে মানুষের সমস্যা দেখা দেয় সেটাও বলা আছে চিকিৎসা শাস্ত্রে। চিকিৎসকরা বলেন,
সকালের ঘুম মানুষের শারীরিক ও মানসিক নানা সংকট তৈরি করে, এমনকি মানুষের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে সকালের ঘুমের কারণে প্রতিদিন যে পরিমাণ কর্মঘণ্টা নষ্ট তা জাতীয় উন্নয়নে বিরূপ প্রভাব ফেলে। ইসলাম মানুষকে সকাল সকাল ওঠার নির্দেশ দেয়।
মুসলিমদের সংস্কৃতি হলো তারা ফজরের নামাজের মাধ্যমে দিন শুরু করে এবং সকাল সকাল কর্মস্থলে যোগদান করে। সকালবেলার গুরুত্ব বোঝাতে মহান আল্লাহ সকালের শপথ করে বলেছেন, ‘উষাকালের শপথ! যখন তা আবির্ভূত হয়।’ (সুরা : তাকভির ১৮) রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকালকে এই উম্মতের জন্য বরকতময় করার দোয়া করেছেন। সুতরাং সকালে কাজ শুরু করলে বরকত পাওয়া যাবে। তিনি বলেছেন,
হে আল্লাহ! আমার উন্মাতের ভোরবেলাতে তাদেরকে বরকত ও প্রাচুর্য দান করুন। (সুনানে তিরমিজি ১২১২)
যখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথাও কোনো ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতেন, তখন তাদেরকে দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। বর্ণনাকারী সাখর (রা.) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি কোথাও তার ব্যবসায়ী কাফেলা পাঠানোর ইচ্ছা করলে তাদেরকে দিনের প্রথম অংশেই পাঠাতেন। ফলে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১২১২)
সকালবেলা জীবিকা বণ্টনের সময় বলেও হাদিসে আছে। সুতরাং যে ঘুমিয়ে বা অন্যভাবে সকালের যতটুকু সময় নষ্ট করবে, সে ততটা জীবিকা থেকে বঞ্চিত হবে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তার এক ছেলেকে সকালে ঘুমাতে দেখে বলেন, উঠো! তুমি কি এমন সময় ঘুমাবে যখন জীবিকাগুলো বণ্টিত হয়। (আল-আদাবুশ শরইয়্যা, পৃষ্ঠা ১৪৭)
সকালের ঘুমের ব্যাপারে সতর্ক করে ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, তোমরা সকালের ঘুম থেকে বেঁচে থাকবে। কেননা তা জ্বরের প্রকোপ বাড়ায়, যৌন ক্ষমতা কমায় এবং শরীরের সজীবতা নষ্ট করে। (আন-নিহায়াতু ফি গারিবিল আহাদিস)
কিউটিভি/আয়শা/০৬ অক্টোবর ২০২৪,/বিকাল ৪:৩০